কলকাতা: তৃণমূলকে (Trinamool ) ব্যবহার করে বিজেপি জাতীয় স্তরে বিরোধী শিবিরকে ভাগ করতে চাইছে বলে সিপিএম অভিযোগ করল। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Md. Salim) বলেন, তৃণমূল সব সময়ই বিজেপির সম্ভাব্য সঙ্গী। বিজেপি বিপাকে পড়লেই ঝাঁপি থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বার করে আনে। আর দুসপ্তাহ পরেই কংগ্রেস শাসিত হিমাচলপ্রদেশের শিমলায় বসতে চলেছে বিজেপি বিরোধী দ্বিতীয় মহাবৈঠক। সেই বৈঠকেও প্রায় সব বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের যোগ দেওয়ার কথা। তবে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে নামতে গিয়ে তাঁর পায়ে এবং কোমরে চোট লেগেছে। ডাক্তাররা তাঁকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। আপাতত দীর্ঘ সফর করতেও তাঁকে নিষেধ করা হয়েছে। শিমলার বৈঠক দুসপ্তাহ পর হলেও ততদিনে মুখ্যমন্ত্রী স্বাভাবিক চলাফেরা করার মতো সুস্থ হবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
তবে শিমলা বৈঠকের আগেই বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস যেভাবে পারস্পরিক তরজায় নেমেছে, তা লোকসভা ভোটের আগে সার্বিক বিজেপি বিরোধিতায় চোনা ফেলে দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। এমনিতেই দিল্লি অর্ডিন্যান্স নিয়ে কংগ্রেস স্পষ্ট আপত্তি না জানালে তারা শিমলা বৈঠক বয়কট করবে বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে আম আদমি পার্টি। তারই উপর বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে একমাত্র আম আদমি পার্টি অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে সমর্থন করছে।
এদিকে কেরলে পিনারাই বিজয়নের সরকার সেখানকার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে গ্রেফতার করায় সিপিএম এবং কংগ্রেসের মধ্যে তরজা চলছে। খোদ রাহুল গান্ধী এই ঘটনায় সিপিএমের উপর ক্ষুব্ধ। কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী প্রবীণ সিপিএম নেতা বিজয়ন সঙ্ঘ পরিবারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
আরও পড়ুন: BCCI | Chief Selector | বিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাচক পদের দৌড়ে এগিয়ে কে? জেনে নিন
বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেই চলেছে বাম-কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলায় তারা এবং বামেরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে। প্রায় একই কথা শুনিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁদের বক্তব্য, এই দুই দল রাজ্যে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে সংগ্রাম জারি রাখবে। সেলিমের কথায়, পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীরা তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে লড়াই করছে, ভবিষ্যতেও করবে।
আবার তৃণমূল নেত্রী পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে নেমে বলেছেন, দিল্লিতে আমরা মহাজোট করলেও বাংলায় বিজেপি (BJP), সিপিএম (CPM), কংগ্রেসের মহাঘোঁট আমি ভেঙে দেব। বাংলারটা আমি বুঝে নেব।
পিএমের রাজ্য সম্পাদকের আরও অভিযোগ, বাংলার বুকে বামেদের পুনরুত্থান দেখে আতঙ্কিত তৃণমূল এবং বিজেপি মিথ্যে প্রচার চালাচ্ছে মিডিয়ার একাংশের মাধ্যমে। এই দুই দল রাজ্যে বামেদের কোনও স্বাধীন পরিসর দিতে চাইছে না। তাই বিজেপির আইটি সেল তৃণমূল এবং বামেদের জোট হয়েছে বলে ভুয়ো প্রচার চালাচ্ছে। আর তৃণমূল প্রচার করছে রাম-বাম জোট হয়েছে বলে। আসলে বামেদের ঘুরে দাঁড়ানো দেখে তৃণমূল এবং বিজেপি ভয় পেয়েছে। এই আবহে শিমলা বৈঠকের দুসপ্তাহ আগে যেভাবে বিজেপি বিরোধী দলগুলি একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছে, তাতে অশনি সংকেত দেখছে রাজনৈতিক মহল।