কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির কয়েক ঘণ্টার তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে যুদ্ধের আবহ দেখা দিয়েছে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে। বৃহস্পতিবার আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি এক বিবৃতিতে আর্জি জানানোর সুরে বলেছে, পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধতে পারে যে কোনও সময়। তাই সবপক্ষকে সংযত ও ধৈর্যের সঙ্গে পদক্ষেপ করতে আবেদন জানিয়েছে তারা।
স্বাধীন তাইওয়ানকে চীনের অবিচ্ছিন্ন এলাকা বলে মনে করে বেজিং। তাই তারা আগে থেকেই সাবধান করেছিল আমেরিকাকে। কিন্তু, সেই হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে পেলোসির সফরে চীন যারপরনাই ক্ষুব্ধ। তাইওয়ানকে ঘিরে তারা যুদ্ধের মহড়া শুরু করতে চলেছে। এই অবস্থায় থরহরিকম্প দেখা দিয়েছে আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে। কারণ, চীন যদি তাইওয়ানে হামলা চালায়, তাহলে যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। সেই যুদ্ধে আমেরিকা তাইওয়ানের পক্ষ নিলে গোটা এলাকায় তীব্র হানাহানি শুরু হবে। যে কারণে ভয় পাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া, তাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, লাওস, ব্রুনেই, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া ও মায়ানমারের মতো আসিয়ানভুক্ত দেশগুলি।
আরও পড়ুন: Justice UU Lalit: সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিত?
কম্বোডিয়ার সভাপতিত্বে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের এক বৈঠকে এ বিষয়ে প্রস্তাব গৃহীত হয়। তারপরই আসিয়ান এক বিবৃতিতে জানায়, পরিস্থিতি ভুল বোঝাবুঝি, ভয়াবহ সংঘর্ষ, সরাসরি যুদ্ধ এবং মহাশক্তিধর দেশগুলির ক্ষমতা প্রদর্শনের ফলে এমন দিকে এগোচ্ছে, যার ফলশ্রুতিও আঁচ করা অসম্ভব। এদিনই চীনের যুদ্ধ মহড়া শুরু হওয়ার কথা তাইওয়ানকে ঘিরে। শুধু আসিয়ান নয়, বৈঠক উপলক্ষে কম্বোডিয়ায় গিয়েছেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিদেশ সংক্রান্ত প্রধান জোসেফ বোরেল ও ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বোরেলও চীনের ভূমিকার কড়া নিন্দা করেছেন। কম্বোডিয়ার উপ বিদেশমন্ত্রী কুং ফোয়াক, যিনি আসিয়ানের মুখপাত্রও বটে, তিনি বলেন, আমরা আশা করি উত্তেজনার পারদ নামবে। তাইওয়ানকে ঘিরে ফের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।
যদিও আসিয়ান দেশগুলিও চীন নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। বেশ কয়েকটি দেশ চীনপন্থী হওয়ায় এই বিবৃতির ফল কী হবে তা বলা মুশকিল। কারণ, আসিয়ানের কোনও দেশই এখনও স্বাধীন তাইওয়ানকে রাজনৈতিক স্বীকৃতি দেয়নি। এমনকী তাইপে-কে কোনওভাবেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি, কমিউনিস্ট দৈত্যের ভয়ে।