Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: অমিত শাহ নরেন্দ্র মোদির ভাবশিষ্য, গুরুর পথে চলা একনিষ্ঠ ভক্ত মাত্র
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By: 
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০৬:১৬:৩০ পিএম
  • / ২৭২ বার খবরটি পড়া হয়েছে

জয়–বিজয়, করণ–অর্জুন, রাম আউর শ্যাম, সলিম–জাভেদ, শঙ্কর–জয়কিষণের মতই পরিচিত জোড়ি হলেন মোদি–শাহ। ২০১৪’তে লোকসভায় বিরাট জয়। অমিত শাহ নিজেই সামলিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশ, ৮০টা আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল ৭১, সহযোগী অপনা দল ২টো। এরপরেই অমিত শাহ দলের সভাপতি আর তারপর থেকে তিনিই সভাপতি, সব্বাই জানেন ওই জগৎ প্রকাশ নাড্ডা হলেন আসলে এক কাঠপুতুল, যিনি কথা বলেন, নড়েন-চড়েন, সবই ওই অমিত শাহের ইসারায়। তারপর থেকে এক প্রচার সর্বত্র, মাঠে-ঘাটে, শহরে-বস্তিতে, এমনকি এলিট মহল, সাংবাদিক, রাজনৈতিক মহলেও চালু হয়ে গিয়েছে। নরেন্দ্র মোদি হলেন মাস লিডার, পপুলার লিডার, ভোট ক্যাচার আর অন্যদিকে অমিত শাহ হলেন স্ট্র্যাটেজিস্ট, চাণক্য, যিনি সবার অলক্ষে ঘুঁটি সাজিয়ে যাচ্ছেন, তিনিই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে চালাচ্ছেন, নির্বাচন কমিশন থেকে সিবিআই, ইডি, ইনকাম ট্যাক্স, তিনিই দল ভাঙাচ্ছেন, এমএলএ কিনছেন, সরকার তৈরি করছেন। মানে দু’জনের মধ্যে একটা জব ডিস্ট্রিবিউশন আছে। একজন দল আর সরকারকে মাসের সঙ্গে, আম জনতার সঙ্গে জুড়ে রাখবেন, অন্যজন ঘুঁটি সাজাবেন, বিরোধীদের শেষ করে দেবেন। এরকম একটা প্রচার আছে, ধারণা আছে বটে, কিন্তু তার এক বর্ণও সত্যি নয়। ২০১২’র আগে ক’জন জানতেন মোদিজি একজন পপুলার লিডার? মাস লিডার? ২০১২’র আগে কোথায়, গুজরাট বাদ দিলে কোন রাজ্যের মানুষ মন্ত্রমুগ্ধের মত তাঁর কথা শুনেছে? কোথাও নয়। কিন্তু সেদিনও তিনি ছিলেন এক স্ট্র্যাটেজিস্ট, একজন চাণক্য, একজন ধুরন্ধর রাজনীতিবিদ, যিনি নির্বাচনে জেতার জন্য যা যা দরকার, সব কিছুই করতে পারেন, হ্যাঁ সব কিছু। আজকে যা যা অমিত শাহ সম্পর্কে বলা হয়, সব তিনি শুরু করেছেন, পথপ্রদর্শক বলা যায়। অমিত শাহের হাতে সেসব অস্ত্র তুলে দিয়েছেন, অমিত শাহ সেগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন মাত্র, বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন, আরও তীব্র করেছেন। কিন্তু নরেন্দ্রভাই দামোদর দাস মোদী একজন মাস লিডার আর অমিত শাহ একজন স্ট্র্যাটেজিস্ট, এটা বলা ভুল হবে। আসুন এই দু’জনের জোড়ির শুরুটা একটু দেখে নেওয়া যাক, যা বলছি সেটা পরিস্কার হয়ে যাবে। শোনা যায় নরেন্দ্র মোদী ক্লাস এইট থেকেই আরএসএস-এ যোগ দিয়েছেন, নিয়মিত শাখায় যেতেন, এরপরে ৬৮/৬৯ নাগাদ তিনি রামকৃষ্ণ মিশনে যোগ দিয়ে সন্ন্যাসী হবার চেষ্টাও করেন, তারপর ৭০ থেকে সক্রিয়ভাবে আরএসএস করা শুরু করেন, আরএসএস-এর প্রচারক হয়ে ওঠেন। তিনি জনসঙ্ঘে যোগ দেননি, এক্কেবারে ১৯৮৫’তে বিজেপিতে যোগ দিলেন। অমিত শাহ কলেজ জীবনেই আরএসএস-এর শাখায় যাওয়া শুরু করেন, বায়োকেমিস্ট্রি নিয়ে গ্রাজুয়েশন করার পরে পারিবারিক ব্যবসাতে যোগ দেন, ১৯৮২’তে আরএসএস-এর এক সভায় নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যোগাযোগ হয়, অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ করতেন, ১৯৮৬’তে বিজেপিতে যোগ দেন। ওই সময় থেকেই তিনি মোদিজিকে দেখেছেন, তাঁর প্রত্যেকটা কাজ, প্রত্যেকটা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে থেকেছেন, শিখেছেন, হয়ে উঠেছেন সুযোগ্য শিষ্য। বিজেপি বা আরএসএস যা করতো না, বা বলা ভাল তখনকার বিজেপি বা আরএসএস-এর রাজনৈতিক সংস্কৃতির সপূর্ণ বিপরীতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রথম থেকেই তাঁর রাজনীতি