জলদাপাড়া: রাজকীয় মেজাজেই চলে গেল রাজা। বন্দিদশাতেই মৃত্যু হল পৃথিবীর সবচেয়ে বৃদ্ধ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। ২০০৬ সাল থেকে তার ঠাঁই হয়েছিল জলদাপাড়া বনবিভাগের দক্ষিণ খয়েরবাড়ির রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার পুনর্বাসন কেন্দ্রে। তার আগে সুন্দরবনের মাতলা নদী পেরতে গিয়ে রাজার পেছনের বাঁ পা খুবলে নিয়েছিল কুমির। ওই পা হারানো বাঘকে আর বন্য পরিবেশে ফেরানোর ঝুঁকি নেয়নি বন দফতর।
রবিবার রাত ২টোয় মৃত্যু হয় রাজার। বয়স হয়েছিল ২৬ বছর ১০ মাস ১৮ দিন। আগামী ২৩ অগস্ট রাজার ২৭-তম জন্মদিন পালনের প্রস্তুতি শুরু করেছিল বন দফতর। ফলে রাজাকে হারিয়ে আরও জৌলুস হারাল দক্ষিণ খয়েরবাড়ি। রাজাকে শেষ বিদায় জানাতে দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে হাজির আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা ও জলদাপাড়া বন বিভাগের ডিএফও দীপক এম। ফুলমালায় শেষ বিদায় জানানো হল রাজাকে। ময়নাতদন্তের পর রাজার দেহ পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতরের।
১১ বছর বয়সে রাজাকে সুন্দরবন থেকে দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছিল। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের তৎকালীন বন্যপ্রাণী চিকিৎসক প্রলয় মণ্ডল ও ‘বাঘমামা’ নামে পরিচিত বনকর্মী পার্থসারথি সিনহার আপ্রাণ চেষ্টায় ও যত্নআত্তিতে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছিল রাজা। তারপর থেকে তারই আকর্ষণে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা বারবার ছুটে আসতেন দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে। সোমবার থেকে সেই অধ্যায়ে যবনিকা পড়ল। রাজার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পার্থসারথি সিনহা বলেন, সন্তানশোক অনুভব করছি। আজ আর কথা বলতে পারছি না।
রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সাধারণত গড়পরতা ২৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে। সেই হিসেবে রাজা বেশ বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। বন দফতরের দাবি অনুযায়ী, রাজাই পৃথিবীর সব থেকে বয়স্ক বাঘ। তার মৃত্যুতে পুনর্বাসন কেন্দ্রের সকল কর্মচারীদের মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।