রাষ্ট্রসঙ্ঘ ও নয়াদিল্লি: মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী লস্কর-ই-তোইবা নেতা সাজিদ মিরকে ‘বিশ্বসন্ত্রাসী’ ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব এনেছিল ভারত এবং আমেরিকা। কিন্তু, চীনের বাধায় আটকে গিয়েছে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটনের উদ্যোগ। আর তাতেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব প্রকাশ গুপ্তা চীনের এই ভূমিকাকে ছেদো রাজনীতি বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, গোটা বিশ্ব যাকে কুখ্যাত জঙ্গি বলে জানে তাকে যদি আমরা জঙ্গি বলে তকমা দিতে না পারি, তাহলে বুঝতে হবে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের প্রকৃত রাজনৈতিক সদিচ্ছা নেই।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি কমিটিতে পাক জঙ্গি সাজিদকে ‘বিশ্বসন্ত্রাসী’ আখ্যা দিতে বাধা দিয়েছে চীন। ২৬/১১-এর মুম্বই হামলায় অন্যতম প্রধান ‘চক্রী’ ছিল সাজিদ। ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ হিসাবে কালো তালিকাভুক্ত করা হলে সাজিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যেত। সেই সঙ্গে বাইরে যাতায়াতেও নিষেধাজ্ঞা জারি হত। কিন্তু শি জিনপিং সরকারের বাধায় তা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | এই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে কোন কাজ হবে, প্রশ্ন বিরোধীদের
উল্লেখ্য, গত বছরও এই কমিটির বৈঠকে সাজিদের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল চীন। এক সময় লস্কর জঙ্গি সাজিদের মাথার দাম ৫০ লক্ষ ডলার (প্রায় ৪,১০০ কোটি টাকা) ধার্য করেছিল আমেরিকা। ‘দ্য ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএএফটি)-এর ধূসর তালিকা থেকে নিজেদের সরাতে মরিয়া পাকিস্তান ২০২২ সালের জুন মাসে জঙ্গিদের আর্থিক সাহায্যের মামলায় সাজিদকে ১৫ বছরের কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছিল। তবে, মুম্বই হামলায় সাজিদের যোগসাজশের অভিযোগে এখনও পদক্ষেপ করেনি ইসলামাবাদ।
শুধু মুম্বই হামলা নয়, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, ডেনমার্ক এবং ব্রিটেনে একাধিক হামলার পিছনেও সাজিদ জড়িত বলে মার্কিন গোয়েন্দাদের অভিযোগ। আমেরিকায় বিভিন্ন সময় হামলার সঙ্গে জড়িত সাজিদকে ২০১১ সালের ২১ এপ্রিল আমেরিকার ইলিনয়ের এক আদালতে অভিযুক্ত করা হয়। সেই মামলায় বলা হয়েছিল, ২৬/১১-র ঘটনাতেও বিদেশিদের আটকে রাখার নির্দেশ এসেছিল সাজিদের কাছ থেকে। বন্দিদের খুনের নির্দেশও সে দিয়েছিল। দীর্ঘ দিন থেকে সাজিদ এফবিআই-এর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় রয়েছে।