কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে যখন গোটা রাজ্য তোলপাড়, তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও (University of Calcutta) ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন ছাত্র তাঁর ব়্যাগিংয়ের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই প্রাক্তনী শনিবার আলিপুর আদালতে গোপন জবানবন্দিও দিয়েছেন। তিনি বীরভূমের জয়দেব এলাকায় থাকেন। ২ সপ্তাহ আগে কলকাতা বিশ্বিদ্যালয় থেকে পাশ করে বেরিয়েছেন। ওই আতঙ্ক এখনও তাঁকে মাঝে মধ্যে তাড়া করে বেড়ায়।
ওই ছাত্রের অভিযোগ, ২০১৯ সাল থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ব়্যাগিংয়ের শিকার হন। থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এমন কী তিনি খোদ উপাচার্য এবং হস্টেল সুপারকে ঘটনার কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। তাতেও লাভ হয়নি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার পর পুলিশ নড়েচড়ে বসতেই ওই ছাত্রের বিষয়টি সামনে আসে।
আরও পড়ুন: যৌন মিলনে বাধা, তরুণীকে স্ক্রু ড্রাইভারের আঘাত, গ্রেফতার যুবক
ওই ছাত্র জানান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলেও যাদবপুরের মতো প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের উপর সিনিয়ররা ব়্যাগিয়ের নামে অত্যাচার চালায়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বেশ কয়েকজন হস্টেলের কিছু আবাসিক ও বহিরাগত মিলে তাঁর উপর দিনের পর দিন অত্যাচার চালিয়েছে। তিনি বলেন, আমার উপর মানসিক থেকে শারীরিক অত্যাচার হয়েছে। এমনকী যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে। ছাতেরটি জানান, ইন্ট্রোর নামে সিনিয়ররা তাঁকে দিয়ে মদ আনাতেন, মদের গ্লাস ধোয়াতেন এবং তাঁকে মদ খাওয়ার জন্যও চাপ দেওয়া হত। প্রতিবাদ করলেই মারধর করত সিনিয়ররা। রাতে তাঁর দরজায় তালা দিয়ে দেওয়া হত। সিনিয়ররা এসে ঘরে প্রস্রাব করে দিত। তারপরও থামেনি অত্যাচার। ওই প্রাক্তনীর অভিযোগ, হস্টেলে তাঁর ঘরে বোমা পর্যন্ত ছোড়া হয়েছিল। তাঁর মেসের খাবারও বন্ধ করে দেওয়া হলে তিন মাস নিজেকে রান্না করে খেতে হয়।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ওই ছাত্রের দাবি,বিশ্ববিদ্যালের কর্তৃপক্ষ মিথ্যে কথা বলছে। আমি নিজে উপাচার্যকে লিখিত ভাবে সব জানিয়েছি। তিনি বলেন, পুলিশ এত দিন বাদে আমার জবানবন্দি নেবে বলে জানিয়েছে। আমি আদালতকে সব জানিয়েছি। আশা করি, সঠিক তদন্ত হবে এবং দোষীরা শাস্তি পাবে।