মুম্বই: অজিত পাওয়ারের সদলবলে মহারাষ্ট্র সরকারে যোগদান একনাথ শিন্ডের শিয়রে শমন হবে না তো? চোখের সামনে শরদ-ভাইপোকে বিজেপি-শিন্ডে সেনা সরকারে ঢুকতে দেখেও কিছু করার অবস্থায় ছিলেন না বাল ঠাকরের শিবসেনা ভাঙিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া একনাথ। ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় হোক, তেতো বটিকা গিলতে হয়েছে তাঁকে। তৃতীয় ভাগীদারের সঙ্গে যে ক্ষমতা ভাগ করে নিতে হয়েছে, তাই নয়। সরকার পরিচালনায় বিজেপির যে শিন্ডে গোষ্ঠীর উপর নির্ভর করে থাকতে হতো, এখন সেই গলার কাঁটাও নরম হয়ে গেল। শিন্ডেদের একচ্ছত্র দবদবা খানিকটা হলেও কমে এল।
৯ জন বিধায়কের মন্ত্রিসভায় যোগ এবং অজিত পাওয়ারের দাবিমতো তাঁর পক্ষে ৩৬ জন এনসিপি বিধায়ক রয়েছেন বলে যদি সত্যি হয়, তাহলে শিন্ডের দিকের ১৪ জনের মন্ত্রী হওয়া আপাতত শিকেয় তোলা রইল। ফলে, শিন্ডে সেনায় ধোঁয়া উসকে ওঠা সময়ের অপেক্ষা। মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভায় মোট ৪৩ জন ঠাঁই পেতে পারেন। যার মধ্যে ২৩টি দফতরই রবিবার পর্যন্ত শূন্য ছিল। জানা ছিল এর মধ্যে আরও ১১টি দফতর শিন্ডে গোষ্ঠীর হাতে যাবে। সমবণ্টন নীতিতে সেই কথাই বলে।
আরও পড়ুন: Sharad Pawar | ভাঙনের খেলার মূল কারিগর মোদি, অভিযোগ পাওয়ারের
এদিকে, এনসিপি তার মধ্যে ৯টিতে থাবা মেরে দিয়েছে। ফলে বাকি ১৪টির ভিতরে শিন্ডের ভাগে যেতে পারে আর মাত্র ৬টি মন্ত্রিপদ। আরও একটি বিষয় হল, বিজেপি এর আগে ক্ষমতায় এসেছিল শিন্ডে সেনার ৪০ জন বিধায়ক এবং ১০ নির্দলের জোরে। কিন্তু, রবিবারের পর বিজেপিকে আর শিন্ডের কৃপাপ্রার্থী হয়ে থাকার প্রয়োজন রইল না। শিন্ডেকে বাদ দিয়েই তারা গদি টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, শিন্ডের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনে বিজেপির আর কোনও দায়বদ্ধতা নেই। সে কারণে ‘অপরিহার্য’ থেকে ‘উচ্ছিষ্ট’ হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে অজিত পাওয়ারের অন্তর্ভুক্তি শিন্ডে ও তাঁর দলবলের পক্ষে অশনি সংকেতও হতে পারে। সরকারে এবং জোটে যে স্বাধীনতা ছিল এবার থেকে তা হারাবেন একনাথ শিন্ডে। শুধু তাই নয়, সরকারে শিন্ডের যে দাপট ছিল তাও কমে আসবে।
এর কারণ হিসেবে অনেকে মনে করছেন, অজিত পাওয়ার একজন দক্ষ প্রশাসক। একাধারে দক্ষ রাজনীতিক। প্রশাসনিক কাজে শিন্ডের তুলনায় তিনি অনেক ধাপ এগিয়ে। শুধু তাই নয়, উদ্ধব ঠাকরের দল ভেঙে বেরিয়ে আসার আগে তাঁর গোষ্ঠীর অভিযোগ ছিল অজিত পাওয়ারের বিরুদ্ধেই। অজিত পাওয়ার তাঁদের গোষ্ঠীর লোকজনের জন্য টাকা বরাদ্দ করছেন না এমনই অভিযোগ ছিল শিন্ডের। এখন তাঁদের সঙ্গে সরকার চালাতে হাত মেলাতেও বাধোবাধো ঠেকবে তাঁর।