বেজিং: চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Xi Jinping, Chinese President) সবার উপর নজর রাখছেন। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন, জিনপিং নজর রাখছেন। আপনি চীনের ভূখণ্ডে (China’s Territory) যেখানেই থাকুন না কেন, চীনা প্রেসিডেন্টের নজর আছে আপনার উপর। শি জিনপিং নিজে নয়, তার নির্দেশে চীনা কর্তৃপক্ষের আধিকারিকরা (Officials of the Chinese Administrations) অনবরত নজর রেখে চলেছে সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরার মাধ্যমে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, চীনে ৭০০ মিলিয়ন অর্থাৎ ৭০ কোটি সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরা (Surveillance Camera) বসানো রয়েছে। চীনের জনসংখ্যা ১৪৫ কোটি। সেই হিসেবে সেদেশের প্রতি ২ জন নাগরিক প্রতি প্রায় একটা সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরা ইনস্টল (Install) করা রয়েছে এবং তা সক্রিয়ভাবে নজরদারি (Actively Monitoring) চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: Arc | ইনোভেটিভ ওয়েব ব্রাউজার ‘আর্ক’, ক্রোম ব্রাউজারের বিকল্প চাইলে ভেবে দেখতে পারেন
২০২৩ সালের মার্চ ৩০ মার্চের সর্বশেষ বেসরকারি সংস্থার ডেটা অনুযায়ী, চীনে ১৪৫ কোটি লোকজনের বাস (সঠিক সংখ্যা – ১৪৫,৪৫,০৭,৭৩৭)। চীনা নাগরিক (Chinese Citizens) হোক কিংবা বিদেশি ব্যক্তি (Foreign Individuals), যেই হোক না কেন, চীনের যে প্রান্তেই তিনি থাকুন না কেন, সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরা চোখের নিমেষে চিহ্নিত করে ফেলতে পারে। ফেসিয়াল রিকগনিশন বা গেট রিকগনিশন (Facial Recognition or Gait Recognition) প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ক্যামেরা। বডি মুভমেন্ট (Body Movement) বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত (Detect) করতে পারে এই প্রযুক্তি (Technology)।
চীনে ক্যামেরা সার্ভেইল্যান্স সিস্টেমের নাটকীয়ভাবে ব্যবহার শুরু কোভিড-১৯ প্যানডেমিক (Covid -19 Pandemic) পর্ব থেকে। খবরে প্রকাশ, ২০২১ সালে চীনে সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরার সংখ্যা ছিল ৫৬৭ মিলিয়নেরও বেশি।
চীনে সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরার কাজ কী?
গত বছরের ডিসেম্বরে, চীন হঠাৎ করে জিরো-কোভিড নীতিতে শিথিলতা আনে (Relaxation in Zero-Covid Policy)। বাইরে আটকে থাকা লোকজন, দেশে ফেরার পর লক্ষ্য করেন, তাঁদের অ্যাপার্টমেন্টের দরজার ঠিক বাইরে ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। খবরে প্রকাশ, লোকজন কখন কর্মক্ষেত্রে (Office or Working Places) যাচ্ছেন, রাস্তায় বেরোচ্ছেন, পাবলিক ট্রান্সপোর্টে (Public Transports) উঠছেন, এবং কখন তাঁরা বাড়ি থেকে বের হচ্ছে ও ফিরে আসছেন, তা দেখা হচ্ছে।
এই ক্যামেরাগুলি আরও কাজে লাগানো হচ্ছে। মুখে মাস্ক (Face Mask) পরা না থাকলে, সবুত বাতি জ্বালানো হয় না ট্র্যাফিক সিগন্যালে (Green Light in Traffic Signal)। নিয়ম ভাঙলেই সোশ্যাল ক্রেডিট পয়েন্ট (Social Credit Point) হারাতে হবে, নাহলে উচ্চ বন্ধকী চার্জ (Mortgage Charge) দিতে হবে। এছাড়া, অতিরিক্ত ট্যাক্স এবং ইন্টারনেটের ধীর গতির সাজাও লাগু করা হয়েছে।
চীন সরকার কী বলছে?
চীনা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, দেশে ডিজিটাল হেলথ কোড (Digital Health Code) চালু রয়েছে, সেই উদ্দেশ্যেই বেশিরভাগ ক্যামেরা ইনস্টল করা হয়েছিল। ২৪ ঘণ্টাই নজরদারি চালানো হচ্ছে এই ক্যামেরার মাধ্যমে। অনেকেই এই নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। যদিও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এমনও রিপোর্ট বেরিয়েছে, করোনা প্যানডেমিকের আগে সেদেশের উইঘুর মুসলিমদের (Uyghur Population) দমন করার জন্য সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরা ব্যবহার করা হতো।
গেইট রিকগনিশন কী?
চীনের গেইট রিকগনিশন বা গেট রিকগনিশন (Gait Recognition or Gate Recognition) প্রযুক্তি হলো, এমন একটি সফটওয়্যার প্রযুক্তি, যা মানুষের শরীরের আকার ও হাঁটা দেখে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে পারে। এমনকি, ক্যামেরাতে মুখ দেখা না গেলেও। বেজিং ও সাংহাই (Beijing and Shanghai) পুলিশের দাবি, তারা এই প্রযুক্তি ব্যবহার রে ৫০ মিটার দূরত্ব থেকেও সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করতে পেরেছে (সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পিঠ ক্যামেরার দিকে বা মুখ ঢাকা থাকলেও)।