কলকাতা: বাংলার মানুষকে ভাতে মারতে চেয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এমনই অভিযোগ তুললেন তৃণমূলের অন্যতম সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসা এই নেতার আরও অভিযোগ, নন্দীগ্রামের জয়তেও রয়েছে কারসাজি। তাঁর দাবি, শুভেন্দুই ফোন করে বলেছিলেন, তিনি হেরে গিয়েছেন। সেই মত বিজেপির সদর দফতরে বসে সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দনও জানিয়েছিলেন সেদিন বিজেপির অন্যতম মুখ্যপাত্র (বর্তমানে তৃণমূল নেতা) জয়প্রকাশ। এই তৃণমূল নেতার দাবি, পরবর্তীতে খোদ শুভেন্দুই মন্তব্য করেছিলেন, নন্দীগ্রামে অনেক কায়দা করে জয় এসেছে।
শনিবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়প্রকাশ মজুমদারদের নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। প্রথমেই তারা, ইপিএফ-র সুদ কমানো নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেন। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিরোধী দল বিজেপির ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন। তৃণমূলের ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, সাংবিধানিক সংকট তৈরি করার চেষ্টা করে চলেছেন শুভেন্দু। রাজীবের আরও অভিযোগ, সেদিন বাজেট পেশের সময় ভুড়ি ভুড়ি মিথ্যা কথা বলে রাজ্যকে বদনাম করার চেষ্টা করেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর একমাত্র কাজই এখন রাজ্য সরকারকে বদনাম করা।
তবে এদিন সব অভিযোগকে ছাপিয়ে গেল জয়প্রকাশের মন্তব্য। রাজীব যেখানে প্রশ্ন তুলেছেন, কোন মন্ত্রবলে নন্দীগ্রামে জিতেছেন শুভেন্দু, সেখানে জয়প্রকাশের বিস্ফোরক অভিযোগ, শুভেন্দু নিজেই ফোন করে জানিয়েছিলেন, তিনি হেরে গিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, নিজের কুকীর্তি ঢাকতে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাত থেকে বাঁচতে শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। জয়প্রকাশের কথায়, সেসময় আমি বিজেপিতে ছিলাম। বেশ কিছু বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম, যেখানে ঠিক হয়েছিল, শুভেন্দু বিজেপিতে এলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও রকম তদন্ত করবে না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
আরও পড়ুন: Goa TMC: খাতা না খুললেও গোয়ায় উপস্থিতি বুঝিয়ে দিল তৃণমূল
জয়প্রকাশের দাবি, শুধু বাংলাকে বদনাম করাই নয়, বাংলার মানুষকে ভাতে মারার চক্রান্তও শুরু করেন শুভেন্দু। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারকে শুভেন্দু অনুরোধ করেছিলেন যাতে বাংলার জন্য কম করে বরাদ্দ করা হয়। নিজের মন্তব্যের সপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে জয়প্রকাশের মন্তব্য, সেসময় বিজেপির অন্যতম শীর্ষ পদে থাকায় বেশ কিছু বৈঠকে আমি হাজির ছিলাম। সেখানেই শুনেছি, কীভাবে বাংলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে চলেছেন শুভেন্দু। এর পরই নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গে মুখ খুলে প্রাক্তন এই বিজেপি নেতার (বর্তমানে তৃণমূলের সহ সভাপতি) দাবি, ‘পরে যখন আমি শুভেন্দুবাবুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি জিতলেন কীভাবে? উত্তরে শুভেন্দু বলেছিলেন, অনেক কায়দা করে জিততে হয়েছে।’
শুভেন্দুর রাজনীতি রাজভবন-হাইকোর্ট এবং দিল্লি, এই তিন ক্ষেত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ, এমন অভিযোগ করে জয়প্রকাশের দাবি, সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিরোধী দলনেতার কোনও সম্পর্ক নেই। জয়প্রকাশের আরও দাবি, শুভেন্দু ফোন করে বলেছিলেন, পুনর্গণনা হলে আমি হেরে যাব।