বয়স বাড়ার সঙ্গে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব বাড়তে শুরু করে। ঘরে বাইরে দৈনন্দিন জীবনযাপনের উঠা পড়ার মাঝেই এই সব দায়িত্ব পালন করতে হয়। ব্যস্ততা এতটাই বেড়ে যায় যে নিজের জন্য আলাদা করে সময় বার করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। গথে বাধা এই জীবন কাটাতে গিয়ে আমাদের গ্রাস করে হতাশা। ফলে হতাশা, দুশ্চিন্তা, ক্লান্তি মিলে মিশে কখন যে মানসিক অবসাদ, স্ট্রেস ও অ্যাংজাইটিতে পরিণত হয় তা বোঝা দায়। তাই কাজের ব্যস্ততার মধ্যেও কীভাবে নিজেকে ভাল রাখবেন জেনে নিন-
পছন্দের কাজ করুন
সংসারের সারাদিনের কাজ সামলে কিংবা অফিস থেকে বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে ক্লান্তি দূর করতে আপনার ভাল লাগার বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করুন। তা বই পড়া, ছবি আঁকা, গান, নাচ কিংবা গিটার বাজানো যে কোনও সৃজনশীল কাজ করতে পারেন। দেখবেন সারাদিনের ক্লান্তি কখন উবে গেছে আপনি বুঝতেও পারেননি।
বেড়াতে যান
বেড়াতে বেরোলে মন এমনি ভাল হয়ে যায়। তাই মাঝে মধ্যেই বন্ধু-বান্ধব কিংবা পরিবারের সঙ্গে ছোটখাটো ট্যুরে যেতে পারেন। হাতে সময় কম থাকলে বাড়ির কাছেই কোথাও পরিবার পরিজনের সঙ্গে বেড়িয়ে পড়ুন। আবার প্রত্যেকেই যদি নিজের নিজের কাজে ব্যস্ত থাকেন তাহলে আপনি একাই বেড়াতে বেরিয়ে পড়ুন। সব সময় যে সঙ্গী থাকতেই হবে তার কোনও মানে নেই। বরং মাঝে মধ্যে একাই বাড়ির বাইরে বেরোলে নিজেকে নতুন ভাবে চেনা বা বোঝা সম্ভব হবে। এতে মন ভাল থাকবে। একঘেয়েনমি কাটবে এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে ভাবনাচিন্তার সুযোগ পাবেন।
আরও পড়ুন: দৈনন্দিন জীবনের উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তাকে দূরে রাখতে নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন এই সব খাবার
বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলুন
আধুনিক জীবনযাপনে যতটা না সময়ের অভাব তার থেকেও বেশি পাহাড় প্রমাণ ইগোর শিকার কম বেশি আমরা সকলেই। তাই ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডে বন্ধুদের ভিড় যতটাই থাকুক না কেন বাস্তব জীবনে দিন দিন বাড়ছে মানুষের একাকিত্ব। তাই অবসর সময় স্মার্টফোনের স্ক্রিনে মুখ না গুঁজে বরং বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করুন। সেই সময়টা যদি না থাকে তাহলে অন্তত প্রত্যেক সপ্তাহে স্কুলে কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। দেখবেন কাছের কোনও মানুষের ফোনের পেলে প্রত্যেকেই খুশি হন। শুধু প্রথম ফোনটা কে করবেন সেটা ভেবেই দিন থেকে বছর পেরিয়ে যাচ্ছে। তাই যোগাযোগের প্রথম পদক্ষেপ না হয় আপনি নিলেন। উপকার পাবেন।
নিয়মিত শরীরচর্চা করুন
হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও নিজেকে সুস্থ রাখার দায়িত্ব আপনারই। তাই অন্তত দিনে ১০ থেকে ১৫ মিনিট বার করে যোগাসন করুন। এটা নিয়মিত করলে শরীর যেমন ভাল থাকবে তেমনই মস্তিষ্কের জন্যেও এটা উপকারী। একাকিত্ব ভুগবেন না। যোগাসন বা শরীরচর্চা ফলে মন শান্ত হয়। মানুষ ভেতর থেকে আনন্দের অনুভব করেন।
আরও পড়ুন: ঘুম কেড়েছে উদ্বেগ? জেনে নিন কি কি কারনে বাড়তে পারে সমস্যা
গার্ডেনিং করতে পারেন
অবসর সময় অযথা চিন্তা না করে বরং গাছপালা কিংবা ফুল পাতার সঙ্গে সময় কাটান। বাড়ির বাগানে হোক কিংবা ব্যালকনিতে যখন দেখবেন গাছে ফুল ফুটেছে তখন মন নিজে থেকেই ভাল হয়ে যাবে।
মাসাজ করুন
সপ্তাহান্তে কিংবা যখন সময় পাবেন মাথা ও গা হাত পা মাসাজ করিয়ে নিন। সপ্তাহ জুড়ে যে ক্লান্তি শরীরে জমেছে তার থেকে রেহাই পাবেন। মাসাজের ফলে গোটা শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে ফলে শরীরে একেবারে চনমনে হয়ে উঠবে। নতুন সপ্তাহে নতুন উদ্যোগে কাজ শুরু করতে পারেবেন।