কলকাতা: বারাসত থেকে ধৃত জেএমবি (JMB) জঙ্গি রাহুল সেনের সরাসরি বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগের কথা প্রমাণ হয়েছিল আগেই। এ বার তদন্তে উঠে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। জাল বিছিয়েছে বাংলাদেশজুড়েই। এই জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় টাকা লেনদেন হত ‘বিকাশ’ (BIKASH) এর মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে শিশুকে উদ্ধার করতে গিয়ে কুয়োয় পড়ল ৩০ জন
‘বিকাশ’ হল বাংলাদেশের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস। এই সার্ভিসের সাহায্যে বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে মোবাইলের মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফার করা যায় খুব সহজে। এই মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস এর মাধ্যমে রাহুল সেন ওরফে লালুর কাছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় টাকা পাঠাত জামাতুল মুজাহিদিন এর লোকেরা। সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে লালু এই টাকা নিয়ে ভারতে আসত। এরপর সেই টাকা যেখানে পাঠানোর সেখানে পাঠিয়ে দিত সে। রাহুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী অফিসাররা।
আরও পড়ুন: ফের উত্তপ্ত শ্রীনগর, সেনা- লস্কর জঙ্গির গুলির লড়াইতে নিকেশ ২ জঙ্গি
২০১৫ সালে বাংলাদেশ হিউম্যান ট্রাফিকিং-এ গ্রেফতার হন রাহুল। জেলেই তাঁর পরিচয় হয় আল আমিনের সঙ্গে। সেখানেই এই জঙ্গি সংগঠনের জন্য টাকা তোলার দায়িত্ব নিয়ে জেল থেকে বেরোয় রাহুল। বাইরে এসে পুরনো গাড়ি কেনাবেচার ব্যবসা শুরু করে রাহুল ও তাঁর শাগরেদ হৃদয়। সেখান থেকে যা আয় হত তা সংগঠনের কাজে ব্যবহার করা হত। আর এক ধৃত জঙ্গি নাজিউরকে আফগানিস্তানের পাঠানোর ব্যবস্থা করছিল এই রাহুল। ইতিমধ্যে নাজিউর পাসপোর্টও তৈরি করে ফেলেছিল। কিন্তু তাঁর আগেই পুলিশের জালে ধরা পড়ে যান নাজিউর।
আরও পড়ুন: ভুয়ো সেনার কীর্তি ফাঁস
হরিদেবপুরের তিন জেএমবি জঙ্গি গ্রেফতারের পর তদন্তের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার জঙ্গি সন্দেহে বারাসাতে মধুমুরালি থেকে গ্রেফতার করা হয় ৩৮ বছর বয়সী লালুকে। এঁর স্ত্রী বাংলাদেশের বাসিন্দা। পেশায় ঢাকার আইনজীবী বলে জানা গিয়েছে। লালুর বাড়ি তল্লাশি করে দু’টি ল্যাপটপ, একটি আই-প্যাড, দুটি মোবাইল এবং একাধিক নথি উদ্ধার হয়েছে। ধৃতকে জিজ্ঞেস করে জানা গিয়েছে, এই তিন জঙ্গিদের পরিচয় পত্র তৈরি ও টাকা পয়সা হুন্ডির মাধ্যমে দিতে সাহায্য করতেন তিনি। এছাড়াও জেএমবির কর্মীদের সুবিধার্থে আর্থিক সাহায্য করতেন। এই আর্থিক সাহায্য মূলত ‘হুন্ডি’র মাধ্যমে করা হত।