ঝাড়গ্রাম: এতদিন শাসকদলের ছোট বড় নেতারা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে (CV Ananad Bose) বিজেপির (BJP) দালাল বলছিলেন। এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই (Mamata Banerjee) রাজ্যপালকে বিজেপির দালাল বলে নবান্ন-রাজভবন সংঘাতকে তুঙ্গে নিয়ে গেলেন। বুধবার ঝাড়গ্রামে আদিবাসী দিবসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানান রাজ্যপালকে। কোনও কোনও মহল বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর এই আক্রমণের তৃণমূলের ছোট বড় নেতাদের ভাষাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে।
উচ্চশিক্ষার প্রশ্নে বেশকিছুদিন ধরে রাজ্যপালের সঙ্গে সকারের সংঘাত চলছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও পরামর্শ ছাড়াই একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল নিজের পছন্দের লোককে উপাচার্য পদে বসাচ্ছেন। তা নিয়েও রাজ্যের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। একইসঙ্গে রাজ্যে সাম্প্রতিক দুর্নীতি এবং হিংসা নিয়েও রাজ্যপাল বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মঙ্গলবারই রাজ্যপাল রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে বলেন, চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির। কিন্তু আজকের বাংলায় সেটা আর নেই। এই বাংলা সেই বাংলা নয়। বাংলার অবস্থা দেখে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেননি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন দেখবেন, বেশি মাথা হেঁট করবেন না। চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে যাবে।
আরও পড়ুন: না পসন্দের প্রধানকে ঘিরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়াল তৃণমূল
এদিন ঝাড়গ্রামে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের গভর্নর মহাশয় এখন কালো চশমা পরে জ্ঞান দিয়ে বেড়াচ্ছেন। যাঁকে-তাঁকে উপাচার্য পদে বসিয়ে দিচ্ছেন। আমরা নাম পাঠালেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। নিজের ইচ্ছে মতো কেরলের লোক এনে বসিয়ে দিচ্ছেন। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একজনকে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন যিনি কেরলের আইপিএস অফিসার ছিলেন। শিক্ষার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগই নেই। মমতা বলেন, এখানে ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি। সেখানে না আছে ভিসি, না আছে রেজিস্টার। আমরা নাম পাঠালে উনি হয়তো তাঁর পছন্দ মতো বিজেপির লোককে বসিয়ে দেবেন।
আমি মুখ্যসচিবকে বলছি, আজই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি এবং রেজিস্ট্রার করে দেব। আমি ইউনিভার্সিটি করে দিচ্ছি। আর উনি বিজেপির দালালি করে সব কিছু আটকে দিচ্ছেন। এটা আমরা মানব না। যদি সৎসাহস থাকে, তাহলে রাজ্যপাল আচার্য বিলে এখনই সই করুন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যপাল ছাত্র ছাত্রীদের ডেকে বলছেন, দুর্নীতি কাকে বলে, দাঙ্গা কাকে বলে। এটা রাজ্যপালের কাজ? রাজ্যপালের পদটি সাংবাধিনিক। তাঁর কাজ সংবিধানে সীমাবদ্ধ করা আছে। তিনি গায়ের জোরে রাজ্যটাকে কিনে নিতে পারেন না। আপনি দল তৈরি করে নির্বাচনে জিতে আসুন। নতুবা বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়ান। তারপর যদি জিততে পারেন। তবে তা কোনও দিনই হবে না। কারণ, ততদিনে বিজেপি দলটাই উঠে যাবে।