কলকাতা: শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় পাশ হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধনী) বিল। এটি পেশ করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, আগে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের পদ্ধতি পরিবর্তন করুক কেন্ত্রীয় সরকার। তারপর তারা যেন এই নিয়ে রাজ্যকে জ্ঞান দিতে আসে।
বিরোধীরা এই বিলের বিরোধিতা করে বলেন, রাজ্য সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ এবং সেগুলি নিয়ন্ত্রণ করা লক্ষেই এই বিল এনেছে। ভোটাভুটিতে অংশ নেওয়ার পরে স্লোগান দিতে দিতে বিরোধীরা বিধানসভা কক্ষ ছেড়ে চলে যান। পরে এই বিলের প্রতিবাদে বিজেপি বিধায়করা রাজভবন অভিযান করেন। তারা রাজ্যপালকেও এই ব্যাপারে স্মারকলিপি দেন।
আরও পড়ুন: করম পুজোয় ছুটি ঘোষণা, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ কুড়মি সমাজের
রাজ্যের ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ে সার্চ কমিটি গঠন সংক্রান্ত নিয়ম পরিবর্তনের জন্যই বিধানসভায় এই বিল আনা হয়েছে। কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রীর মনোনীত প্রতিনিধি রাখা নিয়ে বিরোধীরা আপত্তি করেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আইআইএমের মতো কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সার্চ কমিটিতে রাষ্ট্রপতির তিন জন প্রতিনিধি থাকলে রাজ্যের সার্চ কমিটিতে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি থাকায় আপত্তি কেন? মন্ত্রীর দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বিধি মেনেই এই সংশোধনী আনা হয়েছে। সার্চ কমিটিতে রাজ্যপাল এবং ইউজিসির প্রতিনিধি থাকবেন, অথচ মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি থাকতে পারবেন না কেন?
এদিনও শিক্ষামন্ত্রী ফের মুখ্যমন্ত্রীকেই আচার্য করার দাবি জানিয়ে বলেন, রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রাখার বিষয়টি ও উপনিবেশিক মানসিকতার প্রতিফলন। তাঁর অভিযোগ, আলিয়া সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তন পুলিশকর্তা কিংবা প্রাক্তন বিচারপতিকে উপাচার্য নিয়োগ করে রাজ্যপাল নিজেই ইউজিসির নিয়ম ভেঙেছেন। কারন, কমিশনের বিধিতেই বলা আছে, উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্তত্য ১০ বছরের অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। বিরোধীরা বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি করেন। বিলটি ১২০-৫১ ভোটে বিধানসভায় পাশ হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, কলকাতা সহ রাজ্যের ৩১ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ে সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে আগেই অর্ডিন্যান্স জারি হয়েছিল। এবার সেই অর্ডিন্যান্সকে আইনি স্বীকৃতি দিতে রাজ্য বিধানসভায় এই বিল আনা হয়। এতে বলা হয়েছে, কোনও উপাচার্যের ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত, তিনিই পরবর্তি উপাচার্য হিসেবে এক বছর কাজ চালাতে পারবেন। বর্তমান আইনে ছয় মাস পর্যন্ত তাঁকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া রয়েছে। বিলে আরও বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি গঠন করতে হবে পাঁচ সদস্যকে নিয়ে। আগে সার্চ কমিটিতে তিন জন সদস্য ছিল। নয়া বিলে আরও বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি উপাচার্য পদে তিন থেকে পাঁচ জনের নাম সুপারিশ করতে পারবে।