বহরমপুর: বহরমপুর কলেজ ছাত্রী খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে পুনর্নির্মাণ করল বহরমপুর থানার পুলিস। বৃহস্পতিবার ধৃত সুশান্তকে সুতপার মেসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সুশান্ত কীভাবে এসেছিল, কেমন করে সুতপাকে কুপিয়েছে, খুনের পর কোন পথে সে পালিয়েছিল, সমস্ত ঘটনা পুনর্নির্মাণ করানো হয় তাকে দিয়ে।
সোমবার ভরসন্ধেয় বহরমপুরের গোরাবাজারে মেসের সামনে নৃশংসভাবে খুন হন কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরী। এই ঘটনায় ওই রাতেই গ্রেফতার করা হয় মালদহের ইংরেজবাজারের সায়েন্সের ছাত্র সুশান্ত চৌধুরীকে। তদন্তকারীরা জানান, বুধবার রাতে পুলিসের জেরার মুখে সুশান্ত জানায়, সুতপাকে খুন করার দিন কয়েক আগেই শহরে পা রাখে সে। গোরাবাজারের কাছে একটি মেস ভাড়া নিয়েছিল সুশান্ত। মেস মালিক জানান, ১৮ এপ্রিল কোচিং সেন্টারে পড়ানোর নাম করে মেসটি ভাড়া নেয় সে। প্রথমে সুশান্ত জানায়, ৩ মাস ওই মেসে ভাড়া থাকবে। তবে প্রথম থেকেই কথায় অসঙ্গতি ছিল সুশান্তর। ২ মে হঠাৎ সুশান্ত জানায়, ওইদিনই বাড়ি ছেড়ে দেবে সে।
সেদিন সন্ধেবেলাতেই আসল কাজ সেরে ফেলে সুশান্ত। সুতপাকে খুনের জন্য তৈরি হয়েই বহরমপুরের ওই মেসে ঢুকেছিল। কাজ সারার পর আবার ওই মেসে ফিরে যায় সে। সেখানেই সুশান্ত বদলে নেয় সুতপার রক্তমাখা টি শার্টও। এরপর গাড়ি পাল্টে পাল্টে সে পালিয়ে যাওয়ার ছক কষে।
আরও পড়ুন: Public-Police Clash: ঝালদায় বিয়ে বাড়িতে সাউন্ড বক্স বাজানো ঘিরে ধুন্ধুমার, জনতা-পুলিস সংঘর্ষ
শুধু তাই নয়, সুশান্ত জেরায় জানিয়েছে, সুতপাকে প্রাণে মেরে ফেলা একেবারে নিশ্চিত করতে চেয়েছিল সে। খুনের আগে বহরমপুরের গোরাবাজারের ওই এলাকায় বারবার রেকি করার ফাঁকেই পালানোর বন্দোবস্ত করে রাখে ওই যুবক। পরিকল্পনা করে, কীভাবে মারবে, আর কোন রাস্তা দিয়ে পালাবে। সুতপার মেসের পাড়ার সামনের রাস্তা মোটামুটি ফাঁকাই থাকে। তা সে আগেই খেয়াল করেছিল।
পুলিসকে সুশান্ত আরও জানায়, সে আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল সুতপাকে খুন করে পাশের একটি বাড়ির পাঁচিল টপকে পালাবে। সেই পাঁচিলের উপর পেরেক পোঁতা ছিল। তাই আগেভাগেই সেই পেরেক বাঁকিয়েও রেখেছিল সে। খুন করার পর সেই পাঁচিল টপকেই পালিয়ে যায় সুশান্ত। তবে শেষরক্ষা হয়নি। পুলিসের নাকা চেকিংয়ে রাতের মধ্যেই ধরা পড়ে অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরি।
আরও পড়ুন: Berhampore murder case: নিখুঁত পরিকল্পনামাফিক সুতপাকে খুন, জেরায় জানাল সুশান্ত