শিলিগুড়ি: সিঙ্গুর থেকে টাটাকে তিনি তাড়াননি। আসলে টাটাকে (Tata) তাড়িয়েছে সিপিএম। বুধবার শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। শহরের কাওয়াখালি মাঠে এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি চাই রাজ্যে আরও বিনিয়োগ হোক। আরও বেশি রাজ্যের মানুষ কাজ পাক। আমি টাটাকে তাড়াইনি। সিপিএম টাটাকে তাড়িয়েছে। আমি জমি ফেরত দিয়েছি। সিপিএম জোর করে চাষীদের জমি কেড়ে নিতে গিয়েছিল।”
বুধবার শিলিগুড়ির কাওয়াখালির মাঠে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে উত্তরবঙ্গের (North Bengal) উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, তৃণমূল আমলে দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গও একই পদ্ধতিতে উন্নতি করেছে। কখনও উত্তরবঙ্গ আবার কখনও জঙ্গলমহলকে পৃথক রাজ্য ঘোষণার দাবিতে সরব হয়েছে বিজেপি। তবে বারবার তার বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। আরও একবার বাংলা ভাগাভাগির চেষ্টা যে তিনি মেনে নেবেন না তা স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিলিগুড়ির বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে তাঁর বার্তা “ভঙ্গ নয়, বঙ্গ চায় সঙ্গ।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় Mamata Banerjee) বলেন, “উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ নিয়ে বাংলা। উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন নিয়ে সচেষ্ট রাজ্য সরকার। উত্তরবঙ্গে কলেজ, হাসপাতাল হয়েছে। বিশেষভাবে পর্যটনে জোর দেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গকে আরও স্বনির্ভর করে তুলতে চাই। সবাই এক আছি বলে শান্তি বজায় রয়েছে। কোনও প্ররোচনা, ভাগাভাগিতে কান দেবেন না। কোনও ভাগাভাগি নয়। বঙ্গভঙ্গ না। বঙ্গ চায় সঙ্গ।”
মমতা একইসঙ্গে জানান, তিনি রাজ্যের স্বার্থে আরও বিনিয়োগ টানতে উদ্যোগী হয়েছেন। এখন তাঁর লক্ষ্য, আরও বেশি শিল্প, আরও কর্মসংস্থান। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে বলতেই মুখ্যমন্ত্রী টানেন সিঙ্গুর (Singur) প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, “এই কাওয়াখালিতেও বিনিয়োগ হয়েছে। কিন্তু ইচ্ছের বিরুদ্ধে কারও জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি।” ওই প্রসঙ্গেই তিনি টেনে আনেন ডেউচা-পাচামি প্রকল্পের কথা।
আরও পড়ুন:Kolkata Metro: কালীপুজো-দীপাবলিতে মধ্যরাত পর্যন্ত পরিষেবা, ঘোষণা মেট্রোরেলের
বামেদের সরিয়ে ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, তৃণমূল সরকারের মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয় অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দিতে আইন তৈরি করা হবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বুঝিয়ে দিলেন, সিঙ্গুর থেকে টাটার ন্যানো (Nano) কারখানা গুজরাতের সানন্দে সরে যাওয়ার জন্য দায়ী বামফ্রন্ট সরকার।
এদিকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়ে দেন, গোটা রাজ্যে শিল্পের পরিবেশকে ধ্বংস করা হয়েছে। আর সিঙ্গুরে এখন না হচ্ছে শিল্প, না হচ্ছে কৃষি। তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশ কাজের খোঁজে রাজ্যের বাইরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।