কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকেই স্বাভাবিক হাওড়া শহরের জনজীবন| হাওড়া বাসস্ট্যান্ড, হাওড়া ব্রিজ ও হাওড়া স্টেশনে স্বাভাবিক ছিল যান চলাচল| ২ নম্বর জাতীয় সড়ক, বালি হল্টে অবরোধ করে বামপন্থী সমর্থকদের রাস্তায় ফুটবল খেলতে দেখা গেল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের কুশপুতুল দাহ করে বিক্ষোভ হয়। ঘটনাস্থলে নিশ্চিন্দা থানার বিশাল পুলিসবাহিনী গিয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়। প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখা হয় ২ নম্বর জাতীয় সড়ক ও বালি হল্ট।
অন্যদিকে, বারাসত কলোনিমোড়, ৩৪ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করল ডিওয়াইএফ। এখানেও প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল পোড়ায়। ধর্মঘট সফল না হলেও মঙ্গলবারও রাস্তায় বামেদের দেখা গেল। অবরোধের জেরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কিছু সময়ের জন্য যানজট তৈরি হয়।
মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা দ্বিতীয় দিনের ধর্মঘটেও কোনও প্রভাব পড়ল না। মঙ্গলবার সকাল থেকেই সরকারি ও বেসরকারি বাস, ট্রাক ও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ধর্মঘটের সমর্থনে বহরমপুর শহরে মিছিল বার করে বামফ্রন্ট। বহরমপুর বাসট্যান্ডে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে পুলিস বাধা দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই অবরোধ তুলে নিতে বাধ্য হয় সমর্থনকারীরা। ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বাঁকুড়ায় সাধারণ ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও গড়াল না বেসরকারি বাসের চাকা। মঙ্গলবার সকাল থেকে বাঁকুড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে একটিও বেসরকারি বাস কোনও রুটে বের হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই সরকারি ও অন্যান্য ছোট গাড়িই ভরসা নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ যাত্রীদের। ধর্মঘটের জেরে গনপরিবহণে প্রভাব পড়লেও, বাকি ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়েনি আজও। দোকান, হাটবাজার খোলা ছিল সর্বত্র।
আরও পড়ুন : Jadavpur University: অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে পড়ুয়াদের অবস্থান যাদবপুরে
এদিন সকাল থেকেই মেদিনীপুর শহরে ধর্মঘট সমর্থকদের জুলুমবাজি ছিল অনেকটা বেশি। সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি, বচসা বাধে। জোর করে বন্ধ করা হয় সরকারি বাসডিপোর কাউন্টার। সরকারি বাসের চাকার তলায় পাথর ঢুকিয়ে জোর করে নামতে বাধ্য করা হল যাত্রীদের। রাস্তায় ভাঙচুর হতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে সোমবার থেকেই কোনও বেসরকারি বাস মেদিনীপুর সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড থেকে বের হয়নি। প্রতিদিন যেখানে গড়ে ছ-শো বেসরকারি বাস পরিষেবা দিয়ে থাকে, সোমবার থেকে সেখানে কেউই রাস্তায় বের হয়নি। তবে সরকারি বাস পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে অন্য রকম সুর ধর্মঘট সমর্থক বাম কর্মীদের। সকাল থেকে মেদিনীপুর শহরের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের প্রবেশপথে লাল পতাকা হাতে বাম-কর্মী সমর্থকরা যাত্রীদের বাড়ি ফেরত যেতে বাধ্য করে। সরকারি বাসের কাউন্টার খোলা থাকায় জোর করে সকলকে বের করে বন্ধ করে দেয় ধর্মঘটীরা। চরম হয়রান হতে হয় যাত্রীদের। জরুরি প্রয়োজনে কেশপুর থেকে মোটা টাকা খরচ করে মারুতি ভাড়া করে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত পৌঁছেছিলেন একদল যাত্রী। তাঁদের জোর করে নামিয়ে ফেরত যেতে বাধ্য করেন ধর্মঘট সর্মথকরা।
আরও পড়ুন : Petrol-Diesel Price Hike: লাগাতার ঊর্ধ্বমুখী পেট্রোল-ডিজেলের দাম, দেখে নিন নতুন দাম
সকাল থেকেই মেদিনীপুর সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে ধর্মঘটীদের জুলুমবাজির অভিযোগে কোতোয়ালি থানার পুলিস যায়। রাস্তার উপর শুয়ে পড়ে সরকারি বাস আটকানোর চেষ্টা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিসের সঙ্গে ধর্মঘটীদের ধস্তাধস্তি হয়। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিস।
আরও পড়ুন : Will Smith: অস্কার মঞ্চে চড় বিতর্কে ক্ষমা চাইলেন স্মিথ
এদিকে, উত্তরবঙ্গে সকাল থেকে জলপাইগুড়ি শহরে আন্দোলনকারীরা ধর্মঘটের সমর্থনে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। কদমতলা এলাকায় একটি শপিং খোলা হয়েছিল। মল বন্ধ করাকে কেন্দ্র করে সাময়িক সময়ের জন্য ধর্মঘটীদের সঙ্গে বচসা হয়। এরপর ওই মলের বাইরে লাল ঝান্ডা লাগিয়ে মলটি বন্ধ করে দেয় আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে এদিন সকাল থেকে শহরের দোকানপাট খুব একটা খোলেনি। বেসরকারি বাস রাস্তায় দেখা যায়নি। তবে সরকারি বাসের পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল।