দত্তপুকুর: বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে দত্তপুকুর (Duttapukur)। রবিবারের বিস্ফোরণের পরই হদিশ মিলেছে একের পর এক বেআইনি বাজি কারখানার। প্রকাশ্যে এসেছে রাসায়নিক মজুত রাখার গুদামের। বিস্ফোরণ হয়েছিল শামসুল আলির বাড়িতে। মঙ্গলবার সেই শামসুল আলির বাড়ির পিছন দিকের একটি ঘর থেকে উদ্ধার হল বস্তা বস্তা নিষিদ্ধ শব্দবাজি মসলা ও সরঞ্জাম। বিস্ফোরণ পরেও ভেতরে মজুত ছিল ৬ বস্তার মতো বাজির মসলা। দমকল ও পুলিশ সেগুলি উদ্ধার করে। এখনও বিভিন্ন গোডাউনে মজুত করা রয়েছে প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি। উদ্ধার হওয়া বাজি দমকলের কর্মীরা নিষ্ক্রিয় করেন। এদিন আসানসোলের বার্নপুর থেকে বিপুল পরিমাণ বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। সেই বাজি মজুতের প্রশাসনিক অনুমতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিন এবার বিস্ফোরণস্থল থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে আরও এক গুদামের খোঁজ মিলল। একটি একতলা বাড়ির ভিতরে সারি দিয়ে রাখা প্লাস্টিকের বস্তা। তার মধ্যে মজুত করা হয়েছে রাসায়নিক এবং প্রচুর বাজি। পুলিশ খবর পেয়ে সেই সমস্ত বাজি উদ্ধার করে সরিয়ে নিয়ে যায়। যেখানে বিপজ্জনক রাসায়নিক মজুত করতেন বিস্ফোরণে নিহত কেরামত আলি। স্থানীয়রা বাধা দিলেও তাতে তাতে কর্ণপাতও করতেন না তিনি। এমনকী, পুলিশ-প্রশাসনও বিশেষ কোনও ব্যবস্থা নিতেন না বলেই অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাজ্যে কী করে প্রশাসনের নাকের ডগায় রমরমিয়ে চলতে বেআইনি বাজির ব্যাবসা। তা নিয়ে মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য প্রশাসনকে।
আরও পড়ুন: বর্ধমানের ডাঙাপাড়া থেকে উদ্ধার ৮০০ কেজি বোমা
রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে একটি বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তাতে মৃত্যু হয় অন্তত ন’জনের। আহত হন আরও অনেকে। আশপাশের অন্তত ১০০টি বাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অভিযোগ, কেরামত আলি এবং সামসুল দু’জনে মিলে বেআইনিভাবে বাজি তৈরি করত। সোমবার কেরামত আলি সহযোগীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই কেরামত আলিরই ভাড়া নেওয়া আরও এক বাজি এবং রাসায়নিক ঠাসা গোডাউনের হদিশ মিলল মোছপোল গ্রামে।
দত্তপুকুরের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ (Duttapukur Blast) নিয়ে প্রশাসনের ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্যে একের পর এক বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ নিয়ে তোপ দাগেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে। মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, দত্তপুকুর থানার আইসি কি ঘুমোচ্ছিলেন? মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরই দত্তপুকুর থানার আইসি এবং নীলগঞ্জ আউট পোস্টের ওসিকে কর্তব্যে গাফিলতির জন্য সাসপেন্ড করা হয়।