ইম্ফল: মণিপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়াস জলে। মঙ্গলবার রাতে নতুন করে হিংসায় ফের অন্ততপক্ষে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম হয়েছেন আরও ১০ জন। হিংসা উপদ্রুত খামেনলক এলাকায় গতকাল রাতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক গুলির লড়াই শুরু হয়। বুধবার সকালে পুলিশ জানিয়েছে, অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জঙ্গিরা পূর্ব ইম্ফল জেলার কাংপোকপির ওই গ্রামটি ঘিরে ফেলে এবং নির্বিচারে গুলি চালায়। রাত ১টা নাগাদ অতর্কিতে ওই আক্রমণে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়।
প্রসঙ্গত, অশান্ত মণিপুর সফরে গিয়ে গত ৩১ মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া রাজ্যের হিংসাদীর্ণ দুই জেলায় যান। সেখানে বিভিন্ন গোষ্ঠীর সংগঠনের সঙ্গে শান্তি বৈঠক করেন তিনি। টেঙ্গনোপাল এবং কাঙ্গকোপকি জেলার মোরে শহরে গিয়েছিলেন শাহ। সাম্প্রতিক সংঘর্ষে এই দুই জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। গত দুদিনে শাহ অন্তত কয়েক ডজন বৈঠক করেছেন। অন্যদিকে, এদিনই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং এক বিবৃতিতে সাধারণ মানুষের কাছে শান্তিরক্ষার আবেদন জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: Manipur Violence | গ্রামে ঢুকে নির্বিচারে গুলি, মৃত বেড়ে ১১
মায়ানমারের টামু শহরের ঠিক উল্টোদিকে অবস্থিত পৃথিবীর প্রাচীনতম বাণিজ্যপথের অন্যতম মণিপুরের মোরে শহরে বৈঠক করেন শাহ। এখানে ভারত-মায়ানমারের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে একটি সেতুও আছে। শান্তি আলোচনায় শাহ মেইতি এবং কুকিদের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়াও বহু তামিল, নেপালি, রাজস্থানি, বাঙালি এবং পঞ্জাবি এই এলাকায় বসবাস করেন। তাঁদের প্রতিনিধির সঙ্গেও কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অমিত শাহের চারদিনের মণিপুর সফরেও অশান্তির আগুন কিছুতেই নিভছে না। দফায় দফায় শান্তি আলোচনাতেও সমস্যার বরফ গলেনি। তার জ্বলন্ত প্রমাণ সম্প্রতি ইম্ফলের শহরতলি এলাকায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া এক পরিবারকে অ্যাম্বুল্যান্সসহ জ্বালিয়ে দেওয়া হল। ২ হাজারের বেশি মেইতি গোষ্ঠীর উন্মত্ত জনতা পুলিশের চোখের সামনে অ্যাম্বুল্যান্সটি জ্বালিয়ে দেয়। আগুনে জীবন্ত দগ্ধ হয়ে ৭ বছরের শিশুসহ মা ও এক আত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে। গুলিতে জখম অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।