কিভ: পুতিন বাহিনীর নিশানায় যে তিনি, ভলোদিমির জেলেনস্কির (Volodymyr Zelenskyy) তা অজানা নয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia-Ukraine war) ১১ দিনে অন্তত তিন বার জেলেনস্কিকে খতম করার চেষ্টা করেছে রুশ সেনা। কিন্তু প্রতিবারই রুশ নিশানা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। কিভের দাবি তেমনই। এমনকি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিজেও জানিয়েছেন রাশিয়া (Russia) তাঁকে সপরিবার খতম করার চক্রান্ত করছে। ফলে, জেলেনস্কি শুধু নন, তাঁর গোটা পরিবার ইউক্রেনে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এমত অবস্থায় ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ইউক্রেনের বাইরে নিরাপদ কোনও জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যেতে পারে আমেরিকা। গোপন এই অভিযানে আমেরিকার সঙ্গী হতে পারে ব্রিটেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে (Russia-Ukraine crisis) এই ধরনের অভিযান চালানো ঝুঁকির। বিশেষত, রাশিয়ার ক্রমাগত গোলাবর্ষণের মধ্যে। তার পরেও জেলেনস্কির জন্য এই চরম ঝুঁকি নিতে চলেছে আমেরিকা ও ব্রিটন। সূত্রের খবর, আমেরিকা ও ব্রিটেনের স্পেশাল বাহিনী এই অভিযানের জন্য প্রস্তুত।
খবর অনুযায়ী, লিথুয়ানিয়ার প্রত্যন্ত কোনও ঘাঁটি থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে। গোটা অভিযান সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে ইউক্রেন সেনার সঙ্গে সংযোগ রেখে চলেছেন মার্কিন ও ব্রিটিশ সেনার সংশ্লিষ্ট অফিসাররা।
এর আগে রাশিয়া পার্লামেন্টের স্পিকার দাবি করেছিলেন, রুশ হামলার মুখে গোপনে পোল্যান্ড পালিয়েছেন জেলেনস্কি। রুশ মিডিয়ায় ফলাও করে সে খবর ছাপাও হয়েছিল। যদিও ইউক্রেন খবরের সত্যতা স্বীকার করেনি। পরে, সে দেশের প্রেসিডেন্ট বিবৃতি দিয়ে জানান, তিনি কিভেই আছেন। তাঁর পোল্যান্ডে পালানোর খবর ভুয়ো। ইউক্রেন সেনার সঙ্গে সবরকম সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: Naftali-Putin Meet: গোপনে রাশিয়ায় গিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক বেনেটের
এ দিকে, যুদ্ধের এগারোতম দিনে আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়িয়েছে রাশিয়া। চেরনিহিভে ক্রমাগত গোলাবর্ষণ করে চলেছে রুশ সেনা। জাপুরোঝিয়ার পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের পর পুতিনের লক্ষ্য ইউক্রেনের জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। নেটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ফের একবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। ‘ইউক্রেনকে অস্ত্রের জোগান দিলে, ফল ভাল হবে না।’
এই সংঘাতের আবহেই রবিবার ফের একবার সামরিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ক্রেমলিন। ভারতীয় সময় অনুযায়ী বেলা সাড়ে ১২টা থেকে তিনটে পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে শনিবারও সাত ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল রাশিয়া। ইউক্রেনে পড়তে আসা বিদেশি পড়ুয়া-সহ সাধারণ নাগরিকদের নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতেই এই সাময়িক যুদ্ধবিরতি। যদিও যুদ্ধবিরতির মধ্যেই শনিবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। রাষ্ট্রপুঞ্জ সূত্রে খবর, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের ১৫ লক্ষ নাগরিক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
এ দিন ইউক্রেনের তরফে দাবি করা হয়েছে, গত কয়েক দিনে ৪৪টি রুশ যুদ্ধবিমান তারা ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় শত্রুপক্ষের ৫টি যুদ্ধবিমান ছাড়াও ৪টি রুশ হেলিকপ্টার তারা গুঁড়িয়ে দিয়েছে।