Placeholder canvas
কলকাতা মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: প্রতিষ্ঠানের অপব্যবহার, দেশ চলেছে এক অরাজকতার দিকে
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২০ মে, ২০২২, ১০:৩০:০১ পিএম
  • / ৪৬০ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

বিশ্বাসঘাতক পড়েছেন? নারায়ণ সান্যালের উপন্যাস। দমবন্ধ করে পড়েছিলাম৷ ম্যানহাটন প্রজেক্ট, যা নাকি ছিল আসলে আমেরিকার পরমাণু বোমার পরীক্ষাগার৷ সেখানেই পরমাণু বোমা তৈরি হচ্ছিল৷ নিশ্ছিদ্র পাহাড়া ছিল৷ গোপনীয়তা চূড়ান্ত৷ জার্মানি থেকে বিজ্ঞানীরা পালিয়ে এসেছেন৷ ইন ফ্যাক্ট বিশ্বের নাম করা বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে তৈরি হচ্ছে পরমাণু বোমা৷ যা কিছুদিন আগেও কল্পনা ছিল, সেই দানব প্রাণ পাচ্ছে। ১৯৩৯ থেকে কাজ শুরু হয়েছিল৷ ১৯৪২ এ কানাডা, ব্রিটেন আর আমেরিকা মিলে এই প্রজেক্ট শুরু করল৷ আজকের দিনে খরচ ২২ বিলিয়ন ডলার৷ যদিও তখন মিত্র শক্তি মানে আমেরিকা, ব্রিটেন খুব সন্তর্পণে রাশিয়াকে এই প্রজেক্ট থেকে বাদ রেখেছিল৷ কিন্তু রাশিয়া টের পেয়ে যায়৷ জার্মানির বিজ্ঞানী কার্ল ফুকস তখন ব্রিটেনে আছেন৷ এই প্রজেক্টের অন্যতম, তিনি সঙ্গে হ্যারি গোল্ড, ডেভিড গ্রিনগ্লাস, জুলিয়াস রোজেনবার্গ, এথেল রোজেনবার্গ মিলে প্রজেক্টের গুরুত্বপূর্ণ ডিজাইন, ডকুমেন্টস পাঠিয়ে দিলেন সোভিয়েত বিজ্ঞানীদের কাছে৷ রোজেনবার্গ দম্পতির ফাঁসি হয়েছিল আমেরিকাতেই৷ হ্যারি গোল্ড, ডেভিড গ্রিনগ্লাসের জেল হয় ওই আমেরিকাতেই৷ কর্ল ফুকস অনেক পরে ধরা পড়েন৷ তিনি তখন ব্রিটেনে, তাঁরও জেল হয়। রোজেনবার্গ দম্পতি বা অন্যরাও জানিয়েছিলেন, পাওয়ার ব্যালেন্স, ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যই তাঁরা এই কাজ করেছেন৷ কেবল আমেরিকার কাছে এই ক্ষমতা থাকলে, সারা বিশ্ব শাসন করতো আমেরিকাই৷ সেই ক্ষমতার ভারসাম্য আনতেই, তাঁরা সমাজতান্ত্রিক রাশিয়াকে পরমাণু বোমার নকশা পাচার করেছিলেন৷

তাঁরা বিশ্বাসঘাতক নন, মানবতাবাদী, প্রকৃত মানুষ। আসলে একতরফা ক্ষমতা একধরণের স্বৈরাচারের জন্ম দেয়৷ দিতে বাধ্য হয়৷ একতরফা ক্ষমতা সামনের অত্যাচারিতকে বন্দুক ধরতে উসকানি দেয়৷ এক তরফা ক্ষমতার বলে যে স্বৈরাচারী নিপীড়ন শুরু হয়, তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠতে বাধ্য। আর সেই প্রতিরোধ নিয়ম নীতি মেনে গড়ে ওঠে না, ইতিহাস তাই বলে। উদাহরণ অনেক, অনেক আছে। মোগল সাম্রাজ্যের আক্রমণের প্রতিরোধেই মারাঠাদের উত্থান, যে নৃশংস আক্রমণ আর অত্যাচার মোগলরা চালাত, মারাঠারাও সে নৃশংসতা আয়ত্ত করেছিল৷ তারাও বন্দি নয়, মোগল ফৌজের পরাজিত সেনাদের কচুকাটা করে জলে ভাসিয়ে দিত৷ ব্রিটিশরা ১৮৫৭-র সিপাহী বিদ্রোহ দমন করার সময়, গ্রামকে গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে, হয় তো বা বিদ্রোহী, এই সন্দেহেও গাছের ডালে গলায় ফাঁসি লাগিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়া? লখনউ ক্যান্টনমেন্ট দখল করার সময়, ইংরেজ নারী শিশুরাও রেহাই পায়নি৷ কানপুরে আত্মসমর্পণ করার পরেও ইংরেজ সাহেবদের, তাদের স্ত্রী, শিশু সন্তানদের কচুকাটা হয়েছিল। এই প্রেক্ষিত থেকেই যায়৷ ক্রিয়া আর প্রতিক্রিয়ার খেলা চলতেই থাকে। আজ আমাদের দেশের শাসন ক্ষমতায় থাকা মানুষজন, বিশেষ করে মোদি প্রশাসন এই কথাগুলো ভুলে গিয়েছেন বা এই ইতিহাস পড়েননি।

সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে বলেই, তাঁদের হাতে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চালানোর অধিকার আছে, দেশের সুরক্ষার জন্য, দুর্নীতি দমনের জন্য তাঁদের হাতে সিবিআই আছে, ইডি আছে, ইনকাম ট্যাক্স আছে। এর আগেও প্রত্যেকটি সরকারের হাতে এই ক্ষমতা ছিল৷ তার অপব্যবহার হয়নি তাও নয়৷ হয়েছে৷ সিবিআইকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইনকাম ট্যাক্সের লোকজন দরজার কড়া নেড়েছে, কিছু কিছু ঘটনা সবার জানা৷ কিছু ঘটনা সবার চোখের আড়ালেই হয়েছে। কিন্তু মোদি জামানা? স্বৈরাচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গিয়েছে৷ প্রতিটা প্রতিষ্ঠানকে বাপের জমিদারির মতনই ব্যবহার করা হচ্ছে৷ নির্দিষ্ট কারণেই হচ্ছে, খুল্লম খুল্লা হচ্ছে, হয় বশ্যতা স্বীকার করো, হয় চুপ করে যাও, হয় ক্ষমা চেয়ে উলটো পথে হাঁটা লাগাও, নাহলে যা আছে অস্ত্র, তার প্রত্যেকটা ব্যবহার করা হবে তোমার বিরুদ্ধে৷ রাজনৈতিক নেতা হলে সিবিআই, ইডি, ইনকাম ট্যাক্স৷ পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ, যে অভিযোগ প্রমাণ হওয়া তো দুরস্থান, চার্জশিট আসার আগেই ধামাধরা মিডিয়ার কাছে চলে যাচ্ছে৷ নিউজ পেপার, টিভি চ্যানেলে চোর চোর চোর চোর, ধর ধর ধর ধর৷ এরপর রোজ সিবিআই দফতরে জেরা৷ পাবলিক বলবে দেখেছো? কত টাকা চুরি করেছে, শালাদের ফাঁসি হওয়া উচিত৷ এমন কী সেই নেতার দলের সমর্থকরাও বিভ্রান্ত৷ এত টাকা চুরি? আমরা আঁটি চুষছি? একবার সিবিআই ডাকবে, দুদিন পর ইডির রেড হবে, চার দিন পর ইনকাম ট্যাক্স আসবে৷ আর অপরিচিত ফোন নম্বর থেকে বলা হবে, মিটিয়ে নিন না, দলটা বদলে নিন, ব্যস, ঝামেলা চুকে যাবে।

ধরুন আমরা সবাই দেখেছি বাকিদের সঙ্গে, কাঁথির খোকাবাবুকেও ক্যাশ টাকা নিতে, ক্যামেরার সামনে দেখেছি, একই অভিযোগ আর যাদের বিরুদ্ধে, তাদের জেলে পোরা হচ্ছে, জেরা করা গচ্ছে, কাঁথির খোকাবাবু গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর যদি রাজনৈতিক নেতা না হন? যদি সমাজকর্মী, উকিল, কবি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক হন? এবং মোদি সরকারের বিরোধিতা করতে থাকেন, তাহলে? তাহলে তাঁরা আর্বান নকশাল, তাদের ওপরে ইউএপিএ দাও, দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনো৷ জেলে পুরে দাও, একটা কেসে জামিন পেলে, অন্য আর একটা কেসে জেল গেট থেকেই আবার গ্রেফতার করো, জেলে পচিয়ে মারো, উদাহরণ জেসুইট পাদ্রি স্ট্যান স্বামী৷ ৮০ বছরের বৃদ্ধ, নাকি দেশদ্রোহী, নাকি আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে জড়িত। এটাই গত সাড়ে সাত বছর ধরে চলছে, যারা এই ব্যবস্থাটা চালাচ্ছেন তাঁদের মাথায় নেই, আমাদের দেশে এক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আছে৷ রাজ্যগুলোর কাছেও কিছু এজেন্সি আছে, যতটাই কমজোরি হোক আছে, তার ব্যবহার শুরু হলে দেশ রসাতলে যাবে৷ তার ব্যবহার দেশকে ভাঙনের পথে ঠেলে দেবে৷ দেশের বিভিন্ন কোণে বিচ্ছিন্নতাবাদ জন্ম নেবে৷ এক অরাজকতার দিকে এগিয়ে যাবে দেশ৷ আমার স্বদেশ।

