কলকাতা: টাকা দিয়ে চাকরি কেনার অভিযোগে আদালতে নির্দেশে গ্রেফতার (Arrest) হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) চার শিক্ষক (Teacher)। ১২ দিন জেল হেফাজত শেষে শনিবার শর্ত সাপেক্ষে জামিন পেলেন নবগ্রামের (Nabagram) সেই চার শিক্ষক। আদালতের নির্দেশ, তদন্তে ওই শিক্ষকদের সহযোগিতা করতে হবে। এদিন আলিপুরের সিবিআই আদালত তাঁদের জামিনে মুক্তির কথা ঘোষণা করে।
গত ৭ অগাস্ট আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারকের নির্দেশে ওই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায় সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিল, টাকা দিয়ে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কী ব্যবস্থা নিয়েছে। আদালতের বক্তব্য ছিল, টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়া এবং টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়া, দুটিই সমান অপরাধ। আদালতের প্রশ্নের জবাবে সিবিআই জানিয়েছিল, তাদের চার্জশিটে সাক্ষী হিসেবে ওই চার শিক্ষকের নাম রয়েছে। তা নিয়ে আদালতের তোপের মুখেও পড়তে হয় সিবিআইকে। বিচারক চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলের কেন তাঁদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির হওয়ার পর ওই শিক্ষকদের বিচারকের নির্দেশেই গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা সকলেই মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের বাসিন্দা। চাকরিও করেন নবগ্রামের বিভিন্ন স্কুলে। ওই শিক্ষকরা হলেন, সায়গল হোসেন, সিমার হোসেন, জাহিরুদ্দিন শেখ এবং সৌগত মণ্ডল।
আরও পড়ুন:পরিকল্পিত অপরাধ, ধৃতরা তদন্তের অভিমুখ ঘোরাতে চাইছে, দাবি আদালতে
সিবিআই সুত্রে খবর, তাদের চার্জশিটে ওই চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করা হয়। চার্জশিটে বলা হয়েছিল, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত শিক্ষা ব্যবসায়ী তাপস মণ্ডলকে চাকরি পাওয়ার জন্য এই চার জনই লাখ লাখ টাকা দেন। সিবিআইয়ের আরও দাবি, তাপস চাকরি বিক্রির এজেন্ট এবং চাকরি প্রার্থী মিলিয়ে মোট ৪১ জনের কাছ থেকে ৪ কোটি টাকারও বেশি আদায় করেছিলেন। সিবিআইয়ের মতে, এরা সকলেই অযোগ্য শিক্ষক। নিয়োগ দুর্নীতির মূল মামলাতেই অভিযোগ ছিল, যোগ্যদের বঞ্চিত করে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। সেই যোগ্য প্রার্থীরা বিভিন্ন সংগঠনের ছাতার তলায় থেকে মাসের পর মাস ধরে নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করে চলেছেন। আদালত এই অযোগ্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে একাধিকবার ব্যবস্থা নেওয়া নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। শেষ পর্যন্ত আদালতের চাপে পড়েই ওই চার শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়।