মেদিনীপুর: অচেনা জায়গা। আশপাশের লোকজনও অচেনা। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে ওডিশা থেকে ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিলেন বিহারের সুরজ। আচমকাই বিপত্তি। চলন্তে ট্রেনেই প্রসব করেন তাঁর স্ত্রী। চিকিৎসক খুঁজতে একটি স্টেশনে নামেন সুরজ। বিপদ যে ওত পেতে বসে থাকবে, তা বুঝতেও পারেননি এই যুবক। অজানা স্টেশন থেকেই ছিনতাই হয়ে যায় টাকা, মোবাইল সহ বেশ কিছু সামগ্রী। শেষে বাকি যাত্রীদের সহযোগিতায় রেলের থেকে যাবতীয় সাহায্য পান সুরজ।
মেদিনীপুর স্টেশনে ট্রেনটি আসার আগেই রেল পুলিস বিষয়টি জানতে পারে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ চিকিৎসকের সহায়তায় উদ্ধার করা হয় প্রসূতি ও সদ্যোজাতকে। অ্যাম্বুলেন্সে করে তড়িঘড়ি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। স্টেশনে উপস্থিত ডাক্তার টিকে ঘোড়ই জানান, প্রসূতি ঠিক থাকলেও সদ্যোজাত সন্তানের অক্সিজেনের অভাব ছিল। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়েছিল। আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ট্রেন দাঁড় করিয়ে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা সুরজ কুমার। কটকে ফুচকা বিক্রি করেন। পরিবারের ৫ সদস্যকে নিয়ে সেখানেই ভাড়া থাকেন। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পিংকিকে নিয়ে বিহারের বাড়িতে ফিরছিলেন। পুরী-জয়নগর এক্সপ্রেস কটক ছাড়ার পর পরই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় পিংকির। ট্রেনে কোনও চিকিৎসকের সহযোগিতা মেলেনি বলে অভিযোগ। শেষে ট্রেনের বাথরুমে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। চিকিৎসকের খোঁজে ট্রেন থেকে নেমে দুষ্কৃতীদের খপ্পড়ে পড়েন সুরজ। লুট হয়ে যায় টাকা, মোবাইল সহ বেশ কিছু সামগ্রী।
আরও পড়ুন: Medinipur Dacoity: মানবিক ডাকাত, জ্ঞান হারানো গৃহকর্তাকে জল দিয়ে সুস্থ করে তুলল, রেখে গেল মোবাইলও
সুরজ বলেন, চিকিৎসকের খোঁজে একটি স্টেশনে নেমেছিলাম। সেখান থেকেই দুষ্কৃতীরা মোবাইল-টাকা ছিনতাই করে নেয়। সহযাত্রীরা রেলের কর্মীদের বিষয়টি জানান। মেদিনীপুর স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছনোর আগে থেকেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স সহ চিকিৎসক তৈরি রেখেছিলেন। ট্রেন আসতেই মা-ছেলে পরীক্ষা করেন চিকিৎসক। সদ্যোজাত অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি পরামর্শ দেওয়া হয়। শেষে মা ও সদ্যোজাতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।