Placeholder canvas
কলকাতা বুধবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৫ |
K:T:V Clock
Fourth Pillar: তাওয়াংয়ে আবার ভারত-চীন সেনা-সংঘর্ষ, এদিকে চীনের সঙ্গে বেড়েই চলেছে ব্যবসা!
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By: 
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২, ১০:৩০:০০ পিএম
  • / ১২৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে

৯ তারিখে অরুণাচলপ্রদেশে তাওয়াং থেকে ২৫ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে ইয়াঙসে এলাকায় ভারতীয় সেনাবাহিনী আর চিনের পিএলএ পিপলস লিবারেশন আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। যা খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে ভারতের ৩০ জন জওয়ান আহত হয়েছেন, এদের মধ্যে ৬ জনের আঘাত গুরুতর, তাঁদেরকে চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটিতে আনা হয়েছে। খবর আমরা জানলাম ১২ তারিখে। ওই ১২ তারিখ থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া, ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপে বেশ কিছু ভিডিয়ো ঘুরে বেড়াচ্ছে, বিশ্বাস করুন, দায়িত্ব নিয়ে বলছি এরমধ্যে একটাও, হ্যাঁ একটাও ওই ঘটনার নয়, যে ভিডিয়োগুলো ছড়ানো হচ্ছে তার বেশিরভাগটাই লাদাখের, একটা কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া সিকিম সীমান্তের। সাধারণ সীমান্ত পাহারাদারি রীতি মেনেই ছোটখাটো দখলদারিতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয় না, তার জায়গায় কাঁটা লাগানো লাঠি, গদা ধরণের অস্ত্র, হকি স্টিক ইত্যাদি ব্যবহার হয়। কেন? কারণ হঠাৎ ফায়ারিং উত্তেজনাকে যুদ্ধে পরিণত করতে পারে, তাই এরকম রীতি। এসব ঘটনার পরেই দু’পক্ষের সেনাবাহিনীর কমান্ডে থাকা অফিসাররা ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে বসে ঝগড়া মেটান, মেটানোর চেষ্টা করেন। এরপর আরও সিনিয়র আর্মি অফিসাররা হাজির হন, ওদিকে দেশের রাজধানী থেকে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনাও চলতে থাকে। ভারত-চীনের মধ্যে এরকম ঘটনা বহুবার ঘটেছে, লাদাখে, ভূটানের কাছে ডোকলামে, সিকিম সীমান্তে, অরুণাচলে তো বটেই। কারণ চীন অরুণাচলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিজেদের বলেই দাবী করে আসছে বহুদিন ধরেই। এই দাবির থেকে ১৯৬২-তে চীন ভারত যুদ্ধ হয়েছিল, এবার চীনা ফৌজ অরুণাচলের বমডিলা পর্যন্ত নেমে এসেছিল, কিছুদিন পরে তারা ফিরে যায়। সেই ৬২’র ভারত-চীন যুদ্ধের অনেক গল্পগাথা আছে, তারমধ্যে অন্যতম হল যশবন্ত সিং রাঠোরের গল্প, ফোর্থ গাড়োয়াল রাইফেলসের সেই গল্পের কথা সবাই শুনেছে, তিনজন সিপাই মিলে চীনা বাহিনীর কাছ থেকে একটা এমএমজি মিডিয়াম মেশিন গান কেড়ে নিয়ে চীনা বাহিনীকে রুখে দিয়েছিলেন ফোর্থ গাড়ওয়াল রাইফেলসের তিনজন সেনা, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ল্যান্সনায়েক ত্রিলোক সিং নেগি, রাইফেলম্যান