প্রচণ্ড গরমের পর প্রথম বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি ফিরতে মন্দ লাগে না! চারিদিক সবুজ ও সতেজ হয়ে উঠলে বেশ খুশিতে ভরে ওঠে মন। তবে সে খুশি চিরস্থায়ী হয় না।বর্ষার একটানা বৃষ্টিতে শহর বানভাসি হলেই মনের এই সুখ ফুরোতে আর কতক্ষণ! তখনই মনে ভিড় করে আসে বর্ষাকালের(Monsoon) এই রোগগুলির কথা। এখনও অনেকেই এই রোগগুলির বিষয়ে বিশেষ অবগত নন। আবার অনেক ক্ষেত্রে আমাদের শারীরিক গঠনের উপর নির্ভর করছে এই রোগগুলির প্রতিফলন। সেক্ষেত্রে রোগের ধরন-ধারণ বুঝে ওঠার আগেই ভয়াবহ আকার নিয়ে নেয় এগুলি। তাই বর্ষাকালের এই রোগগুলির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে রাখা ভাল।
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া
বর্ষাকাল মানেই মেঘলা আবহাওয়ায় অতিরিক্তি আর্দ্রতা, বৃষ্টির জমা জল। আর মশাদের বাড়-বাড়ন্ত। বর্ষাকালে মশাবাহিত রোগগুলির অন্যতম ডেঙ্গু(Dengue) ও চিকুনগুনিয়া (Chikungunya)। তাই যথাসম্ভব মশার আঁতুড়ঘর এমন জায়গা এড়িয়ে চলুন। বাজারে মশা মারার বেশ কিছু ক্রিম বা মলম পাওয়া যায়। সেগুলির ব্যবহার করতে পারেন। বাড়ির বাইরে বেরোলে চেষ্টা করুন হাত-পা ঢাকা জামাকাপড় পরতে।
সর্দি-কাশি
কমন কোল্ড ও ফ্লুয়ের মরসুম এখন। ইনফ্লুয়েনজা়(Influenza) ভাইরাসের কারণেই এই সময় জ্বর বা সর্দি কাশি হয়। করোনাভাইরাসের মতো এই ভাইরাসও ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। সেক্ষেত্রে আশেপাশের পরিবেশ নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। এই সময় গলা ব্যথা, সর্দি, জ্বর হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে চেকআপ করান।
কলেরা ও টাইফয়েড
জলবাহিত রোগের অন্যতম টাইফয়েড (Typhoid) ও কলেরা (Cholera)। তাই যে কোনও সময় বিশেষ করে বর্ষাকালে নিজেকে দূষিত জল পান করার থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। বাড়িতেও জল ছেঁকে খান। যাঁরা পেটের সমস্যায় ভোগেন তাঁরা প্রয়োজনে জল ফুটিয়ে খান। কলেরার মতই দূষিত খাবার ও জলের মাধ্যমে টাইফয়েডের জীবাণু আমাদের শরীরে ঢোকে। তাই যতটা সম্ভব রাস্তাঘাটের খাবার এড়িয়ে চলুন। বাড়ির বাইরে বেরোলে খাবার ও জল সঙ্গে নিয়ে বেরোলে ভাল হয়।
হেপাটাইটিস
হেপাটাইটিস ভাইরাসের সংক্রমণে ছড়ায় হেপাটাইটিস এ (Hepatitis A)। বর্ষাকালে ছড়ায় এই রোগ৷ অনেক ক্ষেত্রে প্রাণঘাতীও হয়। নিজেকে সুস্থ রাখতে খাবারের সুরক্ষার দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার প্রয়োজন।
এই রোগগুলির বিষয়ে আগে থেকে জেনে রাখলে রোগের মোকাবিলা করতে আপনার সুবিধে হবে। নিজেকে ও পরিবারের সদস্যদের সুস্থ রাখতে প্রয়োজনমতো পদক্ষেপ নিতে পারবেন। বর্ষাকালে করোনাভাইরাসের (Coronavirus) বাড়-বাড়ন্ত হয় বলে এখনও সেরকম কোনও তথ্য উঠে আসেনি। তবে সব ক্ষেত্রেই রোগের প্রতিকারের চেয়েও রোগ প্রতিরোধ গড়ে তোলা ভাল। তাই বাজার থেকে কিনে আনা ফল-শাক সবজি ভাল করে ধুয়ে নিন। স্বচ্ছ জল পান করুন। হাত পরিষ্কার রাখুন। সাবান দিয়ে ভাল ভাবে হাত ধুয়ে নিন। মশাদের হাতে থেকে রেহাই পেতে ক্রিম ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে মশারি ব্যবহার করুন। সাবধানতা অবলম্বন করুন। সুস্থ থাকুন। ভাল থাকুন।