মঙ্গলবার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় দফার সেমিফাইনালে স্পেনের ভিয়ারিয়াল নিজেদের মাঠে মুখোমুখি হবে লিভারপুলের। প্রথম দফায় লিভারপুল জিতেছিল ২-০ গোলে। তাই ফিরতি সেমিফাইনালে তারাই ফেভারিট হিসেবে শুরু করবে। তবে এবারের ম্যাচ ভিয়ারিয়ালের নিজের মাঠে। উনাই এমেরির টিম এই মাঠেই হারিয়ে দিয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখকে। নিজেদের মাঠে বায়ার্ন সেই হারের শোধ তুলতে পারেনি। তাই সেমিফাইনালে লিভারপুলের সামনে পড়েছে লা লিগার সাত নম্বর টিম ভিয়ারিয়াল।
এমনিতে দু দলের যা শক্তি তাতে লিভারপুলের ম্যাচ জিততে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। বিশেষ করে তাদের ফরোয়ার্ড লাইনের যা পেনিট্রেশন তাতে গোল পাওয়া খুব অসম্ভব নয়। মহম্মদ সালাহ, সাদিও মানে এবং রবের্তো ফিরমিনোর সম্মিলিত শক্তিকে সমীহ করে না কোন দল? তবে চোট থাকায় প্রথম দফায় আনফিল্ডে ফিরমিনো খেলতে পারেননি। তাঁকে দ্বিতীয় দফার ম্যাচে ফিট করে নামানোর চেষ্টা চলছে। ফিরমিনো যদি নামেন তাহলে লিভারপুলের শক্তি আরও বাড়বে। তবে মহম্মদ সালাহ এবং সাদিও মানের সঙ্গে আগের ম্যাচে নেমেছিলেন লুইস দিয়াজ। খুব খারাপ খেলেননি। তাই লিভারপুলের হাতে পরিবর্ত ফুটবলার আছে। পাশাপাশি বলতে হবে লিভারপুলের মিডফিল্ডও যথেষ্ট ভাল। জর্ডন হেন্ডারসন, ফাবিনহো এবং থিয়াগো আলকান্তরা মিলে লিভারপুলের মাঝ মাঠকে খুবই গতিসম্পন্ন এবং আক্রমণাত্মক করে তুলেছেন। এদের পাস থেকেই মহম্মদ সালাহ ম্যাচের পর ম্যাচে গোল করেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সালাহের গোল এখন ৩৩। আরও চারটি গোল করলে সালাহ টপকে যাবেন সের্জিও অগুয়েরো এবং দিদিয়র দ্রোগবাকে। দুজনেরই গোল সংখ্যা ৩৬। প্রথম দফার সেমিফাইনালে সালাহ গোল পাননি। দেখতে হবে ভিয়ারিয়ালের মাঠে তিনি গোল পান কি না।
ভিয়ারিয়ালের এক নম্বর স্ট্রাইকার জেরার্ড মোরেনো চোটের জন্য প্রথম দফার সেমিফাইনালে খেলতে পারেননি। তবে এখন তিনি ফিট। মঙ্গলবার মাঠে নামার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। তাঁর পাশে থাকবেন আর্নাউট ডানজুমা, যাঁর গোলে ভিয়ারিয়াল হারিয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখকে। এই দুজনকে রোখার দায়িত্বে থাকবেন লিভারপুলের ব্যাক ফোর। ট্রেন্ট আলেক্সজান্দার আর্নল্ড, ইব্রাহিম কোনাতে, ভির্জিল ফান ডিক এবং অ্যান্ডি রবার্টসন। লিভারপুলের এ বছরের সাফল্যের পিছনে এই ব্যাক ফোরের াবদান কম নয়। মোরেনো এবং ডানজুমাকে আটকাতে এই ব্যাক ফোরের উপরেই নির্ভর করতে চান লিভারপুল ম্যানেজার জুরগেন ক্লপ। তবে একটা জিনিস পরিষ্কার, দু গোলে এগিয়ে আছে বলে লিভারপুল ডিফেন্সিভ ফুটবল খেলবে এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। সেটা জানেন উনাই এমেরিও। বলেছেন, “প্রথমার্দ্ধটা তো আমাদের লিভারপুলের আক্রমণকে সামাল দিতে হবে। তারপর আক্রমণে যাওয়া। আমাদের কাজটা সহজ নয়।” তবে ভিয়ারিয়াল কিন্তু লড়াই ছাড়বে না। ক্লপও জানেন সেটা। বলেছেন, “আমাদের গোল তো করতেই হবে। কিন্তু ওরাও গোলের জন্য ঝাঁপাবে। তাই সতর্ক থাকতে হবে আমাদের।”
ক্লপের আমলে গত পাঁচ বছরে তিন বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার মুখে লিভারপুল। ২০১৮, ২০১৯-এর পর আবার এবার। দু গোলে এগিয়ে থাকা লিভারপুল ফাইনালের দিকে এক পা এগিয়েই রেখেছে। ভিয়ারিয়ালের পক্ষে তাদের আটকানো খুবই মুশকিল।