করে গিয়েছেন। ধরুন এই পঞ্চায়েত ভোট, মিউনিসিপালিটি ভোট, কর্পোরেশন ভোট এগুলোতে বিজেপির ঝাঁপিয়ে পড়া কি অমিত শাহের স্ট্র্যাটেজি? হায়দ্রাবাদে নগরপালিকার নির্বাচন, ৬ জন মন্ত্রী, ১০ জন কেন্দ্রীয় নেতা, অমিত শাহ নিজে হাজির হলেন, টাকা-পয়সা, প্রচার, সভা, মিছিল দেখে মনে হচ্ছিল জেনারেল ইলেকশন, রেজাল্ট, কংগ্রেসকে সরিয়ে বিজেপি দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল, এখন তারাই কেসিআর-কে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির কে চন্দ্রশেখর রাও বিরাট সেকুলার বা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মূল্যবোধ থেকে বিজেপির বিরোধিতা করছে না, তিনি বুঝেছেন, বিজেপির সঙ্গেই তাঁর লড়াই। এই যে বিজেপির দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা, তার পেছনে ওই হায়দ্রাবাদের নগরপালিকা নির্বাচন। একইভাবে এই বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচন, কর্পোরেশন, মিউনিসিপালিটি নির্বাচন, সবখানে বিজেপি যে সর্বশক্তি নিয়ে নামে, সেটা কি নতুন? সেটা কি অমিত শাহের চাণক্য নীতি? তাহলে এবারে দেখুন ১৯৮৭’র আহমেদাবাদ নগরপালিকা নির্বাচন। সরকার কংগ্রেসের, নগরপালিকাও কংগ্রেসের। এক স্বঘোষিত ডন, গ্যাংস্টার আবদুল লতিফ নিজেই ৫টা আসন থেকে দাঁড়াল। নির্বাচনী চিহ্ন সিংহ। লতিফ জেলে, তার সাগরেদরা একটা সার্কাসের সিংহকে খাঁচায় পুরে প্রচারে নামলো। ব্যাস। নরেন্দ্র মোদী মঞ্চে, পেছনে মা ভগবতী, সিংহবাহিনী, দেখো আমাদের দেবীর বাহন সিংহকে খাঁচায় পুরেছে, হিন্দু খতরে মে হ্যায়। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় পাঁচটা আসনেই লতিফ জিতল, কিন্তু বাকি আসনে বিজেপির জয়জয়কার, আবার নিয়ম অনুযায়ী, লতিফকে চারটে আসন ছেড়ে দিতে হল, সেই চারটের তিনটেতে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপি, একটাতে বিজেপি সমর্থিত নির্দল, আবার নিয়ম অনুযায়ী তাঁরাই নির্বাচিত হিসেবে ঘোষিত হলেন। আহমেদাবাদ নগরপালিকা এল বিজেপির হাতে এবং তার ক’বছর পরেই বিজেপি রাজ্যের ক্ষমতায়। অন্য দল থেকে নিজের দলে নিয়ে আসা? দল ভাঙানো? কী ভাবছেন? অমিত শাহের স্ট্র্যাটেজি? ওই ১৯৮৭-তেই বিজেপি নগরপালিকায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল, কিন্তু মেয়র? জয়েন্দ্রভাই তিরকমলাল পণ্ডিত। ইনি প্রজা সোশ্যালিস্ট পার্টির নির্বাচিত প্রতিনিধি, তাঁকে দলে এনে মেয়র করলেন মোদিজি। ৮৭’র পরে দলে তাঁর কদর বাড়লো, তিনি হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশের দায়িত্ব নিলেন। ৯৬ সালে নির্বাচনের আগে মোদিজি কথা বললেন বংশীলালের সঙ্গে, হরিয়ানা বিকাশ পার্টির বংশীলাল, জরুরি অবস্থার সময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, সঞ্জয় গান্ধীর চেলা বংশীলালের সঙ্গে নির্বাচনী আঁতাত, লক্ষ্য একটাই নির্বাচনে জিততে হবে আর জিততে হলে কেউ অচ্ছুৎ নয়, ন্যায়-নীতি ওসব রাজনীতিতে চলে না, শেখালেন মোদিজি, শিখলেন অমিত শাহ। এরপর হিমাচল প্রদেশ, হাং অ্যাসেমব্লি, প্রথমেই তিনি দলের প্রবীণ নেতা শান্তা কুমারকে ছেঁটে দিলেন, আনলেন অনেক নবীন প্রেম কুমার ধুমলকে। এরপর দুর্নীতির অভিযোগে কংগ্রেস থেকে বের করে দেওয়া সুখরামের সঙ্গে হাত মেলালেন, সুখরামের কাছে ৫ জন এমএলএ ছিল এবং শেষে কংগ্রেস নেতা, বিধায়ক গুলাব সিং ঠাকুরকে স্পিকার পদে দাঁড় করিয়ে দিলেন, বিজেপি’র ৩২, কংগ্রেসের ৩২ এমএলএ ছিল, কংগ্রেসের কমে হল ৩১, গুলাব সিং ঠাকুর জিতলেন, সুখরামের ৫ জনকে নিয়ে অনায়াসে বিজেপি সরকার তৈরি হল। