নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সব মামলাতে বুধবার জামিন পেয়েছেন মহম্মদ জুবের৷ এদিনই সন্ধে ৬টার মধ্যে তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত৷ চার বছর আগের একটি টুইটের প্রেক্ষিতে গত ২৭ জুন গ্রেফতার হন অল্ট নিউজের সহ প্রতিষ্ঠাতা৷ এদিন উত্তরপ্রদেশ সরকারের আইনজীবী গরিমা প্রসাদ আদালতের কাছে দাবি করেন, জুবের কোনও সাংবাদিকই নন৷ তিনি টাকার বিনিময়ে উস্কানিমূলক টুইট করেন৷ তাই জুবেরকে ভবিষ্যতে টুইট করা থেকে বিরত করার নির্দেশ দিক আদালত৷ যদিও সেই দাবি সুপ্রিম কোর্টে ধোপে টেকেনি৷ আদালত সাফ জানিয়ে দেয়, জুবেরের মতপ্রকাশে আদালত কখনওই হস্তক্ষেপ করতে পারে না৷ বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, ‘আমরা তাঁকে টুইট করা বন্ধ করতে বলতে পারি না৷ তাঁর মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারি না৷ তিনি দেশের নিয়মকানুনের কাছে দায়বদ্ধ৷ তথ্যপ্রমাণ সবার সামনে রয়েছে৷ তাই আমরা বলতে পারি না যে তিনি আর টুইট করতে পারবেন না৷’
একটি মামলাতে আগেই সুপ্রিম কোর্টে জামিন পেয়েছিলেন জুবের৷ আজ উত্তরপ্রদেশের থানাগুলিতে দায়ের করা প্রত্যেকটি এফআইআরে জামিন পেলেন তিনি৷ শুধু তাই নয়, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, একই কারণে ফের তাঁর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের হলে তাঁকে জামিন দিতে হবে৷ সেই সঙ্গে আদালত উত্তরপ্রদেশ থেকে সমস্ত এফআইআর সরিয়ে দিল্লিতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়৷ উত্তরপ্রদেশ পুলিসের তৈরি সিট ভেঙে দিয়ে আদালত দিল্লি পুলিসের স্পেশাল সেলকে ওই অভিযোগগুলি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে৷
এদিন শুনানির সময় উত্তরপ্রদেশ সরকারের আইনজীবী গরিমা প্রসাদ দাবি করেন, জুবের তথ্য যাচাইয়ের নামে সোশাল মিডিয়ায় বিদ্বেষ ছড়ান৷ তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত আদপে সাংবাদিকই নন৷ তিনি নিজেকে ফ্যাক্ট চেকার (তথ্য যাচাইকারী) বলেন৷ কিন্তু তথ্য যাচাইয়ের নামে তিনি টুইট পোস্ট করেন৷ যেগুলি ভাইরাল হয় এবং বিষ ছড়ায়৷ ওই সমস্ত টুইটের জন্য তাঁকে টাকা দেওয়া হয়৷ টুইট যত ক্ষতিকর হয়, টাকার পরিমাণ ততই বাড়ে৷’ পুলিসের জেরায় নাকি জুবের স্বীকার করে নিয়েছেন, এক টুইটের জন্য তিনি ১২ লাখ টাকা নিয়েছেন৷ আবার অন্য আর এক টুইটের জন্য ২ কোটি টাকা পর্যন্তও নিয়েছেন বলেও আদালতকে জানিয়েছেন গরিমা৷ সাম্প্রদায়িক অশান্তি হতে পারে এমন ভিডিয়ো এবং ভাষণগুলি জুবের টুইট করে৷ তারপর উস্কানিমূলক কিছু লিখে দেশে হিংসার বাতাবরণ তৈরি করে৷
তবে সরকারি আইনজীবীর দাবিকে খণ্ডন করেন জুবেরের আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার৷ তিনি বলেন, জুবেরের টুইটগুলি দেখলেই বোঝা যাবে তিনি ভুয়ো খবর চিহ্নিত করে পুলিসকে ট্যাগ করেন৷ এই ঘটনায় জুবেরের জীবন সংশয় দেখা গিয়েছে বলে আদালতকে জানান তাঁর আইনজীবী৷