গোপাল সিংয়ের এমএমজি নিয়ে চীনা বাহিনীকে আটকাতে থাকেন রাইফেলম্যান যশবন্ত সিং রাওত। পরে সেই পোস্ট দখল করে চীনা সৈন্যরা, যশবন্ত সিং রাওতের মৃত্যু কীভাবে হয় জানা নেই। অনেকে বলেন, তিনি শেষ গুলিটা নিজের জয় রেখেছিলেন। আবার অনেকে বলেন, তাঁকে চীনা ফৌজ হত্যা করে। যাইহোক যুদ্ধ শেষে তাঁর মাথা এবং ব্যাজ ফেরত দেওয়া হয়। এখনও যশবন্ত সিং রাওতের মেমোরিয়াল আছে, রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর কর্তারা ওইদিকে গেলেই ওই মেমোরিয়ালে যান, শ্রদ্ধা জানান। ট্যুরিস্টরাও যান এবং স্থানীয় লোকেদের মুখে মুখে সেই ঘটনা এখন এক রূপকথা, এক মিথ, সঙ্গে জুড়েছে সেলা আর নুরা, দুই যুবতীর কাহিনী। আজ হঠাৎ এই গল্প বলছি কেন? কারণ ওই যুদ্ধও ঠিক যেখানে শুরু হয়েছিল, সেই ইয়াংসে, সেই ন্যুরেনাং নদীর পাশেই ৯ তারিখে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা যেটাকে ইয়াংসে বলছি, সেটাকেই চীনের ম্যাপে ডঙজাম বলা হয়। এবার আসুন আলোচনা করা যাক কেন গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকা। যে কোনও পাহাড়-পর্বতে ঘেরা সীমান্তে তিনটে জায়গা গুরুত্বপূর্ণ হয়। প্রথমটা হল রিজ বা পর্বতের উঁচু খাঁজ। কেন? কারণ এখান থেকে দূরে পড়শি দেশের রাস্তাঘাট, আসা-যাওয়ার উপর নজর রাখা যায়। কাজেই রিজ দখলে রাখতে পারাটা জরুরি। দু’নম্বর গূরুত্বপূর্ণ জায়গা হল পাস আর ভ্যালি, কারণ সেখানদিয়েই সৈন্যবাহিনীরা যাবে আসবে, তাদের সাপ্লাই লাইন তো ওটাই। তিন নম্বর গুরুত্ব পূর্ণ জায়গা হল নদী, পাহাড়ি নদী, কারণ নদী উপত্যকা সবথেকে তলায় থাকে, অনেক সময়েই এই নদীই সীমান্ত রেখা হয়ে দাঁড়ায়, এই কুলে আমি আর ওই কুলে তুমি, মাঝখানে নদী ওই বয়ে চলে যায়। তো ওই ইয়াংসি হল রিজ, ১৭ হাজার ফুট উচ্চতায় ওই অঞ্চলে সবচেয়ে খাড়াই পর্বতের খাঁজ, যেখানে ম্যাপে চারটে ইন্ডিয়ান মিলিটারি পোস্ট দেখা যাচ্ছে, আসলে ওখানে ৬টা পোস্ট আছে। ওইখানেই আছে সোনাচু ঝোরা, যা নেমে এসেছে ভারতের দিকে, তখন তার নাম ন্যুরেনাং নদী। এই নদীই তাওয়াংয়ে ঝরে পড়ছে এক অনবদ্য জলপ্রপাত, আমার দেখা ভারতবর্ষে সব থেকে সুন্দর জলপ্রপাত। জং ফলস, যেখানে কোয়লা ছবির শ্যুটিং হয়েছিল, শাহরুখ, মাধুরি ছিলেন। সমস্যা আজ থেকে নয়, চীন ওই ইয়াংসে সীমান্তে বিরাট চওড়া রাস্তা তৈরি করেছে, বসতি বানিয়েছে, যেখানে অবসরপ্রাপ্ত চীনা সেনার দল পরিবার নিয়ে থাকছেন,ভারতের দিকে কিন্তু মাইল ১৫-র মধ্যে কোনও বসতি নেই। ভারত সীমান্ত জুড়ে চীন জনবসতি তৈরি করছে, ইয়াংসে, ডোকলাম, গালওয়ান থেকে শুরু করে আরও অন্যান্য জায়গায়। এটা একটা স্ট্রাটেজি, প্রথমত এই জায়গাগুলো সেনাবাহিনীর স্থায়ী জায়গা হবে, সিভিলিয়ানরাও থাকা শুরু করবেন, তারা দেখাবে ওই দুর্গম এলাকাতেও কিভাবে আধুনিক বসতি তৈরি করা যায়, ওই জায়গাজুড়ে জমা হবে অস্ত্রশস্ত্র। তাদের এখনও লক্ষ্য তাওয়াং। চীনের সেনাবাহিনীর হঠাৎ মনে হল যাই একটু লড়ে আসি, লড়তে এল, তা হতে পারে না, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে