গুয়াহাটি: পেগাসাস কেলেঙ্কারি নিয়ে উত্তপ্ত সমগ্র দেশ। ফাঁস হয়ে যাচ্ছে মানুষের গোপনিয়তা। নজরদারি চালানো হচ্ছে সাংবাদিক থেকে শুরু করে বহু ব্যবসায়ী, সরকারি আধিকারিক, রাজনীতিবিদ, বিজ্ঞানী এবং সমাজকর্মীদের উপরে। যা নিয়ে বিরোধীরা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর চড়িয়েছে। যার পালটা জবাব দিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
উত্তর-পূর্ব ভারতের বড় রাজ্য অসমের মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপির জনপ্রিয় নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দাবি করেছেন যে এই পেগাসাস কেলেঙ্কারি হচ্ছে ভারত বিরোধী একটা বড় ষড়যন্ত্র। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের কাঠামো এবং নেতৃত্বকে কালিমালিপ্ত করতেই এই প্রকারের বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিশ্ব শর্মা।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “কিছু সংবাদমাধ্যম এবং তাঁদের কিছু কর্মী দাবি করছেন যে তাঁদের গোপনিয়তা বজায় থাকছে না। সবকিছু ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। এমন আশঙ্কা প্রকাশ করলেও কখনই নিশ্চিত করে বলছে না যে তাঁদের গোপনিয়তা ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এটা কোন প্রকারের সাংবাদিকতা?” একই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “একটি সংস্থা এবং তার সহযোগী কিছু সংস্থার সাহায্য নিয়ে ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো এবং নেতৃত্বকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে। এটা একটা বড় ষড়যন্ত্র।”
এই পেগাসাস কেলেঙ্কারি নিয়ে উত্তপ্ত হয়েছে ভারতের সংসদের দুই কক্ষ। যা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস। একদা কংগ্রেসের হয়ে রাজনীতি করা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা তাঁর পুরনো দলের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “কংগ্রেস পার্টির উচিত সরকারের পাশে দাঁড়িয়ে ওই সকল সংস্থার সমালোচনা করা। তারা কখনই আমাদের দেশের বদনাম করত পারে না। ভারত সরকারের উচিত ওই সকল সংস্থাকে এই দেশে নিষিদ্ধ করে দেওয়া।”
ভারতের বহু মন্ত্রী, বিরোধী নেতা, সাংবাদিকের ফোন হ্যাক করেছে ইজরায়েলি সংস্থার স্পাইওয়্যার পেগাসাস৷ ফোন হ্যাকিংয়ের তালিকায় রয়েছেন বহু ব্যবসায়ী, সরকারি আধিকারিক, বিজ্ঞানী এবং সমাজকর্মী। বেশির ভাগ হ্যাক করা হয়েছে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে৷ গত রবিবার এই বোমা ফাটায় দ্য গার্ডিয়ান, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং দ্য ওয়্যারের মতো দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যম৷
এই খবর সামনে এসেছে এমন দিনে, ঠিক যার পরের দিন সংসদে বাদল অধিবেশন শুরু হতে চলেছে৷ খুব স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে উত্তপ্ত হচ্ছে সংসদের দুই কক্ষ। মঙ্গলবার দুই দিনের জন্য লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। এ দিন সন্ধ্যায় পেগাসাস নিয়েই দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন কংগ্রেসের একদল নেতা। সেখানে মল্লিকার্জুন খাড়গে অত্যন্ত কড়া ভাষায় কেন্দ্রকে আক্রমণ করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তোলেন।