গান শুনতে ভালোবাসেন? বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে থেকে মিউজিকের দুনিয়ায় (The World of Music) হারিয়ে যাওয়া আপনার হবি? জীবনের সব টেনশনকে এক লহমায় মুছে দিতে আপনার টোটকা কানে হেডফোন কিংবা ইয়ারফোন দিয়ে ফোনের প্লে লিস্টে আঙুল চালানো, আর পছন্দের গান শুনতে শুনতে সময় পার করা। অনেকের আবার মিউজিক (Song and Music) শুনতে গেলে এক্সট্রা বেস (Extra Bass) পছন্দ। অনেকেই বলেন, মিউজিক জোরে না চালালে, সেই ম্যাজিক্যাল ফিলিং (Magical Feeling) ব্যাপারটা কেমন যেন অপূর্ণ থেকে যায়। কিন্তু জানেন কি আপনার এই অভ্যেসই আপনার বড় ক্ষতি করে দিচ্ছে? বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের (Young Generation)। এরকমই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
বিএমজি গ্লোবাল হেলথ (BMJ Global Health) নামক জার্নালে একটি গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ১০০ কোটিরও বেশি কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ-তরুণীরা শ্রবণশক্তি হারানোর ঝুঁকিতে (Risk of Hearing Loss) রয়েছেন। তার কারণ হলো হেডফোন, ইয়ারবাডস ইত্যাদির সব ব্যবহার এবং মিউজিক কনসার্টে (Music Concert) গিয়ে উচ্চস্বরে গান শোনার অভ্যাস।
আরও পড়ুন: Cricket in Olympics: ২০২৮ অলিম্পিকে টি-২০ ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে খেলবে ৬টি দেশ!
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলিনা (Medical University of South Carolina)-র গবেষক সহ আন্তর্জাতিক দল বিশ্বের সমস্ত দেশের সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছে। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, কানের স্বাস্থ্য (Aural Health) সুনিশ্চিত করার জন্য অবিলম্বে এই সংক্রান্ত সুরক্ষা নীতি চালু করা দরকার। নাহলে খুব শীঘ্রই তরুণ প্রজন্ম শ্রবণশক্তি হারাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization – WHO) –র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সারা বিশ্বে এখনও পর্যন্ত ৪৩ কোটি মানুষ শ্রবণশক্তিজনিত সমস্যায় ভুগছেন।
কানে হেডফোন কিংবা ইয়ারপড দিয়ে শব্দ শোনার ক্ষেত্রে নির্ধারিত মাত্রা প্রাপ্তবয়ষ্কদের (adults) ক্ষেত্রে ৮০ ডেসিবল এবং বাচ্চাদের (children) ক্ষেত্রে ৭৫ ডেসিবল। সেটাও সাময়িক সময়ের জন্য। কিন্তু অধ্যয়নে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা রীতিমতো আশঙ্কাজনক। স্মার্টফোন, হেডফোন, ইয়ারবাডসের মতো পার্সোনাল লিসেনিং ডিভাইস (personal listening devices – PLDs) ব্যবহার করেন যুব এবং তরুণ প্রজন্ম। তারা আবার কনসার্টে গিয়ে উচ্চস্বরে গান ও মিউজিক শোনে। তথ্য বলছে, উচ্চস্বরে গান শুনতে অভ্যস্ত তরুণ প্রজন্মের ক্ষেত্রে হেডফোনে গড় সাউন্ড লেভেল হল ১০৫ ডেসিবল, আর বিনোদনের ক্ষেত্রে ১০৪ থেকে ১১২ ডেসিবল। দীর্ঘদিন ধরে এই মাত্রায় উচ্চ শব্দমাত্রা কানে গেলে কানের ক্ষতি অবধারিত। গবেষকদের ভবিষ্যদ্বাণী, উচ্চস্বরে হেডফোনে গান কিংবা মিউজিক শোনার কারণে আগামী দিনে সারা বিশ্বে ১২-৩৪ বছর বয়সী ৬৭ কোটি থেকে ১৩৫ কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ-তরুণী শ্রবণ শক্তি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। তাই এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার। আনা দরকার বিধিনিষেধ, প্রয়োজন সচেতনতামূলক প্রচার।