কলকাতা: বেঙ্গালুরুতে আগামিকাল, সোমবার সোনিয়া গান্ধীর ডাকা বিরোধী জোটের নৈশভোজে উপস্থিত থাকতে পারবেন না তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ১৮ জুলাই কংগ্রেসের ডাকে দ্বিতীয় মহামন্ত্রণা সভায় পুরোদস্তুর মধ্যমণি হয়ে থাকবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। অন্তত ২৪টি বিজেপি বিরোধী দল এই সভায় হাজির থাকবে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গে হেলিকপ্টারে চোট পাওয়া মমতার পায়ে অস্ত্রোপচার-পরবর্তী চিকিৎসার জন্য নৈশভোজে তিনি যেতে পারছেন না বলে তৃণমূল সূত্র জানিয়েছে। যদিও তাঁর প্রতিনিধি হয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভা সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েন নৈশভোজে যাবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে পাটনায় বিরোধীদের প্রথম বৈঠকে এমডিএমকে, কেডিএমকে, ভিসিকে, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক, মুসলিম লিগ, কেরালা কংগ্রেস জোসেফ এবং কেরালা কংগ্রেস মণি গোষ্ঠী ছিল না। এবার বেঙ্গালুরু বৈঠকে তারাও থাকবে বলে কথা দিয়েছে। অসুস্থ শরীরেও আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব বেঙ্গালুরুতে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Chandrayaan-3 | বিমান থেকে তোলা চন্দ্রযান ৩-এর উৎক্ষেপণ দৃশ্য ভাইরাল নেট দুনিয়ায়
প্রসঙ্গত, গত বুধবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে মমতা কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেন, দিল্লিতে বিজেপি বিরোধী জোট নিয়ে আলোচনা চলছে। কদিন পর বেঙ্গালুরুতে বৈঠক। তার আগে বাংলার সিপিএম, কংগ্রেস নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে কংগ্রেসকে মনে রাখতে হবে, দিল্লিতে ওরা আমার সঙ্গে দোস্তি করবে। আর এখানে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে বেড়াবে। তা হবে না। মমতা বলেন, এখানে কংগ্রেস আমাদের বিরোধিতা করবে। আর আমি দিল্লিতে ওদের জন্য নৈবেদ্যর ফুল সাজিয়ে রাখব, সেটা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রকারান্তরে নিম্ন আদালতের রায় গুজরাত হাইকোর্ট বহাল রাখায় প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি তথা কেরলের ওয়েনাড়ের প্রাক্তন সাংসদ রাহুলের আসন্ন বাদল অধিবেশনে যোগ দিতে পারাটা সংশয়ে রয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে অসুস্থ শরীরেও সোনিয়ার বিরোধী জোটের হাজির থাকাটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বাদল অধিবেশনে রাহুল গান্ধীর জন্য সংসদের দুই কক্ষেই যাতে বিরোধী দলগুলি কংগ্রেসের সঙ্গে সরকার বিরোধী আক্রমণ শানিয়ে তোলে, সেই প্রস্তাবও রাখতে পারেন দলের নেত্রী। কিন্তু, এই প্রস্তাবে অন্য দলগুলি রাজি হবে কি না, বিশেষত দিল্লি অর্ডিন্যান্স নিয়ে খড়্গহস্ত আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সম্মতি আদায় করা দুরূহ বলে মনে করছেন অনেকে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, সোনিয়া গান্ধীর উপস্থিতি তাহলে এই বৈঠকের গুরুত্ব কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে। কারণ, সোনিয়ার সঙ্গে তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। রাহুল প্রসঙ্গে অনেকে উন্নাসিক থাকলেও সোনিয়া নিয়ে কোনও দলেরই বাছবিচার নেই। কিন্তু, সোনিয়া গান্ধী বিরোধী দলগুলির কাছে কংগ্রেসকেই চালকের আসনে রাখা এবং রাহুল গান্ধীকে জোটের মুখ হিসেবে সরাসরি প্রস্তাব দিতে চলেছেন বলেও মনে করছেন অনেকে।