টোকিও: নতুন দ্বীপের খোঁজ মিলেছে জাপানে (Japan)। তাও আবার একটি নয়, দু’টি নয়, সংখ্যাটা হাজারে। কয়েক হাজার নতুন দ্বীপের খোঁজ মিলেছে। এবিষয়ে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, ৭ হাজারেরও বেশি দ্বীপের (More Than 7000 Islands) সন্ধান মিলেছে। আশ্চর্যের বিষয় হল, জাপান কর্তৃপক্ষ (Japan Authority) এতদিন জানতই না যে ওই দ্বীপগুলির অস্তিত্ব রয়েছে তাদের ভূখণ্ডে। এবিষয়ে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, জাপানের জিওস্পেশিয়াল ইনফরমেশন অথোরিটি (Geospatial Information Authority – GSI) সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। ডিজিটাল ম্যাপিং (Digital Mapping) করার পর জানা গিয়েছে, জাপানে এই মুহূর্তে মোট ১৪,১২৫টি দ্বীপ রয়েছে। ১৯৮৭ সালে জাপান কোস্ট গার্ড (Japan Coast Guard) যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল, তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল, সরকারিভাবে সেদেশে ৬,৮৫২টি দ্বীপ চিহ্নিত করা হয়েছিল। বর্তমান সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, সেই সংখ্যা ২০২৩ সালে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
আরও পড়ুন: Namibian Cheetahs | কুনোতে স্বাধীন সংসার পাততে গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হল ওবান-আশাকে
কিন্তু হিসাবের এই গরমিল কেন? কেনই বা এতদিন জানতে পারেনি জাপান কর্তৃপক্ষ? এই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে বিভিন্ন মহলে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ৩৫ বছর আগে জাপানি কোস্ট গার্ড (Japanese Coast Guard) সেদেশে দ্বীপের মোট সংখ্যা গণনার জন্য যে প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল, তা এখনকার দিনের মতো এতটা উন্নত ছিল না। পুরাতন প্রযুক্তি (Old Technology) ঠিক মতো পার্থক্য করতে পারেনি একটা গোটা দ্বীপ (Indivudial Island) এবং অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপের (Cluster of Islands) মধ্যে। অর্থাৎ কয়েক হাজার দ্বীপকে সেই সময় একটা গোটা দ্বীপ হিসেবে গণনা করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান প্রযুক্তি একটা গোটা দ্বীপ এবং অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপের মধ্যে পার্থক্য করতে সক্ষম। সেই কারণে সরকারি গণনায় দ্বীপের সংখ্যা বেড়েছে। তবে শুধু এই একটি কারণ নয়, আরও একটি কারণ রয়েছে।
এছাড়া, বিগত ৩৫-৩৬ বছরে একাধিক আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে। তা থেকে অসংখ্য নতুন নতুন দ্বীপের সৃষ্টি হয়েছে। এই দু’টি ঘটনায় ফলে জাপানে দ্বীপের সংখ্যা বেড়েছে।
প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ১০০ মিটার অথবা তার বেশি পরিধিবিশিষ্ট এবং প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়েছে এমন দ্বীপ গণনার জন্যই সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির ব্যববহার করেছিল জিএসআই। এই একই প্রযুক্তি জাপানের ভূখণ্ড (Japan Territory) নিশ্চিত করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়াও, জাপানের জিওস্পেশিয়াল ইনফরমেশন অথোরিটি প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করার জন্য এরিয়াল ফটো (Aerial Photos) সাহায্য নিয়েছে। সেই সমস্ত ছবি পুরনো মানচিত্রের (Old Maps) সঙ্গে ক্রস-চেক (Cross-Check) করে দেখা হয়েছে, যাতে কোনও ভুল তথ্য না থেকে যায়।
জিএসআই সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, দ্বীপ গণনার মাপকাঠি হিসেবে তেমন কোনও আন্তর্জাতিক চুক্তি (International Agreement) নেই। ১৯৮৭ সালে যে আকারের মানদণ্ড দ্বীপ হিসেবে গণ্য করার জন্য ধার্য করা হয়েছিল, এবারেও সেই হিসেবে করা হয়েছে। বর্তমানে জাপানে ১৪,১২৫টি দ্বীপ রয়েছে এবং এর কোনওটিই মানুষের তৈরি বা কৃত্রিম দ্বীপ (Man-made or Artificial Island) নয়।