কলকাতা: রবীন্দ্রজয়ন্তীতেও (Rabindra Jayanthi) রাজনীতি টেনে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee )। মঙ্গলবার আলিপুরে ধনধান্য স্টেডিয়ামে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর আয়োজিত রবীন্দ্রপ্রণাম অনুষ্ঠানে নাম না করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বিধঁলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভোটের কারণে না জেনে অনেক কথা বলা যায়। কিছু না জেনে বলা যায়, রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান শান্তিনিকেতন (Santiniketan)। এমন কী বিদ্যাসাগরের মূর্তিও( Statue of Vidyasagar) ভেঙে ফেলা যায়।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথকে (Rabindranath Tagore) জানতে হলে তাঁর আদর্শকে জানতে হবে। তিনি চিরকাল বিভেদের কথা বলে এসেছেন। আজকে দেশজুড়ে বিভেদের রাজনীতি চলছে। মুখ্যমন্ত্রী যখন আলিপুরের স্টেডিয়ামে নাম না করে অমিত শাহকে বিঁধছেন, তখন বনগাঁর পেট্রাপোলে এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি একই ভাষায় দুই দেশের জাতীয় সংগীত রচনা করেছেন। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে কলকাতায় অমিত শাহের রোড শোয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল। কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মিছিলে তৃণমূল হামলা করে বলে অভিযোগ ওঠে। দুই দলের মধ্যে সংঘর্ষও হয়। বিদ্যাসাগর কলেজেও গোলমাল ছড়ায়। ভাঙা হয় কলেজে অবস্থিত বিদ্যাসাগরের মূর্তি। ওই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মূর্তি ভাঙার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন পুলিশ কমিশনারকে। বিজেপির অভিযোগ, আজ পর্যন্ত সেই তদন্তের রিপোর্ট সূর্যের আলো দেখেনি।
রাজ্য তথ্য সংস্কৃতি দফতরের এই রবীন্দ্রজয়ন্তী গত কয়েক বছর ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল রবীন্দ্রসদন সংলগ্ন ক্যাথিড্রাল রোডে। বাম জমানায় এই অনুষ্ঠান হত রবীন্দ্রসদন চত্ত্বরে সকালবেলায়। ২০১১ সালে পালা বদলের পর থেকে অনুষ্ঠান হয় বিকেলে। এবার অত্যধিক গরমের কারণে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান হল সদ্য উদ্বোধন হওয়া ধনধান্য স্টেডিয়ামে।
এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ যে আদর্শ নিয়ে বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন আমরা যেন সেই আদর্শ থেকে কখনও বিচ্যুত না হই। আমরা যেন কখনও আত্মঅহঙ্কারী না হই। এরপরই তিনি নাম না করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বলেন, ভোটের প্রয়োজনে পাঁচ টাকায় কাউকে কাউকে কিনতে পারা যায়। ভুল করে শান্তিনিকেতনকে রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থান বলা যায়। আবার ভোটের কারণেই না জেনে লিখে নিয়ে এসে টেলিপ্রম্পটারে অনেক বড় বড় কথা বলা যায়।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, হৃদয়ের টানকে মুক্ত রাখতে হবে। যথার্থ অর্থে রবি বন্দনা হোক রবি উপাসনা হোক। এই অনুষ্ঠানে রাজ্য মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য ও বহু বিশিষ্টজন উপস্থিত ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন। তিনি জানান, ১৪ থেকে ২৪ শে মে পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেলে রবীন্দ্রসদন, নন্দন সহ চারটি প্রেক্ষাগৃহে কবিপক্ষ উপলক্ষে অনুষ্ঠান হবে।