কলকাতা: সামনেই পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Vote)। তার আগে আবার ভাঙন গেরুয়া শিবিরে। রবিবার কলকাতায় এসে তৃণমূলে (TMC) যোগ দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের ভারতীয় জনতা পার্টির বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল (Suman Kanjilal – BJP MLA, A Alipurduar)। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee, General Secretary of the All India Trinamool Congress) এদিন ক্যামাক স্ট্রিটে তাঁর কার্যালয়ে উত্তরীয় পরিয়ে দলে যোগদান করান বিজেপি বিধায়ককে। এই নিয়ে ছ’জন বিধায়ক গেরুয়া শিবির ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে এলেন।
Rejecting the anti-people policies & hate-laden agenda of @BJP4India, Shri Suman Kanjilal joined the AITC family today, in the presence of our National General Secretary Shri @abhishekaitc.
Yet another @BJP4Bengal MLA realises the truth that BJP has no intention to serve people! pic.twitter.com/PN35V5sH6O
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) February 5, 2023
উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হল, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Election 2021) বাংলায় তৃণমূল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরলেও, আলিপুরদুয়ার জেলায় একটাও আসন জিততে পারেনি। সবকটি আসনই বিজেপির দখলে যায়। এবার সেই জেলাতেই বিজেপির ঘরে ভাঙন ধরালো টিএমসি।
২০২০ সালে রাজনীতিতে আসেন পেশায় সাংবাদিক সুমন কাঞ্জিলাল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সৌরভ চক্রবর্তীকে হারিয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন। বিধানসভায় (West Bengal Legislative Assembly) প্রধান বিরোধী দলের অন্যতম ভালো বক্তা হিসেবে সুনাম রয়েছে তাঁর। কিন্তু টিএমসিতে কেন? তৃণমূলের যোগ দেওয়ার মুহূর্তে বিজেপি সাংসদ জন বার্লার (John Barla, Member of the Lok Sabha) বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, জন বার্লা কাজে বাধা দিচ্ছিলেন, তাই তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল শিবিরে যোগ দিলেন।
আরও পড়ুন: Discovery of Treatment: শ্বাসনালী থেকে মার্বেল জাতীয় বস্তু বের করার যন্ত্র উদ্ভাবন বাঙালি চিকিৎসকের
গেরুয়া শিবিরের টিকিটে বিধায়ক হওয়ার পর দল বদল, যোগ দিলেন বিরোধী শিবিরেই। এই প্রসঙ্গে বিজেপি পরিষদীয় দলের বক্তব্য, গত তিন দিন ধরেই কলকাতায় ছিলেন সুমন। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া অপর এক বিধায়কের হাত ধরেই টিএমসি শিবিরে গিয়েছেন সুমন। এদিকে, বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যর (Samik Bhattacharya) দাবি, বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের দলবদলে রাজ্য রাজনীতিতে কোনওরকম প্রাসঙ্গিকতা হারাবে না বিজেপি।
এদিকে, বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দলনেতা এবং বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari, Leader of the Opposition in the West Bengal Legislative Assembly) বলেছেন, সুমন কাঞ্জিলালের দশাও মুকুল রায়ের মতো হবে। দলত্যাগী বিরোধী আইনে বিধায়ক পদ বাতিলের ভয়ে বিধানসভায় তাঁকে বিজেপি বিধায়ক বলেই পরিচয় দিতে হবে।
Are you scared of the 10th Schedule of the Indian Constitution (anti-defection law) ?
Not handing over TMC flag?
Because, inside Vidhan Sabha, as in the case of Mukul Roy, TMC Owner labelled him as BJP; Suman Kanjilal would also claim that he belongs to the BJP Legislative Party. pic.twitter.com/TSFUPuJPgb— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) February 5, 2023
শুভেন্দু আরও বলেছেন, সুমন কাঞ্জিলালের বিশ্বাসঘাতকতার জবাব আলিপুরদুয়ারের মানুষ দেবেন।
I would soon be visiting Alipurduar to meet the Voters, who have been duped by Suman Kanjilal & encourage the @BJP4Bengal Karyakartas to make their fight against the Corrupt TMC Govt more intense and unseat them from power democratically.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) February 5, 2023
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় ৭৭টি আসন জয়লাভ করেছিল বিজেপি। বাংলায় প্রার্থী করা হয়েছিল দুই সাংসদকে। ভোটে জিতলেও পরবর্তীকালে তাঁরা বিধায়ক পদ ছেড়ে দেন। এরপর, খালি ওই আসন দু’টিতে পরবর্তীকালে উপনির্বাচনে হয় এবং তৃণমূল জিতে নেয়। কাগজে-কলমে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা এরাজ্যে এখন ৭৫টি হলেও, ৬ বিধায়ক দল পরিবর্তন করেছেন। ফলে পদ্মশিবিরে এখন বিধায়কের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯-এ। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক ও বিজেপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মুকুল রায় (Mukul Roy) তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। তাঁর পথে হেঁটে কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়, রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ টিএমসিতে যোগ দেন। সেই তালিকায় নবতম সংযোজন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল।