দু বছর পর মোহনবাগান দিবস হল। প্রাণ প্রাচুর্যে ভরা, আবেগের লাভা স্রোতে ভেসে গেল মোহনবাগান দিবসের সান্ধ্য অনুষ্ঠান। তবে দৃষ্টিকটু লেগেছে মঞ্চের মধ্যে তৃণমূল মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদদের দাপাদাপি। কদিন আগে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে যে শৃঙ্খলা ছিল এদিন তা ছিল উধাও। শ্যাম থাপা যখন মোহনবাগানরত্ন পুরস্কার নিলেন অরূপ বিশ্বাসের হাত থেকে তখন মঞ্চে অন্তত পঞ্চাশজন লোক। যেন অষ্টমী পুজোর ভিড়। মোহনবাগান ক্লাবের বচ্ছরকার এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ রায়, অরূপ বিশ্বাস, শশী পাঁজা, তাপস রায়, এবং সাংসদ শান্তনু সেন। ক্লাব সভাপতি টুটু বসু থাকায় অনুষ্ঠানের মর্যাদা বেড়ে যায়। ছিলেন তাঁর কণিষ্ঠ পুত্র সৌমিক বসু। তবে প্রাক্তন সচিন সৃঞ্জয় বসু ছিলেন না।
দুপুর দেড়টায় ময়দানে গোষ্ঠ পালের মূর্তিতে মাল্যদান করে শুর হয় মোহনবাগান দিবস । এর পর মোহনবাগান মাঠে প্রীতি ম্যাচে অংশ নেন প্রাক্তন সবুজ মেরুন তারকারা। সন্ধ্যায় পৌষালী ব্যানার্জির সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এর পর একের পর এক পুরস্কার দেওয়া। জীবনকৃতি পুরস্কার পেলেন বলাই দে। তাঁকে স্মারকের সঙ্গে দেওয়া হল পঞ্চাশ হাজার টাকা। সেরা ক্রিকেটারের অরুণ লাল পুরস্কার পেলেন প্রিনান দত্ত। তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন অরুণ লাল স্বয়ং এবং অভিষেক ডালমিয়া। সেরা ফুটবলার হলেন লিস্টন কোলাসো। তাঁকে দেওয়া হল শিবদাস ভাদুড়ি ট্রফি। আর সেরা নবীন ফুটবলার হলেন কিয়ান নাসিরি। তিনি পেলেন সুভাষ ভৌমিক ট্রফি। মতি নন্দী পুরস্কার প্রাপক সাংবাদিক অশোক দাশগুপ্ত অসুস্থ। তিনি চিঠি লিখে তাঁর অপারগতার কথা জানিয়েছেন। পরে তাঁর বাড়িতে পুরস্কার পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আর সেরা অ্যাথলিটের পুরস্কার পেয়েছেন বাপী শেখ।
তবে মোহনবাগান দিবসের সেরা আকর্ষণ হচ্ছে মোহনবাগানরত্ন পুরস্কার। পেলেন শ্যাম থাপা। তাঁর গলায় পরানো হল রুপোর পদক । দেওয়া হল এক লক্ষ টাকা। দৃশ্যত আপ্লুত শ্যাম বললেন, “এই পুরস্কারটার জন্য আমি বহুদিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম। আজ পেলাম। আমার আনন্দ প্রকাশ করতে পারছি না।” মঞ্চে তখন তাঁর পাশে সচিব দেবাশিস দত্ত, অরূপ বিশ্বাস এবং সহসচিব সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। চন্দ্রবিন্দুর গান দিয়ে শেষ হয় এদিনের সান্ধ্য মজলিস। চন্দ্রবিন্দুর সঙ্গে গান গাইবার জন্য মঞ্চে ছিলেন পটা।