দুটো ঘটনার কথা বলি, প্রথমটা দিল্লি আর পঞ্জাবের। দিল্লিতে আপ তো অনেক বছরই আছে৷ কিন্তু তাদের হাতে পুলিশ ছিল না৷ সবে এল৷ পঞ্জাবে ক্ষতায় আসার পর পঞ্জাব পুলিশ এখন কেজরিওয়ালের হাতে৷ এর আগে অনেক সিবিআই আর ইডি আর ইনকাম ট্যাক্সের ঘা খেয়েছে আপের নেতারা, আপ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা৷ এবার আপের পালা৷ কেজরিওয়ালের নামে কিছু বলেছিল বিজেপি নেতা তাজিন্দর বগগা৷ ব্যস ১৫/২০ জন পঞ্জাব পুলিশ চলে এল দিল্লিতে৷ গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের আটকালো হরিয়ানার পুলিশ৷ হরিয়ানা বিজেপির ক্ষমতায়৷ পৌঁছে গেল দিল্লি পুলিস৷ মাথায় রাখুন দিল্লি পুলিস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে৷ বিজেপির পুলিস বনাম কেজরিওয়ালের পুলিস? ব্যাপারটা কি এই রকম? আজ টেকনিক্যাল কোনও ইস্যুতে পিছিয়ে গিয়েছে পঞ্জাব পুলিস৷ কাল আবার আসবে, আট ঘাট বেঁধেই আসবে। তার বদলে আবার সিবিআই হবে, ইডি যাবে, রাজ্য ভিজিলেন্স আছে, পুলিস আছে, তারাও বসে থাকবে না।

অন্য উদাহরণ আমাদের রাজ্যে, নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারির দফতরে রাজ্য পুলিসষ আহারে গভর্নর পর্যন্ত শঙ্কিত৷ আইনকে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ এনারাই রাজ্যের অন্যতম তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রোজ দিল্লিতে ডাকছেন, জেরা করার জন্য। তখন সেটা আইনের ব্যবহার নয়? মোদি সরকারের মাথায় নেই, অস্ত্র তো রাজ্য সরকারের হাতেও আছে৷ এ তো কেবল শুরুয়াত৷ এরপর তা প্রতিটি বিরোধী শাসিত রাজ্যে প্রয়োগ হতে থাকবে৷ এক অরাজক পরিস্থিতির দিকে, চলে যাবে আমার দেশ। রাজ্যে দুর্নীতি নেই? আছে, তা চিহ্নিত হোক, তা প্রমাণিত হোক, তার আগেই সেটা ইভেন্ট হয়ে যাচ্ছে, মিডিয়া ট্রায়াল শুরু হয়ে যাচ্ছে৷ যাচ্ছে বললে ভুল হবে৷ করানো হচ্ছে৷ শেষ পর্যন্ত হয়ে দাঁড়াচ্ছে এক পলিটিকাল ভেন্ডেটা৷ রাজনৈতিক আকচা আকচি। এ জিনিস বহুবার, বহুকাল ধরে একতরফা চলতে পারে না৷ প্রতিক্রিয়া জন্ম নিচ্ছে৷ এখনই সাবধান না হলে এই ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার খেলায়, দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মার খাবে। একটা কথাই কেবল ভাবুন না৷ হত্যা, আত্মহত্যা, আগুন থেকে বড় দুর্ঘটনা, দুর্নীতির যেকোনও অভিযোগ যদি সিবিআই ই তদন্ত করে, তাহলে রাজ্যের হাতে পুলিস প্রশাসন কি ঝিঙে পোস্ত রাঁধবে? এবং আদালত, নির্বাচিত সরকার, মানুষের সমর্থনে গড়ে ওঠা সরকারকে যদি এক ঠুঁটো জগন্নাথ মনে করে, তাহলে তো বিচারের আগেই বিচার হয়ে যাবে? সেটাই বা কতটা আইন সম্মত? সব মিলিয়ে ভাবতে হবে, বুঝতে হবে যে, এ এক পরিকল্পিত চক্রান্ত, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভেঙে ফেলার চক্রান্ত৷ আজ নয় আরএসএস তার গঠনের শুরু থেকেই এই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী, আজ তারাই শাসন ক্ষমতায়, তারা তাদের এজেন্ডা নিয়েই এগোচ্ছে, সেই চক্রান্তকে বুঝতে হবে, রুখতেই হবে।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
আগামিকাল মুর্শিদাবাদে সেলিমের পরীক্ষা, ১৩ মে বহরমপুরে অধীরের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
শাহের মুখে সন্দেশখালি আছে, নেই ভিডিও নিয়ে কোনও কথা
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
বেহাল সড়ক, প্রশাসনকে জানিয়েও হয়নি লাভ
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team