অত্যন্ত সুশৃঙ্খল এক বাহিনী নির্দেশ ছাড়া কিছুই করবে না, কাজেই সর্বোচ্চ নেতাদের নির্দেশ আছে বৈকি। তারা চীনের মূল ভুখণ্ড থেকে তিব্বত হয়ে করাচি পর্যন্ত ৮ লেনের সড়ক বানাতে চায়, বানাচ্ছে, এই ঘটনাগুলো তারই ধারাবাহিকতা। উত্তেজনা কী কেবল ভারত-চীন সীমান্তেই চলছে? না। চলুন অন্যদিকগুলো দেখা যাক। আরব সাগরে গুজরাত তট জুড়ে ভারতের এয়ার ফোর্স আর নেভি ৮ থেকে ২২ ডিসেম্বর মহড়া চালাচ্ছে। ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের একই ধরণের মহড়ার কথা বলা হয়েছে ২০ – ২৩ ডিসেম্বর। সঙ্গে সঙ্গেই চীনা মিসাইল এবং স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং নৌ জাহাজ ভারত মহাসাগরে হাজির, তারা শ্রীলঙ্কার বন্দরেও আসতে পারে, সে অনুমতি তাদের আছে। এদিকে আজ এবং কাল ইডিয়ান এয়ার ফোর্স উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মহড়া চালাচ্ছে, ওখানে নো ফ্লাইং জোন অঞ্চল নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওদিকে দিন কয়েক আগে থেকেই তিব্বতের সিগাটসে বিমানবন্দরে হলচল, স্বয়ংচালিত ছোট বিমান ইত্যাদি উড়ছে, চীন ভারত সীমান্ত ঘেঁসে তিনটে আরও বিমানবন্দর তৈরি করছে, প্রথমটা এই তাওয়াংয়ের কাছে ল্যুহন্টসে, দ্বিতীয়টা নেপাল বর্ডারের কাছে টিংরিতে, তৃতীয়টা পুরাংয়ে যেখানে নেপাল, ভারত আর চীনের সীমান্ত আছে। এসব চলছে লুকিয়ে-ছুপিয়ে নয়, খুলে আম। এদিকে ৫৬ ইঞ্চ কা সিনা নিয়ে একটা কথা তো বলছেনই না, উলটে বিরোধীরা সংসদে আলোচনা চাইলে আলোচনা করতেই অস্বীকার করছেন। চীন এই উপমহাদেশে তাদের আধিপত্য বাড়ানোর জন্য এক বিরাট পরিকল্পনা নিয়েই কাজ করছে, তিনটে কাজ একসঙ্গে করছে, তারা সীমান্ত বরাবর তাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচার, রাস্তা, ব্রিজ, এয়ারপোর্ট তৈরি করে চলেছে। দুই, সীমান্ত বরাবর তাদের সৈন্য সংখ্যা বাড়াছে, পোস্ট বাড়াচ্ছে, উসকানি দিয়ে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। তিন, উপমহাদেশের বাকি দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়িয়ে তুলছে। এদিকে মোদিজি টিকটক বাতিল করছেন, ক’দিন আগেই বলেছিলাম চীনের সঙ্গে আমাদের ট্রেড ডেফিসিট অর্থাৎ বাণিজ্য ঘাটতি ক্রমশ বেড়েই চলেছে, মানে আমরা আমদানি করছি যত তার তুলনায় রপ্তানি কিছুই করছি না, এই বছরে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়াবে ১০০ বিলিয়ন ডলারের ওপর, ওদিকে ‘বি লোকাল, বি ভোকাল’-এর বাওয়ালি চলছে। কীভাবে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে তার হিসাবটা আরেকবার শুনে নিন। ২০১২-তে চীন থেকে আমাদের আমদানি ছিল ৩৯.৩ বিলিয়ন ডলারের সামগ্রী, ২০১৩-তে ৩৮.৪ বিলিয়ন ডলার, ২০১৪-তে ৪২.১ বিলিয়ন ডলার, ২০১৫-তে ৪৫.৬ বিলিয়ন ডলার, ২০১৬-তে ৪৪.৩ বিলিয়ন ডলার, ২০১৭-তে ৫৩.২ বিলিয়ন ডলার, ২০১৮-তে ৫৬.৪ বিলিয়ন ডলার, ২০১৯-এ ৫২.৭ বিলিয়ন ডলার (এরমধ্যে চীনে কোভিড শুরু হয়ে গিয়েছে), ২০২০-তে ৪০.