নয়াদিল্লি: ভারতে (India) অসংখ্য রাজনৈতিক দল রয়েছে (Political Party)। তার মধ্যে কয়েকটি জাতীয় পর্যায়ের দলের মর্যাদা পেয়েছে। দল চালানোর জন্য চাই অর্থ এবং এর তহবিলের (Funding) ব্যবস্থা করে থাকে প্রতিটি দল। এই তহবিলের উৎস নিয়ে পর্যালোচনা করেছে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (Association for Democratic Reforms) নামে এক সংস্থা। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে রাজনৈতিক দলগুলির অর্থের উৎস কী তা নিয়ে গবেষণা করেছে তারা।
সংস্থাটি বলছে, রাজনৈতিক দলগুলি গণতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কারণ তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, সরকার গঠন করে, নীতি প্রণয়ন করে এবং শাসন প্রদান এবং সাধারণ মানুষের জীবন উন্নত করার জন্য দায়ী। রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থের প্রয়োজন ভোটারদের কাছে পৌঁছনোর জন্য, তাদের লক্ষ্য-নীতি ব্যাখ্যা এবং জনগণের কাছ থেকে ইনপুট গ্রহণ করার জন্য। কিন্তু তারা কোথা থেকে তাদের তহবিল সংগ্রহ করে?
ভারতের নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা তাদের আয়কর রিটার্ন এবং অনুদানের তথ্য বলছে, তহবিলের উৎস অনেকাংশেই অজানা। ২০ হাজার টাকার নীচে অনুদান দেওয়া ব্যক্তি বা সংস্থার নাম প্রকাশের দায় নেই রাজনৈতিক দলগুলোর। ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে পাওয়া অর্থের উৎস জানানোরও কোনও দায় নেই তাদের। ফলে, অর্থের প্রায় ৬৫ শতাংশের উৎসই অজ্ঞাত থেকে যায়। ২০১৩ সাল থেকে আরটিআই আইনের আওতায় আনা হলেও এখনও রাজনৈতিক দলগুলি তা মেনে চলে না।
আরও পড়ুন: DA Protest | আন্দোলনকারী সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক রাজ্যপালের, সমাধান মিলল কি?
এডিআর সংস্থা বলছে,
• ২০০৪-০৫ এবং ২০২১-২ অর্থবছরের মধ্যে, জাতীয় দলগুলি অজানা উত্স থেকে ১৭,২৫০.২০১ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।
• ২০২১-২২ অর্থবছরে, বিজেপি (BJP) অজানা উৎস থেকে আয় হিসাবে ১১৬১.০৪ কোটি টাকা ঘোষণা করেছে যা সামগ্রিক হিসেবের (২১৭২.২৩১ কোটি টাকা) ৫৩.৪৫ শতাংশ। অজানা উৎস থেকে অন্যান্য জাতীয় দলগুলির মোট আয়ের থেকে বিজেপির এই আয় ১৪৯.৮৬ কোটি টাকা বেশি। অন্যান্য ছ’টি জাতীয় দলের ঘোষিত অজানা উৎস থেকে মোট আয় ১০১১.১৮ কোটি টাকা।
• সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (AITC) অজানা উৎস থেকে আয় হিসাবে ৫২৮.০৯ কোটি টাকা ঘোষণা করেছে যা জাতীয় মোট আয়ের ২৪.৩১ শতাংশ।
• অজানা উৎস থেকে আয় হিসাবে ২১৭২.২৩১ কোটি টাকার মধ্যে, নির্বাচনী বন্ড থেকে আয়ের অংশ ছিল ১৮১১.৯৪২৫ কোটি টাকা যা ৮৩.৪১ শতাংশ।
• ২০০৪-০৫ এবং ২০২১-২২ অর্থবর্ষের মধ্যে কুপন বিক্রি থেকে কংগ্রেস (Congress) এবং এনসিপির (NCP) সম্মিলিত আয় দাঁড়িয়েছে ৪৩৯৮.৫১ কোটি টাকা।
• উল্লেখ্য, অডিট রিপোর্ট অনুসারে AITC-এর মোট অনুদানের মূল্য ৩৮ লক্ষ টাকা (নির্বাচনী বন্ড থেকে অনুদান ব্যতীত)। কিন্তু দলটি অনুদানের বিবৃতিতে ৪৩ লক্ষ টাকার অনুদান ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ, ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য দলের বিবৃতিতে অমিল রয়েছে।
• সিপিআই (CPI) লেভি, মেম্বারশিপ ফি, পার্টি ফান্ড এবং নির্বাচনী তহবিলের মাধ্যমে অনুদান ঘোষণা করেছে।