পশ্চিম মেদিনীপুর: বিয়ের পর ছেড়ে গিয়েছে স্ত্রী। ফেসবুকে পোস্ট করে আত্মঘাতী যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানার উচিতপুর গ্রামে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৯ জুলাই বিষ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন নীলোৎপল মাজি(৩০) নামে ওই যুবক। এরপর তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার (১১ জুলাই) ওই যুবকের মৃত্যু হয়। সোমবার মৃত যুবকের বাবা জয়দেব মাজি সবং থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন যুবকের স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে অনুযায়ী, উচিতপুর গ্রামের নীলোৎপল মাজি নামে ওই যুবকের সঙ্গে গত ৭ আগস্ট ২০২০ সালে বিয়ে হয় এক যুবতীর। বিয়ের পর তিনমাস দু’জনে এক সঙ্গে সংসারও করে। এরপর কর্মসূত্রে নীলোৎপল দু’মাসের জন্য বাইরে চলে যায়। অভিযোগ, এরপর ওই যুবতী ‘অবৈধ সম্পর্কে’ জড়িয়ে পড়ে। এরপর গত ১৬ জানুয়ারি সে নীলোৎপলকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়।
পরে নীলোৎপল জানতে পারেন তাঁর স্ত্রী সবংয়ের তেমাথানিতে একটি মেসে ভাড়ায় থাকেন। স্ত্রী’কে পুনরায় বাড়ি ফিরে আসতে অনুরোধ করেন, কিন্তু ওই যুবতী নীলোৎপলের সঙ্গে আর থাকতে চায় না এবং তাঁকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। নীলোৎপল ডিভোর্স দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁর নামে বধূ নির্যাতনের মামলা করে তাঁর স্ত্রী। মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়লেও, নীলোৎপল শেষ চেষ্টা করতে শ্বশুরবাড়ি’তে যায় গত শুক্রবার (৯ জুলাই)। সেখানেই সকলে তাঁর উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে বলে অভিযোগ। তারপরই, শুক্রবার বিকেলে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে পুরো ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে বিষ খায় ওই যুবক।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাঁকে সবং গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রবিবার দুপুর নাগাদ নীলোৎপলের মৃত্যু হয়। ফেসবুকে পোস্ট করা সুইসাইড নোটে নীলোৎপল তাঁর মৃত্যুর জন্য স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের দায়ী করেছে। পরিবারের লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে সবং থানার পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।