নয়াদিল্লি: বাজেট অধিবেশনের (Budget Session 2023) দ্বিতীয় পর্বে রাজধানীর রাজনীতি উত্তাল। সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত বিরোধী ও সরকারপক্ষের রণমূর্তিতে সভার কাজ বারবার পণ্ড হয়েই চলেছে। এদিনও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। তবে মোদি (PM Narendra Modi) ও বিজেপি (BJP) সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনের যে রাস্তা বেছে নিয়েছে কংগ্রেস (Congress) নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলি (Opposition Parties), তা থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিল তৃণমূল কংগ্রেস। আদানি-হিন্ডেরবার্গ ইস্যুতে (Adani Group-Hindenburg Row) এদিন বিরোধী দলগুলি একযোগে ইডি-র (ED) অফিসে অভিযান চালালেও তাতে অংশ নেয়নি তৃণমূল। যদিও বিরোধীদের ইডি অফিস অভিযান পুলিশি (Delhi Police) বাধায় হতে পারেনি। তৃণমূল জানিয়ে দিয়েছে, তাদের সরকার বিরোধী আন্দোলন ভিন্ন পথে ও পৃথক কর্মসূচিতে হবে।
তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, আমরা অন্য কোনও প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছি না। তৃণমূল তার নিজস্ব ধাঁচে, নিজস্ব কর্মপদ্ধতিতে এবং নিজস্ব ইস্যুতে সংসদে প্রতিবাদ জানাবে। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস খোলাখুলিভাবে বিজেপি এবং সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলছে। তাই আমরা কংগ্রেস নেতাদের ডাকা কোনও বৈঠকে বা কর্মসূচিতে হাত মেলাতে পারব না। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃণমূল নেতার এই বক্তব্যে এদিনই স্পষ্ট হয়ে গেল যে মোদিবিরোধী লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেস দূরত্ব বজায় রাখার পথে হাঁটল। যদিও প্রবল কংগ্রেস বিরোধী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের ভারত রাষ্ট্র সমিতির নেত্রী তথা কেসিআর কন্যা কে কবিতা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা বিরোধী জোটে থাকবেন। যা রাজধানীর রাজনৈতিক সমীকরণের দিক থেকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিন কংগ্রেস, ডিএমকে, আপ, বামেরা ছাড়াও বেশ কয়েকটি দল মিলে ইডি দফতরে অভিযান চালাতে যায়। কিন্তু, সাংসদদের এই অভিযানে ব্যাপক পুলিশি বাধার মুখোমুখি হতে হয় বিরোধীদের। বিরোধী দলগুলি যাতে বড় জমায়েত না করতে পারে তার জন্য ইডি অফিসের সামনে দুর্গ গড়ে ফেলে পুলিশ। দিল্লি পুলিশ ও বিরোধী দলনেতাদের মুখোমুখি অবস্থায় ব্যাপক উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন বিরোধী দলগুলি অশান্তি এড়াতে ফের সংসদে ফিরে আসে। কংগ্রেসের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ১৭-১৮টি বিরোধী দলের নেতারা এক-এক করে ইডি দফতরে গিয়ে অভিযোগ জমা দিয়ে আসবেন।
এর আগেই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেন, পুলিশ বিজয়চকে ইডি দফতরের ধারেকাছে ঘেঁষতে দিচ্ছে না। আমরা ইডির ডিরেক্টরকে আদানি কেলেঙ্কারি নিয়ে স্মারকলিপি জমা দিতে চাই। লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতি রয়েছে এখানে। উল্লেখ্য, এদিনের অভিযানে বিরোধীদের সঙ্গে ছিল না তৃণমূল ছাড়াও শরদ পাওয়ারের এনসিপি, যারা মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস জোটের শরিক।
১৬ বিরোধী দলের স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, আদানি ইস্যুতে নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, প্রাথমিক কোনও তদন্তই হয়নি। যা কেবলমাত্র আমাদের অর্থনীতির পক্ষেই নয়, গণতন্ত্রের পক্ষেও বিপজ্জনক।