কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: বিজেপি নেত্রী সোনালি ফোগাটের শরীরে ভোঁতা কিছু জিনিস দিয়ে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এমন আঘাতের কথা উল্লেখ রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে, আঘাতের ধরন নিয়ে পুলিশ মুখ খুলতে চায়নি। পুলিশ ইতিমধ্যেই হরিয়ানার বিজেপি নেত্রী তথা অভিনেত্রী সোনালির দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে। টিকটক খ্যাত সোনালির ব্যক্তিগত সহকারী সুধীর সাঙ্গোয়াঁ এবং অভিনেত্রীর গোয়া সফরের এক সঙ্গী সুখবিন্দর ওয়াসিকে আঞ্জুনা থানার পুলিশ গ্রেফতার করে।
প্রথমে হার্ট অ্যাটাকে সোনালির মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁর সঙ্গীরা জানালেও রিয়্যালিটি শোয়ে অংশগ্রহণকারী অভিনেত্রীর ভাই রিঙ্কু ঢাকা গোয়া পুলিশের কাছে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি এই দুজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছিলেন। ভাইয়ের অভিযোগ, গত ২৩ অগাস্ট মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও সোনালি তাঁর মা, বোন ও জামাইবাবুর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সোনালির ব্যক্তিগত সহকারী তাঁর খাবারে মাদক মিশিয়ে ধর্ষণ করেছে বলে রিঙ্কুর অভিযোগ। এমনকী সোনালির গোয়া যাওয়ার কোনও কথাই ছিল না, পূর্ব পরিকল্পনা করে তাঁকে গোয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তাঁর আরও অভিযোগ, ওখানে কোনও ছবির শ্যুটিং হয়নি। দুদিনের জন্য হোটেলে দুটি ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। এই অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে পুলিশ সোনালির দুই সঙ্গীকে থানায় ডেকে পাঠায় এবং পরে তাদের গ্রেফতার করে। রিঙ্কুর অভিযোগ, এই দুজনের একজন তিন বছর আগেও সোনালির খাবারে মাদক মিশিয়ে তাঁকে আচ্ছন্ন করে যৌন নিগ্রহ করেছিল। তা নিয়ে সোনালিকে ব্ল্যাকমেলও করেছিল ওই অভিযুক্ত।
আরও পড়ুন: বিজেপির শীর্ষ নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা
২০১৯ সালে হরিয়ানা বিধানসভা ভোটে আদমপুর কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়ে হেরেছিলেন সোনালি। ২০০৮ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়ে তিনি দলের মহিলা মোর্চার জাতীয় সহ সভানেত্রী হন। এছাড়াও হরিয়ানা, দিল্লি ও চণ্ডীগড়ের আদিবাসী সংগঠনের নেত্রী করা হয় তাঁকে। হিসারের একটি ছোট্ট গ্রামে এক কৃষক পরিবারে জন্ম সোনালির।
হিসার দূরদর্শনে প্রথম মুখ দেখা যায় সোনালির। তারপর রাতারাতি তিনি বিখ্যাত হন টিকটক তারকা হিসেবে। এরপর বিখ্যাত বিগবস রিয়্যালিটি টিভি শোয়ের ১৪-তম সিজনে দেশজুড়ে নাম করেন সোনালি। শুধু তারকা হিসেবেই নয়, একের পর এক ঘটনায় খুব তাড়াতাড়ি তিনি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছন। ২০০৬ সালে টিভি সঞ্চালিকার কাজে ঢোকার কয়েক বছরের মধ্যে তা ছেড়ে দিয়ে তিনি অভিনয় জগতে আসেন। হরিয়ানা ছেড়ে চলে আসেন মুম্বইয়ে। সেই সময়ই তাঁর স্বামীর রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়। হিসারের একটি খামারবাড়িতে তাঁর স্বামীর মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। কাকতালীয় হলেও তাঁর স্বামীরও মৃত্যু হয়েছিল ৪২ বছর বয়সেই।
সেই সময় বেশ কয়েকটি হরিয়ানি ছবি, টিভি সিরিয়াল, ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেন সোনালি। ২০১৯-এ তাঁকে বিজেপি সোনালিকে টিকিট দেয়। সেই নির্বাচনী প্রচারে এক সভায় সোনালি জনতাকে ভারত মাতা কি জয় ধ্বনি দিতে বলেন। এও বলেন, যে একথা বলবে না, বুঝতে হবে সে পাকিস্তানি। তাঁর এই কথায় বিতর্কের ঝড় উঠলে পরে ক্ষমা চেয়ে নেন সোনালি। এর ঠিক পরের বছরই তিনি ফের খবরের শিরোনামে আসেন বিগবস রিয়্যালিটি শোয়ে যোগ দিয়ে। ২০২০ সালেই এক সরকারি অফিসারের গালে চপ্পল দিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই ছবিও ভাইরাল হয় সোশাল মিডিয়ায়।