রামপুরহাট: স্ত্রীর মৃত্যুর খবরে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন সাজিনাবিবির স্বামী শেখলাল শেখ। এদিন তিনি বলেন, ডাক্তাররা যা বলেছিলেন, তাতে বুঝতে পেরেছিলাম আমার স্ত্রী আর বাঁচবে না। ও আমায় বলেছিল, আমার ছেলে-মেয়েকে দেখো। এরপরই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। বগটুইয়ে নিহত ভাদু শেখ ও তাঁর দলবলের উপর ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। বলেন, ভাদু ‘ক্রিমিনাল’ ছিল। বালি-কয়লার বেআইনি কারবার ছিল। তোলাবাজি করত। রাস্তাঘাটে পয়সা তুলত। ওর দলে ৪০-৭০ জন কাজ করত। আনারুল হোসেনও ছিল ওদের সঙ্গে। এর ভাগ পেতেন আনারুল, আইসি, এসডিপিও এবং অনুব্রত মণ্ডলও বলে অভিযোগ নাজিমার স্বামীর। তিনি বলেন, পুলিস ওদের কথায় চলত।
দুপুরে নাজিমাবিবির মৃত্যুর খবর তাঁর বাড়িতে আসতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মেয়ে সাজিনাবিবি। ঘরের মেঝে চাপড়ে তিনি চিৎকার করে খুনিদের ফাঁসির দাবি করেন। মায়ের মৃত্যুতে আত্মহারা সাজিনা বলেন, তাঁর মাকে যারা পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের যেন একটি ঘরে বন্ধ করে মারা হয়। আমি তাদের ফাঁসি চাই। সোমবার দুপুরে বগটুইকাণ্ডে জখম আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে রামপুরহাট হাসপাতালে। ৬০ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় ভর্তি থাকা নাজিমাবিবির (৩৫) মৃত্যু হয়। এনিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯।
আরও পড়ুন- Rampurhat Violence: লড়াই শেষ, রামপুরহাটে দগ্ধ আরও ১ মহিলার মৃত্যু
নাজিমার মৃত্যু প্রসঙ্গে রামপুরহাট হাসপাতালের অধ্যক্ষ করবী বড়াল বলেন, সব থেকে উন্নতমানের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। প্রথমে বর্ধমান থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা এসে দেখে গিয়েছিলেন। এছাড়াও কলকাতার এসএসকেএমের সিনিয়র ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী চলা হচ্ছিল। কিন্তু, রবিবার থেকে উনি মেডিক্যাল সাপোর্টগুলি নিতে পারছিলেন না। তিনি আরও জানান, দেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। অন্য জখমদের মধ্যে এদিনই ২ জনকে ছেড়ে দেওয়া হবে। আর এক মহিলার এখনও ড্রেসিং চলছে। প্রায় আটদিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষার পর সোমবার দুপুরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নাজিমাবিবি। তাঁর মৃত্যুর খবর গ্রামে আসতেই ফের শোকে ভেঙে পড়ে গোটা গ্রাম।