কলকাতা: ভূ-স্বর্গ কাশ্মীরে গিয়ে হেনস্তার শিকার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অভিযোগ করলেন কাটমানি নেওয়ারও। একটি মামলা চলাকালীন ভরা এজলাসে কাশ্মীর ভ্রমণের ভয়ঙ্কর কাহিনী শোনান তিনি। বলেন, কীভাবে তাঁকে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়ে পদে পদে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। কাশ্মীরের এই অভিজ্ঞতার পর সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতিকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
কী কী অভিযোগ করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়?
বিচারপতি গরমের ছুটিতে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, দ্রাস এবং সোনমার্গ থেকে সমস্যা শুরু হয়। বিচারপতিদের যে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় কাশ্মীর প্রশাসনের তরফ থেকে তা কিছুই পাননি তিনি। এমনকি তাঁকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দিয়েও মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রত্যাহার করে নেয় সোনমার্গ পুলিস। ফলে, স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে প্রাণ হাতে করে তাঁকে হোটেলে ফিরতে হয়।
বিচারপতি জানান, সাধারণত রাস্তা চিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে কোনও বিচারপতির কনভয়ে জেলা বিচারক এবং পুলিস থাকে। কিন্তু তাঁকে এই বিষয়ে কোনও সাহায্য করা হয়নি। পুলিস ডাকা হলেও আসেনি। বরং এই বিষয়ে কথা বলতে গেলে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ থানার বাইরে বসিয়ে রাখা হয়। এমনকি তিনি সেখানকার পুলিসকে মিথ্যেবাদীও বলেন।
বিচারপতির আরও অভিযোগ, সোনমার্গে হোটেল বুকিং করার নামে কাটমানি নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে তাঁর থেকে। আর তাঁর এই অভিযোগ, খোদ জম্মু – কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রোটোকল অফিসারদের বিরুদ্ধে। তিনি জানান, সরকারি হোটেল থাকা সত্ত্বেও তাঁকে না জানিয়েই থাকার জন্য ১৩০০০ টাকায় (প্রতিরাত) অতি নিম্নমানের হোটেল বুক করা হয়। এমনকি বিচারপতিকে ‘ জাহান্নামে যান ‘ এই ধরনের মন্তব্যও করেছেন জম্মু – কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রোটোকল অফিসার।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের আরও জানান, কার্গিল ওয়ার মেমোরিয়াল দেখার সময় সেনার আধিকারিকরা ব্যাখ্যা করেছিলেন কিভাবে বিভিন্ন অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল ভারতীয় সেনা। এছাড়াও টাইগার হিল , তুরতুক সহ এই সব অঞ্চল পাকিস্তানের ছিল বলে উল্লেখ করেন এক পুলিস আধিকারিক। যা ভারতীয় সেনা জোর করে দখল করেছে। পাকিস্তান আর পুনরায় দখল করার চেষ্টা করেনি। বিচারপতির কথায় যা অত্যন্তই দেশবিরোধী মনোভাব।
বিচারপতির আরও অভিযোগ, কার্গিল থেকে সোনমার্গে ফেরার পথেও বড়সড় দুর্ঘটনার মুখে পড়েন তিনি। তাঁকে পাইলট কার দেওয়া হয়নি। যদিও বিচারপতি জানান লেহ, লাদাখ অঞ্চলে বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।