৭ বিলিয়ন ডলার, আমাদের দেশে কোভিড চলছে, ২০২১-এ ৬২.২ বিলিয়ন ডলার আর ২০২২-এ ৮৯.৭ বিলিয়ন ডলারের আমদানি করা হয়েছে। এই পুরো হিসাবটা প্রত্যেক বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের। গতবছরে আমাদের মোট আমদানি ছিল ৯৭.৫২ বিলিয়ন ডলার মুল্যের, এবছর প্রথম ৯ মাসেই ৮৯.৭ বিলিয়ন ডলার। মোদিজির মেক ইন ইন্ডিয়া আসলে এক বিশুদ্ধ তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়, আর তাঁর ভক্তদের উল্লাস আসলে এই তামাশারই অঙ্গ।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২
১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯
২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬
২৭ ২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

জঙ্গলে টানা ১২ ঘণ্টা অনুশীলন! প্রিয়াংশের সাফল্যের রহস্য কী?  
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
নাগরিক সুরক্ষায় নয়া আধার অ্যাপ, মুখের আইডি স্ক্যান করালেই আপডেট
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
বাধ্য হয়েই পুলিশ অ্যাকশন নিয়েছে, চাকরিহারাদের উপর লাঠিচার্জ নিয়ে মুখ খুললেন সিপি
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
‘এক্সকিউজ মি’ ইংরেজিতে বলায় মহারাষ্ট্রে দুই মহিলা মার
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
এবার মহাকাশে পা রাখছে বাংলাদেশ? বড় সুখবর দিল নাসা
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
এখনও সরকারি বাসভবন মেলেনি রেখার, নয়া বাংলো পেলেন অতিশী
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
কেন এই আন্দোলন? বিক্ষোভকারীদের পাল্টা প্রশ্ন ব্রাত্য বসুর
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
চাকরিহারাদের পাশে রাজ্য, তারপরেও যা করা হয়েছে বাঞ্ছনীয় নয়: মুখ্যসচিব
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
‘আমাদের সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই’, ওয়াকফ আইন নিয়ে সরব মমতা
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
ভাড়া বাড়িতে নোটের পাহাড়, গুনতে গিয়ে অবাক পুলিশ, কিন্তু কেন?
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
ভারত-পাক সীমান্তে আইইডি বিস্ফোরণ, গুরুতর আহত বিএসএফ জওয়ান
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
প্রসেনজিৎ প্রযোজিত হিন্দি সিরিয়ালের রোমান্টিক ঝলক প্রকাশ্যে, ‘কথা’র রিমেক
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
Aajke | এই মুহূর্তে তৃণমূলকে কেবল তৃণমূলই হারাতে পারে
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
চাকরিহারা শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ পুলিশের, গুরুতর আহত কয়েকজন
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
ফের রেপো রেট কমাল RBI, মধ্যবিত্তরা কতটা সুবিধা পাবেন?
বুধবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team