কলম্বো, ৪ এপ্রিল : দেশ জোড়া প্রতিবাদ এবং চাপের মুখে পদত্যাগ করল শ্রীলঙ্কা সরকারের মন্ত্রিসভা ৷ রবিবার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর, নিজেদের পদত্যাগপত্র তাঁর কাছে জমা দিয়েছেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা ৷ পদত্যাগের পর এমনটাই জানিয়েছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্য দীনেশ গুণাবর্ধনে ৷ তিনি জানিয়েছেন, আজ অর্থাৎ, সোমবার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষ প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষের সঙ্গে দেখা করবেন ৷ সেখানেই বর্তমান সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৷
গুণাবর্ধনে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছি এবং আমাদের পদত্যাগপত্র তাঁর হাতে দিয়ে এসেছি ৷’’ তবে, মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করলেও রাষ্ট্রমন্ত্রীদের পদত্যাগের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি ৷ এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার যা পরিস্থিতি, তাতে বাড়তে থাকা গণ আন্দোলনের জেরে মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকারকে পদত্যাগের পরামর্শ দিয়েছে ক্ষমতাশীল সরকারের শরিক দলগুলি ৷ তার বদলে সর্বদলের তথা বিরোধী দলের সম্মতিতে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে শরিক দলগুলির তরফে ৷
রাষ্ট্রপতি রাজাপক্ষ শুক্রবার গভীর রাতে একটি বিশেষ গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি বলেন, “আমি মনে করি যে, শ্রীলঙ্কায় একটি পাবলিক জরুরি অবস্থার কারণে জননিরাপত্তার স্বার্থে জনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সম্প্রদায়ের জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও পরিষেবার রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে তা করা সমীচীন।” এরপর শনিবার রাজাপক্ষের নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কা সরকার ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করে। সরকারী আদেশ অনুযায়ী শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দ্বীপ দেশজুড়ে কারফিউ বলবৎ থাকবে।
এর আগে রবিবার, শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধী দল সামাগি জনা বালাওয়েগয়া (এসজেবি) এর আইনপ্রণেতারা দ্বীপ রাষ্ট্রের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রাষ্ট্রপতি রাজাপক্ষের বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ করেছেন। বিরোধী আইন প্রণেতারা শহরের প্রধান চত্বরের দিকে মিছিল করেন, স্লোগান দিতে থাকেন এবং প্ল্যাকার্ড বহন করেন যাতে লেখা ছিল: “দমন বন্ধ করুন” এবং “গোটা বাড়ি যান।”