গোকুলম কেরালা–২ মহমেডান স্পোর্টিং–১
(রিশাদ, এমিল বেনী) (মার্কাস জোসেফ)
পর পর দুবার আই লিগ চ্যাম্পিয়ন কেউ হতে পারেনি। ২০০৭ থেকে শুরু হওয়া আই লিগে নতুন নজির সৃষ্টি করল গোকুলম কেরালা। শনিবার সন্ধ্যায় প্রায় চল্লিশ হাজার সাদা কালো সমর্থকদের হতাশার সাগরে নিমজ্জিত করে তার কলকাতা থেকে জিতে নিয়ে গেল আই লিগ। গত বারের পর এবার আবার। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য গোকুলমের দরকার ছিল শুধু একটা ড্র। কিন্তু তারা ড্রয়ের খেলা না খেলে শুরু থেকেই জেতার খেলা খেলতে থাকে। গোল শূণ্য প্রথমার্দ্ধের পর ৪৯ মিনিটে গোকুলমকে এগিয়ে দেন রিশাদ। কিন্তু সাত মিনিটের মধ্যে মহমেডান সমতা ফেরায়। বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় মহমেডান। মার্কাস জোসেফের ফ্রি কিক আজহারের গায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়। কিন্তু পাঁচ মিনিটের মধ্যে আবার গোল করে ফেলে গোকুলম। এবার লুকার বাড়ানো বল থেকে ডান দিক দিয়ে উঠে গোল করে আসেন এমিল বেনী।
এবারের আই লিগে তেরোটি দলকে দু ভাবে খেলানো হয়। সব ম্যাচই হয় কলকাতায় এবং ফুটবলাররা ছিলেন বায়ো বাবলে। প্রথমে তেরোটি দল একে অপরের সঙ্গে খেলে। বারোটি করে খেলার পর প্রথম সাত দল চলে যায় সুপার সেভেনে। আবার চটি করে ম্যাচ খেলে তারা। প্রথম লিগের পয়েন্টও থেকে যায় তাদের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত আঠারো ম্যাচ খেলে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল গোকুলম। আর আঠারো ম্যাচ খেলে ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে রানার্স হল মহমেডান। গোকুলম সতেরো নম্বর ম্যাচেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারত যদি শ্রীনিধি স্পোর্টিংয়ের সঙ্গে তারা ড্র করত। কিন্তু সেদিন তারা হেরে যায় ১-৩ গোলে। তাই শনিবারের ম্যাচটা ছিল আই লিগের ফাইনাল। সেই ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল গোকুলম। কদিন আগে সন্তোষ ট্রফিতে কেরালার মাটিতে কেরালা ফাইনালে টাই ব্রেকারে বাংলাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তার আগে আই এস এল-এ ফাইনালে উঠৈও কেরালা ব্লাস্টার্স হেরে গিয়েছিল হায়দরাবাদ এফ সি-র কাছে। এবার আই লিগে আবার চ্যাম্পিয়ন হল কেরালার দল। ভারতীয় ফুটবলে এখন কেরালা যুগ চলছে।
গোকুলমের ইতালিয়ান কোচ ভিসেন্তো আলবার্তো ম্যাচের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, ” আমরা ড্র করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামব না। আমরা জেতার লক্ষ্য নিয়ে নামব।” সেই কথাই অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে তাঁর ফুটবলাররা। সারা ম্যাচে শুধু বল পজেশনেই নয়, গোকুলম গোল করার সুযোগও অনেক বেশি পেয়েছে। সারাক্ষণ দর্শকদের চিৎকার উপেক্ষা করে তারা জিতল যিগ্য দল হিসেবেই। মহমেডান এদিন নিজেদের খেলা খেলতে পারেনি। সারাক্ষণ স্নায়ুর চাপে ভুগেছে। আসলে নিজেদের সমর্থকদের সামনে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হতে গিয়ে তারা খেই হারিয়ে ফেলে। সব মিলিয়ে গোকুলমের জয় তাই যোগ্য দলেরই জয়। তবে তাদের কাজ এখনও শেষ হয়নি। এর পরেই রয়েছে এ এফ সি কাপের গ্রুপ লিগের খেলা। তাদের প্রথম ম্যাচ ১৮ মে মোহনবাগানের সঙ্গে সল্ট লেক স্টেডিয়ামেই। তার পর খেলতে হবে বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংস এবং মালদ্বীপের মেজিয়া এফ সি-র সঙ্গে। গোকুলমের ফুটবলারদের আপাতত তাই কোনও বিশ্রাম নেই। চার দিনের মধ্যেই তাদের আবার মাঠে নামতে হবে।