ইম্ফল ও নয়াদিল্লি: মণিপুরের মানুষ নারীকে মায়ের চোখে দেখে। বললেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। তিনি পদত্যাগ করছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে শুক্রবার তিনি বলেন, আমার কাজ রাজ্যে শান্তি ফেরানো। সব সমাজেই দুষ্কৃতীরা ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু আমরা তাদের ছাড়ব না। যে অভিযুক্ত তাকে এর আগেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার বাড়ি মহিলারা জ্বালিয়ে দিয়েছেন। মণিপুরের সমাজ নারী নির্যাতনের ঘোরতর বিরোধী। রাজ্যের মানুষ নারীকে মাতৃস্বরূপা মনে করেন। আজ যে প্রতিবাদ জেগে উঠেছে তাতে অভিযুক্তদের শাস্তি দিতে সরকারের সুবিধাই হবে।
এদিকে, দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল মণিপুর পরিদর্শনে যাচ্ছেন। রাজ্যের ডিজিপিকে এক চিঠিতে তিনি লিখেছেন, উপদ্রুত এলাকায় তাঁদের যাওয়ার জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে। তাঁরা নির্যাতিতা দুই মহিলার সঙ্গেও কথা বলবেন। চূড়াচাঁদপুরের লামকায় মহিলা ও নাবালিকাদের একটি ত্রাণ শিবিরেও যেতে চায় দিল্লির মহিলা কমিশন। গত ৩ মাস ধরে ওই শিবিরে রয়েছেন মহিলারা। মালিওয়াল পুলিশের কাছে সব এফআইআরের কপি দেখতে চেয়েছেন। এদিকে, যাঁর বিরুদ্ধে সুশাসন ও রাজধর্ম পালনের ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে মণিপুরের সেই মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং মহিলাদের উপর বর্বরোচিত নির্যাতনের এলাকায় যাবেন বলে শুক্রবার জানান।
আরও পড়ুন: Sukanta Majumder | বাংলায় মণিপুরের ছায়া! অভিযোগ সুকান্তর, তথ্যপ্রমাণ নেই, দাবি ডিজির
মণিপুর দুই মহিলাকে নগ্ন করে হাঁটানোর এবং শারীরিক নির্যাতনে মূল অভিযুক্তর বাড়ি জ্বালিয়ে দিল উত্তেজিত জনতা। কংপোকপি গ্রামে শুক্রবার এই ঘটনা ঘটে। বুধবার একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে নৃশংস এক দৃশ্য। যেখানে গণধর্ষিতা দুই মহিলাকে নগ্ন করে হাঁটাচ্ছে একদল যুবক। সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। এর বিরুদ্ধে টুইটার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা নিতে চলেছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে।
নারী নির্যাতনের এহেন বর্বর ঘটনার সাক্ষী হয়েছে গোটা বিশ্ব। মুখ পুড়েছে দেশের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত মণিপুর নিয়ে তাঁর মৌনী ভেঙেছেন। তখনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং সাফাই দিয়ে বলেন, হিংসাত্মক ঘটনা নিয়ে প্রায় ৬ হাজার এফআইআর হয়েছে। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরই পুলিশ এই কেসটার খোঁজে নেমে পড়ে। মূল অভিযুক্তসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চারজনের মধ্যে একজন হল ৩২ বছরের হুইরেম হিরোদাস মেইতি। অন্যদের পরিচয় জানাতে অস্বীকার করেছে পুলিশ।
অভিযোগ, ওই দুই মহিলাকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে দুষ্কৃতীরা। যদিও সেকথা অস্বীকার করেছে পুলিশ। ওই পুলিশ কর্তার সাফাই সেদিন উত্তেজিত জনতা থানা আক্রমণ করে। তারা অস্ত্র লুটের চেষ্টা করছিল। পুলিশ থানা বাঁচাতে ব্যস্ত ছিল। নির্যাতিতা দুই মহিলার মধ্যে একজনের অভিযোগ, আমাদের গ্রাম আক্রমণ করার সময় পুলিশ সেখানে ছিল। পুলিশই আমাদের বাড়ির কাছ থেকে নিয়ে আসে কিছুদূর গিয়ে আমাদের রাস্তায় ছেড়ে দেয়। ওদের হাতে পুলিশই আমাদের তুলে দিয়েছে বলে অভিযোগ এক মহিলার।