রিয়াল মাদ্রিদ–৩ চেলসি-১
(করিম বেঞ্জামা–হ্যাটট্রিক) (কাই হাভার্ৎজ)
গত বছর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চেলসির কাছে হেরেই বিদায় নিতে হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেই হারের মধুর প্রতিশোধ নিল তেরো বারের চ্যাম্পিয়নরা। বুধবার রাতে চেলসির ডেরা স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে গিয়ে তাদের বিশ্রিভাবে হারিয়ে দিয়ে এল কার্লোস আনসোলত্তির ছেলেরা। দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক করলেন দলের অধিনায়ক করিম বেঞ্জামা। ফরাসি তারকার হ্যাটট্রিকের পাশে টিমটিম করে জ্বলছে কাই হাভার্ৎজের একটা গোল। এই জার্মান যুবকের গোলেই গত বছর ম্যাঞ্চেস্টার সিটিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল চেলসি। এখন সে সব গল্প কথা।
করোনার জন্য টিমের সঙ্গে লন্ডন যেতে পারেননি রিয়াল কোচ আনসোলত্তি। রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর বুধবার সকালে তিনি লন্ডনে পৌছন। রাতে টিমের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ডাগ আউটে। তাঁর উপস্থিতিতে দলের ফুটবলারদের মনোবল যে অনেক বেড়ে যায় তা একুশ মিনিটের প্রথম গোলেই স্পষ্ট। রিয়াল জানত নিজেদের মাঠে খেলা। তাই শুরুর দিকে চেলসি একটা ঝটকা মারবেই। নিজেদের ডিফেন্সকে অটুট রেখে সেই ঝড়ঝাপটা সামলে একুশ মিনিটের মধ্যে এগিয়ে গেল রিয়াল। ব্রাজিলিয়ান ভিনিসিয়াস জুনিয়রের ক্রস থেকে চমৎকার হেড করে চেলসি গোলকিপার এডওয়ার্ড মেন্ডিকে হার মানান বেঞ্জামা। ৩৪ বছর ১০৮ দিন বয়স হয়ে গেল বেঞ্জামার। এখনও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো ইউরোপের সেরা টুর্নামেন্টে গোল করে টিমকে জেতাচ্ছেন। দুর্দান্ত ব্যাপার।
গ্যালারিতে উপস্থিত রিয়াল সমর্থকদের উল্লাস থিতিয়ে যাওয়ার আগে আবার গোল করে ফেলল রিয়াল। এবারও সেই বেঞ্জামা। তবে এবার মাপা পাস করেছিলেন লুকা মরদিচ। এবারও বেঞ্জামার হেডের কোনও জবাব দিতে পারেননি মেন্ডি। ২৪ মিনিটের এই গোলটির পরেই ধরে নেওয়া হয় দিনটা চেলসির নয়। রিয়ালের। তবু বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চেষ্টার কসুর করেনি। ৪০ মিনিটে জর্জিনহোর দর্শনীয় চিপে হেড করে গোল করেন জার্মান কাই হাভার্ৎজ। বিরতির সময় রিয়াল ২-১ গোলে এগিয়ে। বিরতির পর তারা কি ম্যাচে ফিরবে? এরকম একটা আশা যখন ঘুরপাক খাচ্ছে তাদের সমর্থকদের মধ্যে তখন বিরতির ঠিক পরেই ম্যাচের ফয়সালা করে দেন করিম বেঞ্জামা। এবার অবশ্য দোষটা গোলকিপার মেন্ডির। বল ধরার জন্য গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসে মিস করেন মেন্ডি। ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে ভুল করেননি বেঞ্জামা।
বিরতির পর চেলসির কোচ টমাস টুচেল দুটি পরিবর্তন করেন। আন্দ্রে ক্রিশ্চিয়ানসনের বদলে নামেন মাতিও কোভাশিচ। আর এনগোলো কান্তের বদলে নামানো হয় আকিম জিয়াচকে। ৬৪ মিনিটে ক্রিশ্চিয়ান পালুসিচকে বসিয়ে নামানো হয় রোমেলু লুকাকুকে। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। তবে মাঠে নামার কিছুক্ষণের মধ্যে গোলের দরজা প্রায় খুলে ফেলেছিলেন লুকাকু। কিন্তু তাঁর হেড থিওবা কুর্তোয়ার হাত এড়িয়ে পোস্টের বাইরে চলে যায়।
প্রথম লেগে ৩-১ গোলে এগিয়ে থাকায় সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের ওঠা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ১২ এপ্রিল নিজেদের মাঠ ক্রিশ্চিয়ানো বার্নেবু স্টেডিয়ামে আবার তারা মহড়া নেবে চেলসির। সেই ম্যাচে বিরাট কোনও অঘটন না ঘটলে রিয়ালেরই জেতার কথা।