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনেকে এই পদক্ষেপ সমর্থন করেননি, কিন্তু মোদিজির চাপে মেনে নিয়েছেন। হ্যাঁ নরেন্দ্র মোদি পথ দেখিয়েছেন, অমিত শাহ কেবল সেটাই ফলো করছেন, সেই পথেই চলছেন মাত্র, তার বেশি কিছু নয়। এই যে আজকের অমিত শাহের রাজ্যে রাজ্যে চিন্তন বৈঠক, নেট নেই, মোবাইল বন্ধ, কাগজ নেই, কেবল আলোচনা, খাওয়া-দাওয়া আর সংগঠন কীভাবে বাড়ানো যাবে, তার চিন্তা। এর শুরুয়াত করেছিলেন ওই নরেন্দ্র মোদি। সংগঠনের সবাইকে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন গুজরাটের গির, তিন দিনের চিন্তন বৈঠক। নরেন্দ্র মোদিই শুরু করেছিলেন হুইস্পারিং ক্যাম্পেন, বাজারে, বাস স্ট্যান্ডে, চায়ের দোকানে চলে যাও। যেন সাধারণ ৫/৬ জন মানুষ, তারপর বলতে থাক, বিজেপি জিতছেই। বাংলাতে এই ক্যাম্পেনের শুরুয়াত ২০১৯-এর নির্বাচনে, কাজেও দিয়েছিল। এসব মোদিজির দেখানো পথ, অমিত শাহ কেবল সেই পথে চলছেন, বা বলা যায়, আরও ভালোভাবে চলার চেষ্টা করছে, কিন্তু তিনি এখনও এমন কিছু করেননি, যাকে নতুন কিছু বলা যায়। প্রতিহিংসা? আসুন হরেন পান্ডিয়ার কথাই বলা যাক। এলেবেলে লোক নন, আহমেদাবাদ শহরের নির্বাচিত এমএলএ, রাজ্যের পুলিশ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, গুজরাট দাঙ্গার সময়ে। মে মাসেই আউটলুক পত্রিকাকে তিনি জানিয়েছিলেন, ওই দাঙ্গা শুরু হওয়ার পরে ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদির ঘরে এক বৈঠকে পুলিশ অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয় হিন্দু মানুষজনরা যা করছে করতে দিন, পুলিশ যেন ওই সব দাঙ্গার জায়গায় না যায়। হ্যাঁ তিনি এই কথা স্পষ্ট করেই জানান, যে কথা পরে আইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভাটও বলেছিলেন। ২০০৩-এ হরেন পান্ডিয়াকে মৃত অবস্থায় তাঁর গাড়িতে পাওয়া যায়, কারা তাঁকে খুন করলো? জানা যায়নি। আরআইপিএস অফিসার সঞ্জীব ভাট আজও জেলে। হ্যাঁ মোদিজির রাজনীতির প্রত্যেক চাল, অ আ ক খ মন দিয়ে শিখেছেন অমিত শাহ। তিনি একজন সুযোগ্য শিষ্য, গুরুদেব নরেন্দ্রভাই দামোদর দাস মোদী।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

রাহুল শেষ পর্যন্ত রায়বেরিলিতেই, আমেথি থেকে পালালেন, কটাক্ষ মোদির
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
পশুদের জন্য এয়ার কুলারের ব্যবস্থা বেঙ্গল সাফারির
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
মালদহে দেবের হেলিকপ্টারে আগুন!
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
একটা ছোট মেয়ের সঙ্গে কী ব্যবহার করলেন রাজ্যপাল, প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
তেলবাজি করে দল চলে না, ফের বিস্ফোরক কুণাল ঘোষ
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
মে মাস জমজমাট OTT প্ল্যাটফর্মে
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
শনিবার থেকে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি, জানাল আলিপুর
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
হাসপাতালে ভর্তি কমেডি কুইন ভারতী সিং
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
পঞ্চায়েত অফিসে গুলি চালানোর ঘটনায় গ্রেফতার দুই
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
গরমে সারা শরীরে র‍্যাশ! এই ৫টি ভুল কখনই নয়
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
তৃণমূলের বেশি ক্ষতি করছেন কুণাল, অভিযোগ পার্থর
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা প্রধানমন্ত্রীর
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
পলিট্রিক্সের গ্রিনরুম | নেপথ্যচারী অধিনায়ক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
বেআইনি নির্মাণ, কলকাতা পুলিশকে টাস্ক ফোর্স গড়ার নির্দেশ আদালতের
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
তৃণমূলের তোলাবাজি আর চলতে দেব না, হুমকি মোদির
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team