কলকাতা: শুক্রবার ধর্তলায় তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও বক্তা তালিকায় রয়েছেন আরও ১৫জন। দলীয় সূত্রের খবর, অনেক চিন্তাভাবনা করে এই বক্তা তালিকা তৈরি করৈ হয়েছে। মমতা এবং অভিষেকেরই মস্তিষ্ক কাজ করেছে এই তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে। এই তালিকায় শেষ মুহূর্তে কোনও রদবদল ঘটে কি না, নজর থাকবে সেদিকেও।
বক্তাদের মধ্যে সব শ্রেণির এবং সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়েছে। সংখ্যালঘু, আদিবাসী, তফসিলি জাতি, উপজাতি, হিন্দু ছাড়াও পাহাড়ের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। সেই ভোটকে মাথায় রেখেই এবার কৌশলী বক্তা তালিকা প্রস্তুত করেছে তৃণমূল। ভোটের আগে নেত্রী এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক কী বার্তা দেবেন, তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে দলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকরা। মনে করা হচ্ছে, বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁরা সর্বাত্মক আক্রমণ শানাবেন। সদ্য বেঙ্গালুরুতে গঠিত হয়েছে বিরোধীদের নয়া মহাজোট ইন্ডিয়া। তার মধ্যেই বুধবার প্রকাশ্যে এসেছে দুমাস আগে মণিপুরে ঘটে যাওয়া এক নৃশংস ঘটনার ভিডিও। গত প্রায় ৮০ দিন ধরে জ্বলছে মণিপুর। স্বাভাবিকভাবেই ভাষণে আসবে মণিপুর প্রসঙ্গ। এবার বড় ইস্যু রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা। একশো দিনের কাজ সহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা কেন্দ্রের কাছ থেকে ছিনিয়ে আনার ডাক অভিষেক আগেই দিয়েছেন। বাংলা থেকে দশ লাখ লোক নিয়ে দিল্লিতে ধরনা দেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন। আজকের মঞ্চ থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে, কবে সেই কর্মসূচি হবে।
আরও পড়ুন: 21 July | শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তর্পণ খড়দহের যুব তৃণমূল সভাপতির
আজ বক্তা তালিকায় রয়েছে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বরাবরই ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে ভাষণ দেন। নাম রয়েছে জঙ্গলমহলের আদিবাসী নেত্রী এবং মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার। গত লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের ফল খারাপ হয়েছে। তুলনায় এবারের পঞ্চায়েত ভোটে উত্তরবঙ্গে শাসকদলের ফল ভালো হয়েছে। বক্তা তালিকায় রয়েছেন উত্তরবঙ্গের জগদীশ চন্দ্র বসুনিয়া এবং প্রকাশ চিক বরাইক। তাঁরা দুজনেই রাজবংশী সম্প্রদায়ের। প্রকাশকে এবার রাজ্যসভার সদস্য করেছে তৃণমূল। চা বাগানের শ্রমিক পরিবার থেকে উঠে আসা প্রকাশকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাহাড়ের অনিত থাপাকে বক্তা তালিকায় রাখা হয়েছে। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ছাড়াও তালিকায় আছে মোশারফ হোসেনের নাম। বনগাঁর বিধায়ক বিশ্বজিত দাস মতুয়া সম্প্রদায়ের পরিচিত মুখ। তিনিও স্থান পেয়েছেন। যদিও খাতায় কলমে তিনি এখনও বিজেপির বিধায়ক। আবার কার্যক্ষেত্রে বিশ্বজিত তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। বক্তা থাকছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রতিমা মণ্ডল। তিনিও তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত।
রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী এবং পোড় খাওয়া নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে বক্তা তালিকায় রেখে তাঁকে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। রাজ্য তৃণমূল যুব সভাপতি সায়নী ঘোষ অবশ্যই আছেন বক্তা হিসেবে। কারণ এই সভার আয়োজক রাজ্য যুব কংগ্রেস। তাছাড়া নিয়োগ দু্র্নীতিতে তাঁকে ডাকাডাকি শুরু হয়েছে। তিনি কী বলেন, তার দিকেও নজর থাকবে। রাজন্যা হালদার নামে এক ছাত্র নেত্রীকে দ্রুত সামনের দিকে তুলে আনা হচ্ছে। তিনিও আছেন বক্তার তালিকায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের সংগঠন নিয়ে তৃণমূল একটু সমস্যায় রয়েছে। তাই কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহাকে বক্তা তালিকায় রেখে জেলার নেতাদের বার্তা দিতে চাইছেন শীর্ষ নেতৃত্ব।