চোপড়া: পঞ্চায়েতে হিংসায় বলি আরও এক। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় (Chopra) মনোনয়ন (CPM Candidate) সন্ত্রাসে গুলিবিদ্ধ সিপিএম কর্মীর মৃত্যু হল। বাম-কংগ্রেসের মনোনয়ন মিছিলে গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর মাথায় গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন ২৩ বছরের মনসুর আলম। অবশেষে বুধবার ছয়দিন দীর্ঘ লড়াই থামল।শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় মনসুর আলমের।
গত ১৫ জুন পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election 2023) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে চোপড়ার (Chopra) কাঁঠালবাড়ি এলাকায় বাম-কংগ্রেসের মিছিলে এলোপাথাড়ি গুলি চলে। গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম হয় মনসুর আলম। তারপর থেকে তাকে উদ্ধার করে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। গত ছ’দিন ধরে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন না তিনি। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন বুধবার ভোরে মৃত্যু হয় ওই বাম কর্মীর। চোপড়ার সীমান্ত দাসপাড়ায় গান্ধাগজের বাড়িতে য় ভেঙে পড়েন পরিজনেরা। মনসুরের বাবা পেশায় সাধারণ চাষি। মাথায় ভেঙে পড়েছে আকাশ। ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছে বাবা-মা।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | Deganga | দেগঙ্গায় আইএসএফ তৃণমূল সংঘর্ষ, বোমাবাজি
শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মনসুর। মঙ্গলবার গভীর রাতে মনসুর আলমের মৃত্যু হয়। এদিন নার্সিংহোমে মনসুরের বাবা মইনুল হক অভিযোগ করেন, পুলিশ এই ঘটনায় নিষ্ক্রিয়। মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়নি। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা এই ঘটনার সঙ্গে আদৌ যুক্ত কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। মূল অপরাধীদের এখনও ধরা না হওয়ায় এই ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছি আমরা।
রাজ্যের পঞ্চায়েতের দিন ঘোষণার পরই উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের জেলায় জেলায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল চোপড়, ক্যানিং, ভাঙড়, মুর্শিদাবাদ। মুড়ি মুড়কির চলেছে বোমা গুলি। প্রাণ হারিয়েছে ৮ জন। রাজ্যের বাতাসে ভাসছে বারুদের গন্ধ। চলছে এরিয়া ডিমনেশনে। এমন কি বাম জমানার থানও সংস্কৃতীয় সেই চিত্র এবারের ভোটে ধরা দিয়েছে। প্রার্থীর বাড়িতে ভয় দেখাতে পাঠানো হয়েছে থান। রাজনৈতিক দলগুলি এক অপরের দিকে দোষারোপ করছে। ভোটে অশান্তি কোনও ভাবেই বরদাস্ত নয়, কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। অভিযোগ জানাতে রাজভবনে খোলা হয়েছে পিস রুমও। বিরোধীদের বারবার অভিযোগ শাসকদল অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চায না। ভোট লুঠের রাজনীতি করছে। ২০১৮ সালের রক্তক্ষয়ী নির্বাচনের ভয়াবহ স্মৃতি যাতে এবারের নির্বাচনে না দেখা যায় তার জেরে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা।
নিরাপত্তা নিয়ে মামলা হয়েছে হাইকোর্টে। কলকাতা হাইকোর্ট সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পঞ্চায়েত ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করাতে হবে। এমনকি রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে বাহিনী চেয়ে আবেদন করতে হবে। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয় রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এরপরই মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের রায়কেই বহাল রাখে। নির্দেশ দেয় রাজ্যের সব জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট করতে হবে। সুপ্রিম নির্দেশের পরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে চিঠি দিয়ে প্রতি জেলার জন্য ১ কোম্পানি বাহিনী চেয়ে আবেদন করে কমিশন।