কলকাতা: তপন দত্ত খুনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য। বালির তৃণমূল নেতা তপন দত্ত খুনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। মূল অভিযুক্ত ষষ্ঠী গায়েনও প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেন। সোমবার হাইকোর্ট বলে, তপন দত্ত খুনে সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে রাজ্যের আবেদন এজলাসেই পৌঁছয়নি।
হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ জুলাই। এর পরই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। রাজ্য সরকারের আইনজীবী বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালার অবকাশকালীন বেঞ্চে আবেদন জানান। জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি তালিকাভুক্ত করতে রাজি হয়েছে বেঞ্চ। ৪ বা ৫ জুলাই মামলাটি শুনতে পারে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালার বেঞ্চ।
২০১১ সালে ৬ মে খুন হন তপন দত্ত। সেই সময় তপন দত্ত এলাকায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতা ছিলেন। বালির নিশ্চিন্দা এলাকায় একটি বিশাল জলাভূমি ছিল। সেই জলাভূমির প্রতি নজর ছিল স্থানীয় প্রোমোটারি চক্রের। তৃণমূল তখন সবেমাত্র ক্ষমতায় এসেছে। এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দলের কর্মীরা। এই অবস্থায় ওই জলা ভরাট নিয়ে দলের ভিতরে আপত্তি তুলে কাজে বাধা দেন তপন। আর এতেই জেলার এক দাপুটে নেতা তথা বিধায়ক-মন্ত্রীর বিরাগভাজন হন তিনি।
আরও পড়ুন: Sharad Pawar ED: নির্বাচনী হলফনামায় ‘গরমিল’, শরদ পাওয়ারকে নোটিস পাঠাল আয়কর দফতর
খুনের দিন রাতে বাড়ি ফিরছিলেন তপন দত্ত। সেখানে রেলগেটের কাছে তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়। তার পর থেকেই এই ঘটনার প্রকৃত তদন্ত ও সিবিআইয়ের দাবিতে দীর্ঘ ১১ বছর লড়াই চালিয়ে এসেছেন তাঁর স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ায় তিনি জানিয়েছিলেন, এবার আশা করি দোষীরা শাস্তি পাবে। তপন দত্ত খুনের পর রাজ্যজুড়ে হইচই পড়ায় সিআইডি তদন্তভার নেয়।
প্রথম দফায় অভিযুক্তদের নামে যে চার্জশিট দেওয়া হয়, তাতে হাওড়ার এক মন্ত্রীর নাম ছিল। তার পরেই সাপ্লিমেন্টারি একটি চার্জশিট জমা পড়ে আদালতে। আশ্চর্যজনক ভাবে সেখান থেকে ওই মন্ত্রীর নাম উধাও হয়। প্রতিমাদেবী হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান এবং মামলা চালিয়ে যেতে থাকেন। সেই সময় বেশ কয়েকবার ফোনে এবং রাস্তায় প্রতিমাদেবী এবং তাঁর মেয়েদের হুমকি দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও এতোটুকু দমেননি প্রতিমা দত্ত।