হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্টের প্রকাশের পর থেকেই আদানি গোষ্ঠির (Adani Group) বিভিন্ন শেয়ারের দাম একেবারে তলানিতে নেমেছে। যার জেরে আদানি গ্রুপের শেয়ার থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। এদিকে আবার এই সংস্থায় এলআইসির বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। শুধু এলআইসি নয়, আদানি গোষ্ঠির শেয়ার বিনিয়োগের তালিকায় রয়েছে ইপিএফও(EPFO)। এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছিল আদানির শেয়ারে নতুন করে আর বিনিয়োগ করবে না এই সংস্থা। কিন্তু না, তারা এখনও আদানি গ্রুপের ফ্ল্যাগশিপ কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজ ( Adani Enterprises) ও আদানি পোর্টসে (Adani Ports) বিনিয়োগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই বিনিয়োগ প্রক্রিয়া ২০২৩-এর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।
এলআইসির পর ইউপিএফও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল ইনন্সিটিউশন, যারা ইক্যুইটি বিনিয়োগের ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত ইটিএফ ফান্ডে বিনিয়োগ করে। দ্য হিন্দুর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বতমানে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন বা ইপিএফও(EPFO) সংগঠিত সেক্টরে কোটি কোটি কর্মচারীর ২৭.৭৩ লক্ষ কোটি টাকার অবসর তহবিলের দায়িত্ব সামলায়। এই বিপুল পরিমাণ তহবিল পরিচালনায় ইপিএফও(EPFO) এনএসই নিফটি এবং বিএসই সেনসেক্সের সঙ্গে যুক্ত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড (ETF) এর মোট কর্পাসের ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করে। এইসব ফান্ড ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ এবং বম্বে এক্সচেঞ্জে অন্তর্ভুক্ত। যদিও ইপিএফও(EPFO) সরাসরি কোনও স্টকে বিনিয়োগ না করে ইটিএফ-এর মাধ্যমে স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করে। ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত ইপিএফও(EPFO) ইটিএফ(ETF)-এ ১.৫৭ লক্ষ কোটি টাকা এবং FY23-এ আরও ৮,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। অনুমান, ২০২২-২৩-এর বাকি সময়ে আরও ৩৮,০০০ কোটি টাকা সেখানে বিনিয়োগ হবে।
আরও পড়ুন:Israel | আইন বদল প্রধানমন্ত্রীর, প্রতিবাদে উত্তাল ইজরায়েল
ইউপিএফও (EPFO) উচ্চতর বেতন-সংযুক্ত পেনশন, FY23 সুদের হার এবং বার্ষিক আর্থিক অনুমান নিয়ে আলোচনা করার জন্য সোমবার থেকে দুই দিনের বৈঠক শুরু হয়। জানা যাচ্ছে এই বৈঠকে সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের সুখবর দিয়ে বাড়তে পারে ইউপিএফও-র সুদের হার। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ইউপিএফও সুদের হার নামিয়ে এনেছিল মাত্র ৮.১ শতাংশে অর্থাৎ ৪ দশকে যা সর্বনিম্ন। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এই সুদের হার ছিল ৮.৫ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে এটাই ছিল ৮.৬৫ শতাংশ। বর্তমানে এই ৮.১ শতাংশ সুদ কিছুটা হলেও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কংগ্রেস সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিও ইপিএফও তহবিল আদানি গোষ্ঠীর দুটি স্টকে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার জন্য সরকারকে নিশানা করছে। গত কয়েকদিন ধরে সরকারের কাছে আদানি মামলার বিষয়ে একটি জেপিসি গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে বিরোধীরা। এ নিয়ে বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে একদিনের জন্যও সংসদের কার্যক্রম চলতে পারেনি। লোকসভার প্রাক্তন সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandh) এই নিয়ে ট্যুইট করে মোদি সরকারকে আক্রমণ করেছেন। বলেছেন, “আদানির জন্য এলআইসি-র টাকা, আদানির জন্য এসবিআই-এর টাকা, আদানির জন্য ইপিএফও-র টাকা৷ ‘মোদানি’-তে প্রকাশ হওয়া সত্ত্বেও, কেন জনসাধারণের অবসর তহবিল আদানি সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগ করা হচ্ছে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তদন্তও নেই, উত্তরও নেই। এত ভয় পাচ্ছেন কেন?”