কলকাতা: ১৯ বছর পর ডুরান্ড (Durand) কাপের ফাইনালে মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) এবং মোহনবাগান (Mohun Bagan)। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এফসি গোয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। মঙ্গলবার নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে হারিয়ে আগেই ফাইনালে উঠেছিল ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগান জিতেছে, ফাইনালে ১২ অগাস্টের বদলা নেওয়ার সুযোগ, এই সবকিছু ঠিক আছে, কিন্তু মোহনবাগান কি ভালো খেলেছে? না, একেবারেই ভালো খেলেনি। ইস্টবেঙ্গল যেমন কিছুটা ভাগ্যের জোরে ফাইনালে উঠেছে, হুয়ান ফেরান্দোর দলও তাই। মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে যে খেলাটা হুগো বুমোরা খেলেছিলেন তার ৩০ শতাংশও খেলতে পারলেন না গোয়ার বিরুদ্ধে।
বুমো নিজেই এদিন খলনায়ক হয়ে যেতে পারতেন। ২৪ মিনিটে তাঁর ভয়ঙ্কর মিস পাসে ১-০ করে দেন গোয়ার আমেরিকান ফরোয়ার্ড নোয়া। তার আগে পর্যন্ত প্রাধান্য ছিল কলকাতার ক্লাবেরই। বুমোর ভুলে গোল খেয়ে ঘেঁটে যায় সবকিছু। অনিরুদ্ধ থাপা গোলের আগে পর্যন্ত মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন, ২৫ মিনিটে খারাপ ট্যাকল করে হলুদ কার্ড দেখলেন। লাল কার্ডের ভয়ে স্বাভাবিক খেলাটাই আর খেলতে পারলেন না তার পর থেকে। ফলে মাঝমাঠের দখল নিল গোয়া।
মোহনবাগান গোল শোধ করল ৪১ মিনিটে। পেনাল্টি থেকে বল জালে জড়ান জেসন কামিংস যে পেনাল্টি নিয়ে বিতর্ক আছে। আশিক কুরুনিয়ানকে ফাউল করেন গোয়ার ডিফেন্ডার জয় গুপ্তা। সেই ফাউল বক্সের বাইরে না ভিতরে তা স্পষ্ট নয়। রিপ্লেতে একটা অ্যাঙ্গেলে দেখে মনে হল বাইরে, আর একটায় ভিতরে। সম্ভবত অন দ্য লাইন, আর সেক্ষেত্রে রেফারির সিদ্ধান্তে ভুল কিছু নেই।
আরও পড়ুন: Indian Football Team | দুর্দান্ত সাফল্য ভারতীয় দলের, তবুও কেন খুশি নন সুনীলদের কোচ?
৬১ মিনিটে আর্মান্দো সাদিকুর গোলটা যে বিশ্বমানের তাতে কোনও বিতর্ক নেই। বক্সের বাইরে বল চেস্ট ট্র্যাপ করলেন, হাফ টার্নে ২০ গজ দূর থেকে ডান পায়ের ইনস্টেপে শট নিলেন। বল জালে আছড়ে পড়তেই যুবভারতীতে শব্দব্রহ্মের সৃষ্টি হল। আট-দশ হাজার সবুজ-মেরুন সমর্থকের জয়ধ্বনিতে তখন কান পাতা দায়। এই জয়ধ্বনিই শেষের দিকে চাপা আতঙ্কের দীর্ঘশ্বাসে পরিণত হল। তখন মুহুর্মুহু আক্রমণ করছে গোয়া, একের পর এক ক্রস, কর্নার আছড়ে পড়ছে সবুজ-মেরুন বক্সে। ৯১ মিনিটে বিশাল কেইথ অবিশ্বাস্য সেভ না করলে খেলার ফলাফল অন্যরকম হতেই পারত। যাইহোক সেসব কিছু হয়নি। সব নজর এবার ৩ সেপ্টেম্বর রবিবারের দিকে, একটা ফুটবল ম্যাচকে কেন্দ্র করে ফের দ্বিধাবিভক্ত হবে বাঙালি।