ঝালদা: পুরুলিয়ার ঝালদায় তপন কান্দু খুনের ঘটনায় পারিবারিক বিবাদকেই দায়ী করল সিবিআই। আদালতে পেশ করা প্রথম চার্জশিটে সে কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। সিবিআই তদন্তের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই জেলার পুলিস সুপারও একই কথা জানিয়েছিলেন। গত ১৩ জুন এই মামলার প্রথম চার্জশিট জমা করে সিবিআই।চার্জশিটে ধৃত ৫ অভিযুক্তকেই ষড়যন্ত্রী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শুক্রবার অভিযুক্তদের হাতে চার্জশিটের কপি তুলে দেওয়া হয়।তবে, মূল অভিযুক্ত ২ শুটারকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি সিবিআই। আদালতে তারা জানিয়েছে ওই দু’জনকে খোঁজা হচ্ছে।
১৩ মার্চ সন্ধেয় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর। বিকেলে হাঁটার সময় ঝালদা-বাগমুন্ডি রোডের উপরে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। গোকুলনগর গ্রামের কাছে উল্টো দিক থেকে আসা একটি বাইকে আসা ৩ জন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য গুলি করে। তাঁর পেটে গুলি লাগে। রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তপন। এরপর দুষ্কৃতীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়।
প্রথমে ঝালদা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঝাড়খণ্ডের রাঁচির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তপনবাবুর মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষ ও স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা এই খুনের ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ করেন। ঝালদা থানা প্রতক্ষ্যদর্শীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা শুরু করে। পরিবারের তরফে আইসি সঞ্জীব ঘোষ-সহ তপনের দাদা নরেন কান্দু, ভাইপো দীপক কান্দু-সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। যদিও এই ঘটনায় রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা না রেখে প্রথম থেকে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে এসেছে নিহতের পরিবার। শেষ পর্যন্ত সিবিআই তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে যায় তপন কান্দুর পরিবার। হাইকোর্ট ৪ এপ্রিল সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন- Howrah BJP: সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ! গ্রেফতার বিজেপি নেতা
সিবিআই ৬ তারিখ নিজেদের হাতে মামলা নেয় । সিটের হাতে গ্রেফতার হওয়া ৪ অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নেয় তারা।তারপর সত্যবান প্রামাণিক নামে মাত্র একজনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু যে দুই মূল শুটারের বিরুদ্ধে গুলি করার অভিযোগ রয়েছে তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি সিবিআই। এই খুনের ঘটনায় আইসির কোনও যোগাযোগের উল্লেখ নেই। এমনকি পরিবারের তরফে যে রাজনৈতিক নেতাদের কথা বলা হয়েছিল তাঁদের নামও নেই ওই চার্জশিটে। তবে, পুরভোট নিয়ে যে ৫ লক্ষ টাকার বাজি ধরা হয়েছিল এবং খুন করার জন্য ৭ লক্ষ টাকার সুপারি দেওয়া হয়েছিল, তা রয়েছে চার্জশিটে। যদিও অভিযুক্ত দীপক কান্দুর আইনজীবী এই তদন্তে খুশি নন। তাঁর দাবি, চার্জশিট দেখে মনে হচ্ছে কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে।