বাসন্তী: পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election 2023) শেষ হলেও মৃত্যু মিছিল যেন থামতেই চাইছে না। ভোট নিয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে (Political Clash ) দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে (Basanti) ফের একজনের মৃত্যু হল। নিহতের নাম আজাহার লস্কর(৬২)। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর জ্যোতিষপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধারানীপুরের বাসিন্দা তিনি।
২৪১ নম্বর বুথের সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন শনিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল ও আরএসপির মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সেই সংঘর্ষে গুরুতর জখম হন উভয়পক্ষের অন্তত দশজন। আহতদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই আজাহার লস্করকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল ও পরে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার পর বাড়ি ফেরেন। কিন্তু দুদিনের মধ্যেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে স্থানীয় একটি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসার পর অবশেষে শুক্রবার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর।
আরও পড়ন: সাতসকালে পথদুর্ঘটনা ডোমজুড়ে, লরির ধাক্কায় মৃত্যু রেলকর্মীর
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮ জুলাই শনিবার ভোটের দিন ওই ব্যক্তি যখন জ্যোতিষপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধারানিপুর গ্রামে ভোটের সময় বুথের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন আজাহার। তখনই গন্ডগোল বাঁধে। অভিযোগ তাঁকে এলোপাথাড়ি মারধর করেছিলেন আরএসপি কর্মী-সমর্থকরা। এই ঘটনায় মোট পাঁচ জন আহত হন। অভিযোগ ওঠে, সেদিন ব্যালট বাক্স ও পেপার লুঠ করে ফেলা হয়েছিল স্কুলের সামনের একটি পুকুরে। এরপরই গন্ডগোল বাধে। ঘটনায় গুরুতর আহত হন আজাহার লস্কর। তাঁকে প্রথমে তাঁকে ক্যানিং মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতার হাসপাতাল স্থানান্তরিত করেন। সেখানে চিকিৎসা চলছিল। মাঝে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার সকলে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তিনি সক্রিয় তৃণমূল কর্মী ছিলেন বলেই দাবি পরিবারের। এই মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
পঞ্চায়েতে ভোট চলাকালীন বারবার সন্ত্রাস ছড়িয়ে বাসন্তীতে। বোমাবাজি, অবাধে ছাপ্পা, ভোট রিগিং, ভোটলুঠ, রাজনৈতিক সংঘর্ষ, খুনোখুনি কোনও কিছুই বাদ যায়নি। ভোট মিটে গেলেও এখন জেলায় জেলায় বোর্ড গঠনের পক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখনও অব্যাহত হিংসা। পঞ্চায়েতের বোর্ড (Panchayat Board) গঠন ঘিরে জেলায় জেলায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। বুধবারস বৃহস্পতিবারও একাধিক জেলায় শাসকদল এবং বিরোধী দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ইটপাটকেল ছোঁড়া থেকে শুরু করে বোমাবাজি, মারধর এমনকী গোলাগুলি চলারও অভিযোগ উঠেছে। কোথাও আবার সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশও আক্রান্ত হচ্ছে। সব মিলিয়ে বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়েই চলেছে বিভিন্ন জেলায়।